বাংলারজমিন
নবীগঞ্জে শিশুকে নগ্ন করে নির্যাতন, মামলা
স্টাফ রিপোর্টার, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে
৮ নভেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৮:১০ পূর্বাহ্ন
নবীগঞ্জে পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামের ৬ বছরের এতিম শিশু বাচ্চাকে নগ্ন করে নির্যতনকারী একই গ্রামের স্বপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আলোচিত ওই ঘটনায় হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্যা। বুধবার অভিযুক্ত স্বপনকে বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে গ্রপ্তার করা হয়। এনিয়ে শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ও মামলা সূত্রে প্রকাশ, উপজেলার পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামের মৃত সুফি মিয়ার ৬ বছরের এতিম শিশু বাচ্চা জিসানকে নগ্ন করে অমানবিক নির্যাতন করে তারই আপন চাচা স্বপন মিয়া। নির্যাতনের স্থির চিত্র ও ভিডিও চিত্র শিশুর প্রবাসী মায়ের কাছে পাঠিয়ে টাকা দাবি করত স্বপন মিয়া। প্রায় দু’মাস পূর্বে শিশু জিসানের মা সুমনা বেগম দাদা-দাদি আর চাচা স্বপনের কাছে রেখে জীবিকার তাগিদে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরব যান। আর যাওয়ার আগে সন্তানদের দেখাশুনার জন্য তাদের চাচা স্বপনকে কিছু টাকাও দেন তিনি। সৌদি আরব যাওয়ার দুই মাস যেতে না যেতেই তার সন্তানদের ওপর শুরু হয় নির্যাতন। টাকা দেয়ার জন্য ৬ বছর বয়সী আপন ভাতিজাকে নগ্ন করে নির্যাতন করে সেই ভিডিও তার মায়ের কাছে পাঠিয়ে ছিলেন চাচা স্বপন মিয়া। নিজের সন্তানের ওপর এমন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দেশে চলে আসেন জিসানের মা সুমনা বেগম। খবর পেয়ে তাদের বাড়ি চরগাঁও গ্রামে ছুটে যান স্থানীয় সাংবাদিকরা। এ সময় সুমনা বেগম তার শিশু বাচ্চা জিসানের উপর অমানবিক নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। শিশু জিসানকে নির্যাতনের বিষয়টি দ্রুত ভাইরাল হলে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় পুলিশ। এরই প্রেক্ষেতে থানার ওসি মো. আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে এক দল বুধবার অভিযান চালিয়ে নির্যাতনকারী স্বপন মিয়াকে বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া গ্রামের তার শ্বশুর মাসুক মিয়ার বাড়ি থেকে ভোর রাতে গ্রেপ্তার করে। থানার ওসি আজিজুর রহমান বলেন, শিশু জিসানকে নির্যাতনের অভিযোগে তার মা সুমনা বেগম থানায় মামলা করেন। এরই প্রেক্ষতে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় দ্রুত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, শহরের পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামের সুফি মিয়ার সাথে বিয়ে হয় সুমনা বেগমের। সুফি মিয়ার মৃত্যুর পর ছোট শিশুর কথা চিন্তা করে সুফি মিয়ার ভাই স্বপন মিয়ার নিকট বিয়েতে রাজি হন সুমনা বেগম। জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমান সৌদি আরব। সেখানে গিয়ে শান্তিতে থাকতে পারেননি গৃহবধূ সুমনা। টাকার জন্য তার সন্তাকে নির্যাতন করে দেবর স্বামী স্বপন মিয়া। আর সেই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে প্রেরণ করে মায়ের নিকট। এই দৃশ্য দেখে হতভাগা মা সন্তানকে নির্যাতনের নিকট থেকে উদ্ধার করতে ধাপে ধাপে স্বপনের নিকট টাকা প্রেরণ করেন। সেই টাকা উত্তোলন করে স্বপন। এই বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে এলে স্থানীয় মুরব্বিয়ানদের সহযোগিতায় শিশু জিসানকে তার মামার মাধ্যমে নানার বাড়ি পাঠানো হয়। শিশুর ওপর অকথ্য নির্যাতনের ঘটনায় মা সুমনা বেগম দ্রুত দেশে আসেন।