শেষের পাতা
অতি মুনাফার পিয়াজ এবার ময়লার ভাগাড়ে
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৭ নভেম্বর ২০১৯, রবিবার, ৯:২৮ পূর্বাহ্ন
ভারত পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার পর মিয়ানমার থেকে এ পর্যন্ত ৩০ হাজার টন পিয়াজ আমদানি করা হয়েছে। যা খরচসহ কেজিপ্রতি ৪২ টাকা কেনা পড়েছে। কিন্তু এ পিয়াজ আমদানিকারকরা পাইকারি বাজারে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রয় করেছে। এভাবে ১৫৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আমদানিকারকরা। খুচরা পর্যায়ে এ পিয়াজ বিক্রয় হয়েছে কেজিপ্রতি ১২০ টাকার উপরে। এতে হাতিয়ে নেয়া টাকার পরিমাণ ২০০ কোটি ছাড়িয়েছে। যা সাধারণ ক্রেতার পকেট থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। এমন তথ্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের।
আর অতি মুনাফার সেই পিয়াজ এখন বস্তায় বস্তায় ফেলে দেয়া হচ্ছে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জের পার্শ্ববর্তী কর্ণফুলী নদীতে। শুধু তাই নয়, মিলছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ময়লার ভাগাড়েও। যার সত্যতা স্বীকার করেছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক সৈয়দ আহমদ সফা মাতব্বর।
তিনি বলেন, পচে নষ্ট হয়ে যাওয়া বস্তা বস্তা পিয়াজ খাতুনগঞ্জের ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। এমন কি ফিরিঙ্গীবাজার ব্রিজঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীতেও ফেলে গেছে ৭-৮ বস্তা পচা পিয়াজ। শনিবার সকালে ময়লার ভাগাড় থেকে এসব পচা পিয়াজ সিটি করপোরেশনের গাড়িতে করে সরাতে হচ্ছে। তবে কে বা কারা এসব পচা পিয়াজ ফেলে গেছে সে বিষয়ে কিছুই বলতে তিনি রাজি হননি।
ধারণা করে তিনি বলেন, অতি মুনাফার লোভে খাতুনগঞ্জের আড়তে গুদামজাত করা পিয়াজ পচে যাওয়ায় নিরুপায় হয়ে বৃহস্পতিবার রাতের আঁধারে ময়লার ভাগাড় ও কর্ণফুলী নদীতে ফেলে গেছে। এসব পিয়াজ থেকে চরম উৎকট দুর্গন্ধ বের হওয়ায় এলাকার জনসাধারণের চলাফেরা দায় হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে সিটি করপোরেশনের গাড়িতে করে ময়লার ভাগাড়ে রেখে যাওয়া অন্তত ১০ টন পিয়াজ এ পর্যন্ত সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অন্তত আরো অনেক পচা পিয়াজ ময়লার ভাগাড়ে রয়েছে। স্থানীয় লোকজন এসব পিয়াজের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।
এতে নগরবাসীর মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকের মন্তব্য, অতি মুনাফার লোভে গুদামজাত করা পিয়াজ এখন পচে নষ্ট হচ্ছে। মুনাফার লোভে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি না করে, সেই পচা পিয়াজ এখন ফেলা হচ্ছে ময়লার ভাগাড় ও কর্ণফুলী নদীতে।
তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পিয়াজ পচা হওয়ায় তারা সেগুলো ফেলে দিচ্ছেন। এ কারণে তাদের ব্যাপক আর্থিক লোকসান হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের পিয়াজ আড়তদার সমিতির সাধারণ সমপাদক মো. ইদ্রিস বলেন, মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পিয়াজ বোটে পানি লেগে নষ্ট হয়েছে। পচা পিয়াজ বিক্রি করার সুযোগ নেই। তাই আমদানিকারক নিজেই সিটি করপোরেশনের ময়লার ভাগাড়ে ফেলে গেছেন।
খাতুনগঞ্জের পিয়াজ আড়তদার সমিতির সাবেক সভাপতি আফসার উদ্দিন বলেন, টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পিয়াজের বড় একটা অংশ পচা। যার কারণে পচা পিয়াজ বাদ দিয়ে ভালোগুলো বেশি দামে বিক্রি করতে হয়েছে। এরপরও পচে যাওয়ায় আমদানিকারকরা বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার পর থেকে দফায় দফায় বাড়তে থাকে পিয়াজের দাম। খুচরা পর্যায়ে ভালো মানের দেশি পিয়াজ ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হতে থাকে। এরপর বেশ কিছুদিন পিয়াজের দাম অনেকটাই স্থির ছিল। ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে নেমে এসেছিল।
কিন্তু ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের পর আবারো পিয়াজের দাম বেড়ে যায়। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পিয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং আমদানি করা পিয়াজ আসছে না-এমন অজুহাতে ব্যবসায়ীরা পিয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে আবারো বেড়ে যায় পিয়াজের দাম।
এরপর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির বক্তৃতায় পিয়াজের দাম ডাবল সেঞ্চুরি করার কারণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। পিয়াজের কেজি ১০০ টাকার নিচে নামা সম্ভব নয়- মন্ত্রীর এই বক্তব্য পিয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টিকে আরো উস্কে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।
