শেষের পাতা
রিজার্ভ চুরি
জরিমানা হিসেবে আদায় করা দুই কোটি ডলার চায় ঢাকা
কূটনৈতিক রিপোর্টার
৪ ডিসেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৮:৫২ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) কাছ থেকে জরিমানা বাবদ ফিলিপাইন সরকারের আদায় করা ২ কোটি মার্কিন ডলার চায় বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে চুরিতে জড়িতদের বিস্তারিত পরিচয় জানতে চায় ঢাকা। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় ঢাকা-ম্যানিলা দ্বিতীয় ‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’-এ বিষয়গুলো উত্থাপন করে বাংলাদেশ। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যতম সচিব মাসুদ বিন মোমেন পরে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দাবি জানিয়ে বলেছি যে, আপনারা (ফিলিপাইন) অন্তত জরিমানার অর্থটা আমাদের দিতে পারেন। এ জরিমানা তো একই ঘটনার (রিজার্ভ চুরি) কারণে করা হয়েছিল। তিনি বলেন, কিছু অপরাধীর তথ্য ও পরিচয় এবং আর্থিক তথ্য চাওয়াসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে বাংলাদেশ ফিলিপাইনের সহযোগিতা চেয়েছে। যদি এ দু’টি বিষয় সমাধান হয় তাহলে এখানে দায়ের করা মামলায় অভিযোগপত্র দিতে বাংলাদেশের সুবিধা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। মাসুদ বিন মোমেন বলেন, অপরাধীদের পরিচয় সরবরাহ এবং অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে ফিলিপাইন। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ২১.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানা করেছিল আরসিবিসিকে। মাসুদ বিন মোমেন জানান, ফিলিপাইন থেকে কিছু টাকা পাচার হয়ে যাওয়ায় সে বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে তদন্ত চলছে। হ্যাকাররা ২০১৬ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন ব্যবস্থায় প্রবেশ করে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে ১৯৪ কোটি মার্কিন ডলার পরিশোধের ৭০টি ভুয়া নির্দেশ দেয়। তবে তারা ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি করতে সক্ষম হয়। জরিমানার অর্থের বিষয়ে ফিলিপাইন বলছে, ব্যাংকিং আইন লঙ্ঘন করার দায়ে এ জরিমানা করা হয়েছে। এর সাথে বাংলাদেশের অর্থ চুরির সরাসরি সংযোগ নেই বলে দাবি দেশটির। কিন্তু আমরা আমাদের দাবি জানাচ্ছি উল্লেখ করে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এখানে আইনি জটিলতা থাকায় তারা ধাপে ধাপে অগ্রসর হচ্ছেন। বিষয়টি সমাধানের সময়সীমা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। কারণ, আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের হাত নেই। তবে দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী সহযোগিতা হয়তো সমাধান এনে দিতে পারে। বিষয়টি আপসে সমাধান প্রসঙ্গে ফিলিপাইনও একমত বলে জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, উভয় পক্ষ বৈঠকে স্বাস্থ্য, নার্সিং, কৃষি ও সমুদ্র সহযোগিতা বিষয়ে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক বিনিময় করেছে। বৈঠকে ফিলিপাইনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির সহকারী সচিব (সচিব পদ মর্যাদা) মেনার্ডো মন্টেইলেগরে।