বাংলারজমিন

সাটুরিয়ায় মোড়ে মোড়ে অবৈধ স্ট্যান্ড

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

৯ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার, ৭:৩২ পূর্বাহ্ন

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তিনটি সরকারি সড়ক দখল করে মোড়ে মোড়ে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। ফলে সাটুরিয়া হাসপাতাল মোড়, দরগ্রাম সাটুরিয়া মোড় ও বালিয়াটি সাটুরিয়া মোড়ে প্রতিনিয়ত লেগে থাকে যানজট। ওই তিন মোড়ে অবৈধ স্ট্যান্ড হওয়ায় অনেক সময় পায়ে হাঁটা দুষ্কর হয়ে পড়ে। বিশেষ করে সড়ক পার হওয়ার সময় বিপদে পড়ে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। সাটুরিয়ার মোড়ে মোড়ে অবৈধ সিএনজি ও হ্যালো বাইক থেকে কিছু অসাধু ব্যক্তির পকেটে চাঁদার টাকা যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড সরানোর কোনো উদ্যোগ প্রশাসন না নেয়ায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা।
সাটুরিয়া হাসপাতাল মোড়ের সরকারি সড়ক দখল করে তিন শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভোর হতে সন্ধ্যা পর্যন্তু অবস্থান করে। চলাচল করে সাটুরিয়া মানিকগঞ্জ ও গোড়লা। ওই মোড়ের দু’পাশে সিএনজি দাঁড়িয়ে থাকায় একজন মুমূর্ষু রোগী হাসপাতালের নেয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। ফলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি তোলা হলে কোনো প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
এদিকে সাটুরিয়ার দরগ্রাম সড়কের ওপর দু’পাশে প্রায় দুই শতাধিক সিএনজি অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড। সড়কটি চাপা হওয়ায় এপাশ ও ওপাশ থেকে আসা যানবাহনের কারণে সারাদিনই যানজট লেগে থাকে। বিশেষ করে বড় ধরনের ট্রাক বা বাস আসলে বিপদে পড়তে হয় পায়ে হাঁটা মানুষের। এ সড়ক ঘেঁষে রয়েছে সাটুরিয়া সৈয়দ কালুশাহ ডিগ্রি কলেজ, ইউনাইটেড স্কুল, রফিক রাজু ক্যাডেট একাডেমি, নেধুশাহ কেজি স্কুল ও পশ্চিম কাউন্নারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এসব স্কুলে সন্তানদের নিয়ে আসা অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের সন্তানদের নিয়ে স্কুলে আসা ও যাওয়ার সময় খুব দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। অভিভাবকদের অভিযোগ অদক্ষ সিএনজিচালকরা যেভাবে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য সংসারের কাজ ফেলে সন্তানদের পেছনে পড়ে থাকতে হয় স্কুল সময়ে।
সাটুরিয়া বালিয়াটি পাকুটিয়া সড়কের মোড়ে শতাধিক অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে। এরা সরকারি সড়ক দখল করে মোড়ে অবৈধ স্ট্যান্ড করায় সব সময় যানজট লেগে থাকে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক বাস চলাচল করে থাকে। ওই মোড়ে এলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়তে হয়। বিশেষ করে ওই মোড়ে সাটুরিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। এ অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডের কারণে ওই বিদ্যালয়ের লেখাপড়া বিঘ্ন হয় বলে অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এ বিষয়ে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় অনেকবার অভিযোগ করা হলেও কোনো লাভ হয়নি বলে জানায় অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন।
সাটুরিয়া সৈয়দ কালুশাহ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাহিরুল হক খান টিটু জানান, আইনের পোশাক পরে যারা অবৈধকে বৈধ করে এসব অবৈধ সিএনজি চলাচল করতে দেয় তাদের লাভের জন্য। তারা আরো জানান, প্রায় ৮ বছর ধরে একই অভিযোগ করে আসছি পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে। প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
সাটুরিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন জানান, প্রায় ৮ বছর ধরে আমার স্কুলে কর্নারে এ সিএনজি-রিকশার স্ট্যান্ড। স্কুল চলাকালীন সময়ে উচ্চস্বরে হর্ন বাজিয়ে ও গাড়ির পিকআপ বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও ক্লাসের বিঘ্ন ঘটায়। এ বিষয়ে অনেকবার প্রশাসনকে লিখিত ও মাসিক সভায় বলা হলেও কোনো লাভ হয়নি আট বছরে। দেশে আইন আছে। কিন্তু যারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তারাই তো অবৈধ কাজের সুযোগ করে দেয় বলে জানান।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. মো. মামুনুর রশীদ জানান, ভোর হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত যেভাবে মোড়ে সিএনজিগুলো পার্কিং করে রাখা হয়। এমনকি কমপ্লেক্সের প্রধান গেটে এক মিনিটের রাস্তায় ঢুকতে সময় লাগে ২০ মিনিট। তবে তিনি দাবি করেন, এ মোড়ে একজন মুমূর্ষু রোগী এলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ বিষয়ে উপজেলার মাসিক সভায় বিভিন্ন সময় বলা হলেও কোনো লাভ হয়নি বলেও তিনি জানান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status