বাংলারজমিন

মণিরামপুরে ধান ক্রয়ে তুঘলকি কারবার

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি

১৪ জানুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:২২ পূর্বাহ্ন

 মণিরামপুরে সরকারিভাবে আমন ধান ক্রয়ে চলছে তুঘলকি কারবার। ধান ক্রয়ের জন্য এবার লটারির মাধ্যমে বাছাইকৃত কৃষকদের কৃষি কার্ড হারিয়ে গেছে মর্মে থানায় জিডি ও ব্যাংকে নতুন হিসাব খোলার হিড়িক পড়েছে। গত ১০ দিনে উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে প্রায় চারশ’ নতুন হিসাব খোলা হয়েছে। প্রায় সমহারে থানায় করা হয়েছে জিডি। এদের প্রায় সবারই কার্ড পথে আসতে গিয়ে হারিয়েছে বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে। জমি নেই-এমনকি বর্গা নিয়েও ধান চাষ করেননি এমন অসংখ্য কৃষকের ভুয়া নাম লটারির তালিকায় স্থান পাওয়ায় বঞ্চিত প্রকৃত কৃষকসহ জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
অপরদিকে সরকারিভাবে ধান ক্রয়ে ধীরগতির অভিযোগতো রয়েছে বলে জানাগেছে। কার্যক্রম শুরুর ১ মাস ২২ দিন পার হলেও ধান ক্রয় করা হয়েছে মাত্র ১৮৫ টন। এ হিসেবে গড়ে প্রতিদিন ৩.৫৫ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হয়েছে। ধান ক্রয়ের কার্যক্রম চলবে আগামী ২৮শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বাকি ৫০ দিনে ২৩৪৬ টন ধান ক্রয় আদৌও সম্ভব হবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে চাষিদের। উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্র জানায়, গত বছরে ২০শে নভেম্বর থেকে প্রতি কেজি ২৬ টাকা দরে আমন ধান ক্রয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু এ উপজেলায় গত ১২ই ডিসেম্বর ধান ক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন করা করা হয়। এর ১০ দিন পর সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় শুরু করে উপজেলা খাদ্য অফিস। সূত্র জানায়, অধিকাংশ কৃষক দোকান থেকে বাকীতে সার-কীটনাশক কিনে ধানের আবাদ করেন। ধান কাটা শুরু হলেই দোকান মালিকদের তাগাদা। টাকা পরিশোধে বাধ্য হয়ে সস্তায় কৃষকদের ধান খোলা বাজারে বিক্রি করতে হয়। খোলা বাজারে ধান বিক্রি শেষ হওয়ার পরই খাদ্য অফিসের যোগসাজসে গড়ে উঠা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরকারি ধান ক্রয় শুরু হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান সিন্ডিকেটের সাথে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তিনি সদ্য যোগদান এবং আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় কিছুটা দেরিতে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বিধায় ধান ক্রয়ে ধীরগতি হয়েছে। কিন্তু বাকী সময়ের মধ্যে লক্ষ্য পূরণ হবে বলে তিনি দাবি করেন। এদিকে লটারির বাছাইকৃত কৃষকদের নতুন করে কার্ড করা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এদের অনেকেরই আদৌও কৃষি কার্ড ছিলো না। শুধু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান নেয়ার জন্য এমন কৌশল নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১লা জানুয়ারি থেকে ৯ই জানুয়ারি পর্যন্ত সোনালী ব্যাংক ৩৩১ জন এবং কৃষি ব্যাংক মণিরামপুর শাখায় ২৯ জন কৃষক নতুন করে হিসাব খুলেছেন। মনিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, শুধু একদিনেই ৩৫ জন কৃষক থানায় জিডি করেছেন। ব্যাংকে নতুন হিসাব খোলাদের মধ্যে উপজেলার জলকর রহিতা গ্রামের মোমিন সিকদারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত ৪/৫ বছর আগে তার কৃষি কার্ড হারিয়ে গেছে বিধায় তিনি নতুন করে কার্ড করতে জিডিসহ ব্যাংকে হিসেব খুলেছেন। অপরদিকে ধান সংগ্রহে লটারিতে বাছাইকৃত অসংখ্য ভুয়া নাম স্থান পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকায় প্রশিক্ষণে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে, কৃষি অফিসের সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, রোববার পর্যন্ত প্রায় দেড়শ’ কৃষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে স্যারের নির্দেশে নতুন প্রত্যয়নপত্র দেয়া হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status