‘এ পুরস্কার আমার সাহস বাড়িয়ে দিলো’

অভিনেত্রী-নির্মাতা মাহবুবা ইসলাম সুমী। নাটক পরিচালনার পাশাপাশি নির্মাণ করেছেন ‘তুমি রবে নীরবে’ শিরোনামের একটি চলচ্চিত্র। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে তার অভিষেক হয়। ২০১৭ সালের এ ছবিটি দু’টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছে। এরমধ্যে সেরা সংগীত পরিচালক হিসেবে পেয়েছেন ফরিদ আহমেদ। অন্যটি শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জায় রিটা হোসেন। রিটা হোসেনের পক্ষ থেকে পুরস্কারটি গ্রহণ করেছেন তার বোন ও নির্মাতা মাহবুবা ইসলাম সুমী নিজেই। তার ভাষ্য, আমার বোন দেশের বাইরে থাকায় আমি নিজেই এটি গ্রহণ করেছি। এর চেয়ে আমার আনন্দের বিষয় হলো, আমার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্রের এভাবে দুটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাওয়া। ছবিটি নির্মাণের সময় ভাবিনি এভাবে সবার কাছে প্রশংসিত হবে। সত্যি বলতে, চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে এ পুরস্কার আমার সাহস বাড়িয়ে দিলো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প অবলম্বনে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় ছবিটি নির্মাণ হয়েছে। প্রথম ছবি দিয়েই বাজিমাত করলেন সুমী। তাই তার কাছে জিজ্ঞাসা, এ সময়ের চলচ্চিত্র নিয়ে তার ভাবনা কি? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চলচ্চিত্র বড় একটি মাধ্যম। এটিকে খুব সহজ ভাবলে সেটি হবে ভুল। হঠাৎ করেই অনেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে শুনে থাকি। তবে আমি মনে করি, চলচ্চিত্র নির্মাণের আগে অবশ্যই পরিকল্পনা করতে হবে। আমি কী করতে চাই, সেটি যদি না জানি তাহলে কি নির্মাণ করবো? আমাদের এই সময়ে অনেকেই চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে। কিন্তু তাদের পরিকল্পনার অভাব আছে। এটা আমার একান্ত নিজের অভিমত। ভালো চলচ্চিত্রের জন্য সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন। এছাড়া যদি ভালো একটি গল্প নিয়ে কেউ কাজ করে তাহলে সেটি দর্শক দেখবে। সবার মনে দাগ কাটবে। এদিকে এ অভিনেত্রী ও নির্মাতা নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন। আসছে নতুন বছরেই তার পরবর্তী চলচ্চিত্রের শুটিং শুরু করার কথা জানান তিনি। এবারের চলচ্চিত্রটিও রবীন্দ্রনাথের গল্প নিয়ে নির্মাণ করবেন। নতুন ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথম ছবি নির্মাণ করতে গিয়ে বেশকিছু বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছে। এবার আর সেই বিষয়গুলোর মুখোমুখি হতে চাই না। এ ছবিটি অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাকে নিয়ে করতে চাই। এরমধ্যে তার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। খুব শিগগির শিল্পীদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারবো। এদিকে সুমী সম্প্রতি ‘বন্ধন’ শিরোনামের একটি টেলিছবি নির্মাণ করেছেন। এতে দুই বাংলার বেশ কয়েকজন শিল্পীকে দেখা যাবে বলে জানান তিনি। হিন্দু-মুসলিম দু’টি ধর্মের প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে এই টেলিছবির গল্প। অভিনয় ও নির্মাণের বাইরে সুমীর সময় কাটে কীভাবে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি নিয়মিত লেখালেখি করি। আমার লেখা গল্প ও চিত্রনাট্যে বেশ কিছু নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছি। লেখালেখি, অভিনয় ও ক্যামেরার পিছনে কাজ করতেই আমার ভালো লাগে। এগুলোই এখন আমার সব। একজন অভিনেত্রী ও নির্মাতা হিসেবে দর্শকের জন্য ভিন্ন কিছু করতে চাই। যে কাজটি দর্শকের মধ্যে আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে। চলতি বছর শেষের দিকে। আর কয়েক দিন পরেই নতুন বছরে পা দিবে সবাই। এরইমধ্যে চলতি বছরের হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে গেছে। এ বছরটি সুমীর জন্য কেমন ছিল?  আলাপনে এ অভিনেত্রী বলেন, চলতি বছরটা আমার জন্য আনন্দের বলতে পারি। এ বছর আমার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র এভাবে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করবে ভাবনায় ছিল না। যেকোনো নির্মাতার জন্য এটি অনেক বড় প্রাপ্তি বলে মনে করি। আশা করছি নতুন বছরটিও আমার এভাবে ভালো যাবে।