বিশ্বজমিন

কি বার্তা দেবেন আজ খামেনি!

মানবজমিন ডেস্ক

১৭ জানুয়ারি ২০২০, শুক্রবার, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

আট বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো রাজধানী তেহরানে জুম্মার নামাজে ইমামতি করবেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। গত সপ্তাহে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান গুলি করে ভূপাতিত করার পর সেখানে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এরই প্রেক্ষাপটে খামেনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইরানের বার্তা সংস্থা মেহর বলেছে, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বয়স এখন ৮০ বছর। তিনি এ সপ্তাহে তেহরানে মোসাল্লা মসজিদে জুমার নামাজ পড়াবেন। তবে এর সঙ্গে ইরানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কোনো যোগসূত্র নেই বলে দাবি করা হয়। কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এতে বলা হয়, ইরানি জাতি আরো একবার তাদের ঐক্য ও মহত্ব প্রদর্শন করবে। এর আগে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সর্বশেষ তেহরানে জুমার নামাজে ইমামতি করেছিলেন ২০১২ সালে দেশটিতে ইসলামি বিপ্লবের ৩৩তম বার্ষিকীতে।

রাজধানী তেহরানে জুমার নামাজে এভাবে ইমামতি করাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়। কারণ, এর মধ্য দিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রকাশ করেন। এ কথা বলেছেন দ্য ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসির বিশ্লেষক মেহদি খালাজি। সাধারণত, ইরানি নেতারা এই কাজটি করান অনুগত ধর্মীয় নেতাদের দিয়ে। বিমান ভূপাতিত করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছে ইরান। বাধ্য হয়ে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সেনাবাহিনীকে এ ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি বুধবার জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

একের পর এক যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধে ইরানের অর্থনীতির গতি দ্রুতগতিতে নি¤œমুখী হয়েছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ। সব মিলিয়ে শাসকশ্রেণি বড় রকম এক অস্থির সময় পাড় করছেন। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের যখন যুদ্ধ লাগে লাগে অবস্থা, তখন ইরানি ও কানাডা সহ কয়েকটি দেশের ১৭৬ জন আরোহী নিয়ে আকাশে উড়া ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ গুলি করে ভূপাতিত করে ইরান। আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও প্রথম তিন দিন এর দায় অস্বীকার করে ইরান । কিন্তু তারপর শক্তিশালী রেভ্যুলুশনারি গার্ডস স্বীকার করে তারা ভুল করে ওই বিমানটি ভূপাতিত করেছে।

সম্প্রতি ইরাকের রাজধানী বাগদাদে ইরানের কুদস ফোর্সের প্রধান কাসেম সোলাইমানিকে ড্রোন হামলায় হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে প্রতিশোধস্পৃহায় ফুঁসতে থাকে ইরান। পাল্টা জবাব হিসেবে তারা ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। একই দিন রাজধানী তেহরান থেকে উড্ডয়ন করে ইউক্রেনের ওই বিমানটি। একে শত্রুপক্ষের বিমান বা ক্ষেপণাস্ত্র মনে করে রেভ্যুলুশনারি গার্ডস গুলি করে ভূপাতিত করে। তিন দিন পরে এর দায় স্বীকার করার পর ইরানে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখা দেয়। মুখোমুখি অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারী ও পুলিশ। তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। এ নিয়ে পশ্চিমা মিডিয়া গুরুত্ব দিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে।

বিমান ভূপাতিত করার ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে ইরান। প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, তদন্ত প্রক্রিয়া তদারক করবে একটি বিশেষ আদালত। কারণ, এ বিষয়টির দিকে নজর রেখেছে পুরো বিশ্ব। তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ স্বীকার করেছেন, ইরানিরা কয়েকটি দিন মিথ্য বলেছে। কারণ, সরকারকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল।

এ অবস্থায় তীব্র চাপে পড়ে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধে এর অর্থনীতি ধুঁকছে। ৬টি শক্তিধর রাষ্ট্রের সঙ্গে করা পারমাণবিক চুক্তি দৃশ্যত অচল হয়ে গেছে। গত বছর সরকার অপ্রত্যাশিতভাবে ঘোষণা দেয় যে, পেট্রোল রেশনিং করে দেয়া হবে এবং এর দাম বাড়ানো হবে। এর প্রতিবাদে ওই সময় দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখা দেয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status