শেষের পাতা

‘উগ্রবাদ দমনে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে’

স্টাফ রিপোর্টার

১০ ডিসেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:২৬ পূর্বাহ্ন

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, উগ্রবাদ বৈশ্বিক সমস্যা। এটি সারা বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত। কোনো একটি দেশ এককভাবে এটি মোকাবিলা করতে পারবে না। সেই কারণেই জাতিসংঘ কর্তৃক একটি গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম এবং স্টপ ভায়োলেন্স কোয়ালিশন সেক্রেটারিয়েট এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী উগ্রবাদ বিরোধী জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

স্পিকার বলেন, কঠিন বাস্তবতা হলো আজকে বিশ্বের সকল দেশই সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের ভয়ঙ্কর হুমকির মধ্যে আছে। সেখান থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরাম একসঙ্গে কাজ করতে হবে। উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ আজকে বিশ্বের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা সভ্যতা ও মানবতার শত্রু। তাই সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নির্মুলে ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজির সবেচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে উগ্রবাদ বা সন্ত্রাসবাদ কি কারণে ঘটে এবং সন্ত্রাসীরা কি কারণে সন্ত্রাসী হয়ে উঠে। ইউনেস্কো থেকে যে সম্মিলিত প্রচেষ্টা করা হচ্ছে সেখানে বলা হয়েছে কোনো মানুষ সন্ত্রাসী বা উগ্রবাদী হয়ে জন্ম গ্রহণ করে না। তাই কি কারণে তারা সন্ত্রাসী হয়ে উঠে সে কারণ এড্রেস করা জরুরি। সেই দিকে লক্ষ্য করে বলা হয়েছে দীর্ঘসূত্রতাসহ যদি কোনো অনিষ্পন্ন বিরোধ চলমান থাকে তবে সেখান থেকেও উগ্রবাদের জন্ম হতে পারে। ডায়লগ নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে এধরণের প্রোলং আনরিসলভ কনফ্লিক্টকে এড্রেস করা জরুরি। কোনো সন্ত্রাসীকে সঙ্গে সঙ্গে কোন ধর্মের, কালচার ইগনোরেন্স, রিলিজিয়নের ভিত্তিতে ধর্মীয়, জাতী বা কোনো গোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে চিহ্নিত করা কাম্য নয়। কেননা আমরা জানি কোনো উগ্রবাদির জাতি ধর্ম বা দেশ নেই।

তিনি বলেন, উগ্রবাদ বন্ধ করতে হলে টেরোরিস্ট ফাইনান্সিং বন্ধ করার জন্য শক্ত ও কার্যক্রর রেগুলেশন গড়ে তুলতে হবে। এন্টি মানি লন্ডারিং আইন ২০০৯ সালে করা হয়েছিলো। সেটি ২০১৩ সালে আরো শক্তিশালী করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ধারায় বলা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে টেরোরিস্ট ফাইনান্সের বিষয়টি কিভাবে মোকাবিলা করা হবে সেখানে স্পষ্টভাবে বলা আছে। দারিদ্রতা দুর করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে যাতে কোনো কারণে হতাশা, বঞ্চনা বা হতাশা না ঘটে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সন্ত্রাসবিরোধী জিরো টলারেন্স নীতিতে আছে আমাদের নিজস্ব ভূখন্ডকে কোনো ভাবেই সন্ত্রাস বা উগ্রবাদের কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহৃত হতে দেব না। এ জায়গাটিতে আমাদের অটল থাকতে হবে। কোনো ভাবেই আমাদের দেশের মাটিকে উগ্রবাদিদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের জন্য ব্যবহার করতে দেবো না। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সময় আমাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান প্রদান কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। স্পিকার বলেন, প্রথমবারের জন্য এই আয়োজন করার জন্য কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটকে (সিটিটিসি) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ যে বিষয়কে প্রতিপাদ্য করে এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে সেটি জোরদার করতে হলে উগ্রবাদ বিরোধী কার্যক্রম সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই বার্তাটি পৌঁছে দিতে হবে।

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেন, কয়েক বছর আগেও দেশে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়েছিলো। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সেটি উত্তরণ হয়েছে। সরকারের পক্ষে একা সন্ত্রাস দমন করা সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার জনসচেতনতা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেন, ২০১৬ সাল থেকে উগ্রবাদ নির্মুলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ৩৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরো করা হবে। ইউএসএআইডির বাংলাদেশের কো অর্ডিনেটর মিয়া সেপ্পো বলেন, উগ্রবাদ নির্মূলে নারীরা ভুমিকা রাখতে পারে। অনুষ্টানে স্বাগত বক্তব্যে কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, সমন্বয়ের অভাবে উগ্রবাদ বিরোধী কাজ করার প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়নি। এই সম্মেলনের মাধ্যমে সেটি তৈরি হলো।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status