দেশ বিদেশ

সিলেটে এসে পথহারা শিশু সামিউল যেভাবে ফিরলো মামার কোলে

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে

২১ জানুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

মা সৌদি প্রবাসী। বাবা বিয়ে করে অন্যত্র বাস করেন। শিশু সামিউলের দেখার কেউ নেই। ভর্তি করা হয়েছিলো মাদ্রাসায়। সেখান থেকে ট্রেনে উঠে সিলেটে চলে এসেছিল শিশু সামিউল। রাত তখন দেড়টা। সিলেট সিটি করপোরেশনের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। শিশুর কান্নার দৃশ্য দেখে এগিয়ে আসেন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। খবর পেয়ে যান সাংবাদিকরাও। পরিচয়হীন শিশুটিকে তারা নিয়ে যান পাশের বন্দরবাজার পুলিশ ফাড়িতে। সেখানে নেওয়ার পর একটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে স্বজনের খোজ পায় সামিউল। গতকাল সকালে এসে স্বজনরা ফাড়ি থেকে তাকে নিয়ে যান। পুলিশ জানায়- মো. সামিউল ইসলাম সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার উপরগ্রামের মো. খলিল মিয়ার ছেলে। তার বয়স ৭ বছর। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আজমপুরস্থ মেরাসানি হাফিজিয়া মাদরাসার হিফজ বিভাগে অধ্যয়রত। রোববার বিকেলে হঠাৎ মা ও বাড়ির কথা মনে পড়ায় কাউকে কিছু না বলে মাদরাসা থেকে বেরিয়ে যায়। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে সিলেটগামী রেলে উঠে পড়লে রাত ১০টার দিকে সিলেট রেলস্টেশনে এসে নামে। মাদরাসা থেকে নিখোঁজের পর সামিউলের শিক্ষক তার মামা গোয়াইনঘাটের উপরগ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল মিয়ার কাছে ফোন করে বিষয়টি জানালে সামিউলের মামাও তাকে হন্য হয়ে খুঁজতে থাকেন। এদিকে, সামিউল ট্রেন থেকে নেমে তার মামার বাড়ি খুঁজতে খুঁজতে ক্বিনব্রিজ পার হয়ে রাত দেড়টার দিকে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সামনে চলে আসে। এসময় সামিউলকে এদিক-সেদিক ঘুরোঘুরি এবং কান্নাকাটি করতে দেখে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা টিমের সুপারভাইজার সুমন চক্রবর্তী তাকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইনকিলাবের ফটো সাংবাদিক মো. আনোয়ার হোসেন। তিনি মানবজমিনকে জানান- বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর হোসেন ভূঁইয়া, পুলিশ কনস্টেবল মো. সৈয়দ মিয়া সামিউলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে শুধু তার মামার মোবাইল ফোন নাম্বার ছাড়া কিছুই বলতে পারেনি। এ সময় সামিউলের মামার মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে সামিউলের অবস্থা জানানো হয় এবং বন্দরবাজার পুলিশফাঁড়িতে সামিউলের খাবারের ব্যবস্থা করা হয় ও তাকে রাতে আশ্রয় দেয়া হয়। পরে গতকাল সোমবার ভোরে সামিউলকে তার মামার কাছে হস্তান্তর করা হয়। সামিউলকে ফিরে পাওয়ার পর পুলিশফাঁড়িতে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ইসমাইল মিয়া জানান- সামিউলের মা জীবন-জীবিকার তাগিতে সুদূর সৌদিআরবে শ্রমিকের কাজ করেন। তার বাবা আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। সামিউলের কোনো খোঁজখবর নেন না। সামিউলকে যদি ফিরে পাওয়া না যেতো তবে তার মা’র সামনে আমি দাঁড়াতে পারতাম না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status