এরপর ১০০ টাকা থেকে পিয়াজের কেজি ১৩০ টাকায় পৌঁছে যায়। এ পরিস্থিতিতে শিল্পমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বলেন, পিয়াজের দাম স্বাভাবিক আছে। পরের দিন ওই পিয়াজের কেজি ১৫০ টাকায় পৌঁছে যায়। বুধবার ১৫০ টাকা থেকে পিয়াজের দাম এক লাফে ১৭০ টাকা হয়।
বৃহসপতিবার সেই দাম আরো বেড়ে ২০০ টাকায় পৌঁছে যায়। শুক্রবার কোথাও কোথাও তা আরো বেড়ে ২৫০ টাকায় পৌঁছে। এর আগে কখনো দেশের বাজারে এত দামে পিয়াজ বিক্রি হয়নি।
আর অতি মুনাফার সেই পিয়াজ এখন বস্তায় বস্তায় ফেলে দেয়া হচ্ছে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জের পার্শ্ববর্তী কর্ণফুলী নদীতে। শুধু তাই নয়, মিলছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ময়লার ভাগাড়েও। যার সত্যতা স্বীকার করেছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক সৈয়দ আহমদ সফা মাতব্বর।
তিনি বলেন, পচে নষ্ট হয়ে যাওয়া বস্তা বস্তা পিয়াজ খাতুনগঞ্জের ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। এমন কি ফিরিঙ্গীবাজার ব্রিজঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীতেও ফেলে গেছে ৭-৮ বস্তা পচা পিয়াজ। শনিবার সকালে ময়লার ভাগাড় থেকে এসব পচা পিয়াজ সিটি করপোরেশনের গাড়িতে করে সরাতে হচ্ছে। তবে কে বা কারা এসব পচা পিয়াজ ফেলে গেছে সে বিষয়ে কিছুই বলতে তিনি রাজি হননি।
ধারণা করে তিনি বলেন, অতি মুনাফার লোভে খাতুনগঞ্জের আড়তে গুদামজাত করা পিয়াজ পচে যাওয়ায় নিরুপায় হয়ে বৃহস্পতিবার রাতের আঁধারে ময়লার ভাগাড় ও কর্ণফুলী নদীতে ফেলে গেছে। এসব পিয়াজ থেকে চরম উৎকট দুর্গন্ধ বের হওয়ায় এলাকার জনসাধারণের চলাফেরা দায় হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে সিটি করপোরেশনের গাড়িতে করে ময়লার ভাগাড়ে রেখে যাওয়া অন্তত ১০ টন পিয়াজ এ পর্যন্ত সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অন্তত আরো অনেক পচা পিয়াজ ময়লার ভাগাড়ে রয়েছে। স্থানীয় লোকজন এসব পিয়াজের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।
এতে নগরবাসীর মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকের মন্তব্য, অতি মুনাফার লোভে গুদামজাত করা পিয়াজ এখন পচে নষ্ট হচ্ছে। মুনাফার লোভে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি না করে, সেই পচা পিয়াজ এখন ফেলা হচ্ছে ময়লার ভাগাড় ও কর্ণফুলী নদীতে।
তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পিয়াজ পচা হওয়ায় তারা সেগুলো ফেলে দিচ্ছেন। এ কারণে তাদের ব্যাপক আর্থিক লোকসান হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের পিয়াজ আড়তদার সমিতির সাধারণ সমপাদক মো. ইদ্রিস বলেন, মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পিয়াজ বোটে পানি লেগে নষ্ট হয়েছে। পচা পিয়াজ বিক্রি করার সুযোগ নেই। তাই আমদানিকারক নিজেই সিটি করপোরেশনের ময়লার ভাগাড়ে ফেলে গেছেন।
খাতুনগঞ্জের পিয়াজ আড়তদার সমিতির সাবেক সভাপতি আফসার উদ্দিন বলেন, টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পিয়াজের বড় একটা অংশ পচা। যার কারণে পচা পিয়াজ বাদ দিয়ে ভালোগুলো বেশি দামে বিক্রি করতে হয়েছে। এরপরও পচে যাওয়ায় আমদানিকারকরা বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার পর থেকে দফায় দফায় বাড়তে থাকে পিয়াজের দাম। খুচরা পর্যায়ে ভালো মানের দেশি পিয়াজ ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হতে থাকে। এরপর বেশ কিছুদিন পিয়াজের দাম অনেকটাই স্থির ছিল। ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে নেমে এসেছিল।
কিন্তু ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের পর আবারো পিয়াজের দাম বেড়ে যায়। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পিয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং আমদানি করা পিয়াজ আসছে না-এমন অজুহাতে ব্যবসায়ীরা পিয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে আবারো বেড়ে যায় পিয়াজের দাম।
এরপর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির বক্তৃতায় পিয়াজের দাম ডাবল সেঞ্চুরি করার কারণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। পিয়াজের কেজি ১০০ টাকার নিচে নামা সম্ভব নয়- মন্ত্রীর এই বক্তব্য পিয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টিকে আরো উস্কে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।
এরপর ১০০ টাকা থেকে পিয়াজের কেজি ১৩০ টাকায় পৌঁছে যায়। এ পরিস্থিতিতে শিল্পমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বলেন, পিয়াজের দাম স্বাভাবিক আছে। পরের দিন ওই পিয়াজের কেজি ১৫০ টাকায় পৌঁছে যায়। বুধবার ১৫০ টাকা থেকে পিয়াজের দাম এক লাফে ১৭০ টাকা হয়।
বৃহসপতিবার সেই দাম আরো বেড়ে ২০০ টাকায় পৌঁছে যায়। শুক্রবার কোথাও কোথাও তা আরো বেড়ে ২৫০ টাকায় পৌঁছে। এর আগে কখনো দেশের বাজারে এত দামে পিয়াজ বিক্রি হয়নি।