অনলাইন

ছাত্রলীগের বিচার, রিমান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী একজন মুকিমুল

স্টাফ রিপোর্টার

২৩ জানুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ১:০৭ পূর্বাহ্ন

মুকিমুল হক চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জহুরুল হক হলে ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতনের শিকার চার শিক্ষার্থীর একজন। বিপন্ন এক সময়ে সব নির্যাতন, নিপীড়ন আমরা মেনে নেই। আবরারের মতো কেউ মরে গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে যায়।

মুকিমুল এই নির্যাতন মেনে নেননি। তিনি রুখে দাঁড়িয়েছেন। নিষ্ঠুর এই আক্রমনের বিচার দাবিতে সরব হয়েছেন। চালিয়ে যাচ্ছেন অবস্থান কর্মসূচি। ঐতিহাসিক রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনড় তার অবস্থান। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দোষীদের বিচার না করা পর্যন্ত তিনি এই অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। মুকিমুলের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তার সঙ্গে অবস্থান নিয়েছেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। সঙ্গে রয়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। মুকিমুলকে দেখলেই বুঝা যায় কী গিয়েছে তার ওপর দিয়ে। সারা মুখে আঘাতের চিহ্ন। হাঁটতে গিয়ে স্ট্রেচার ব্যবহার করছিলেন।

গত মঙ্গলবার রাতে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার বাকি তিনজন হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানওয়ার হোসেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দীন এবং একই বর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আফসার উদ্দীন।

ছাত্রলীগ অবশ্য চার ছাত্রকে নির্যাতন করেই থামেনি। প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে তাদের সোপর্দ করে থানায়। সৌভাগ্যবানই বলতে হয় এই চার ছাত্র পরে থানা থেকে ছাড়া পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কার্যক্রম অবশ্য লজ্জিত করেছে বহু মানুষকে। অনেকেই বিস্মিত হচ্ছেন, উনারাই আমাদের শিক্ষক! নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের পাশে না দাঁড়িয়ে এরা সহযোগী হয়েছেন নির্যাতকদের। অবশ্য বহুবারই তাদের এই ভূমিকায় দেখা গেছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে ছাত্রলীগের বিচারালয় ও রিমান্ডের ঘটনা অবশ্য নতুন কিছু নয়। চলে আসছে দিনের পর দিন। এমনই এক রিমান্ডে প্রাণ গেছে বুয়েট ছাত্র আবরারের। এরপর অনেক কথা হয়েছে। আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে সামান্যই। জহুরুল হকের হলের ঘটনায় তা আরও স্পষ্ট হলো। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে এখনও শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। এছাড়া, কোন ছাত্র যদি কোন ফৌজদারী অপরাধ করে থাকে এবং ফৌজদারী অপরাধের ষড়যন্ত্র করে থাকে তার বিচারের জন্য আইন আছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আছে, বিচারালয় আছে। নিজস্ব বিচারালয়ে রায় দেয়ার এবং রিমান্ডে নির্যাতন করার কোন এখতিয়ার ছাত্রলীগের নেই। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা অবশ্য যতোদিন এর সহযোগী পরিস্থিতির পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status