শিক্ষাঙ্গন
জবির কোষাধ্যক্ষ দপ্তরের কার্যক্রম স্থবির
জয়নুল হক, জবি থেকে
২ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার, ১:৫৫ পূর্বাহ্ন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কোষাধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়ার দ্বিতীয় মেয়াদের দায়িত্ব শেষ হয়েছে। এখনও নতুন কাউকে নিয়োগ না দেয়া হয়নি। ফলে দপ্তরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। আটকে পড়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সংশ্লিষ্ট সকল অফিস ফাইল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে ১৭ই অক্টোবর মো. সেলিম ভূঁইয়ার দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব শেষ হয়। এখন তৃতীয় মেয়াদে নিয়োগ পেতে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, গণভবন ও বঙ্গভবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তদবির শুরু করেছেন। তবে সাবেক এ ট্রেজারারের নামে নানা বিতর্ক থাকায় তৃতীয় মেয়াদে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসাবে মানতে অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মকর্তা নারাজ।
গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্য থেকে ট্রেজারার নিয়োগ দেয়ার দাবি জানান। এদিকে, দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাবেক ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন। এই বলয়ে নির্দিষ্ট কিছু লোক পদ-পদবি থেকে শুরু করে সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। এছাড়া নানা অনিয়মের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে তিনি অবৈতনিক কর্মকর্তা হলেও নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেই অর্থ ভোগ ও বন্টন করছেন।
অভিযোগ রয়েছে, চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারিকে অনিয়ম করে একই দপ্তরের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। অভিজ্ঞতা না থাকলেও একজন চুক্তিভিত্তিক আইটি কনসাল্ট্যান্টকে সরাসরি প্রোগ্রামার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনের টাকা নিজ আত্মীয়ের একটি বেসরকারি ব্যাংকের ডেমরা শাখার একাউন্টে রেখে সুবিধা ভোগ করেছেন। টেন্ডার ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরাদ্ধকৃত গাড়ি ব্যবহার করে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্টটাইম চাকরি করেন সদ্য সাবেক এই কোষাধ্যক্ষ।
জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী ট্রেজারারের মেয়াদ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে তিনজন শিক্ষকের নাম পাঠাতে হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুধু কোষাধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়ার নাম পাঠানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষকের চাকরির সময়সীমা শেষ হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় একজন শিক্ষকের নাম পাঠানোয় সেই চিঠি আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরত পাঠিয়ে তিনজন শিক্ষকের নাম পাঠাতে বলে। দ্বিতীয় দফায় কোষাধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়াসহ আরও দুই জনের নাম পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়ার আস্থাভাজন লোক হওয়ার কারণে ৩ই মে ২০১৬ সালে মো. হাফিজুর রহমানকে চুক্তিভিত্তিক আইটি কনসাল্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ দেন। হাফিজুর ‘পিপলস বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ২০১৬ সালে ইউজিসি’র জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুয়ায়ী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ গ্রহণযোগ্য নয়। এরপর তিনি গত ৩ই মে ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রামার পদে (৬ গ্রেড) চাকরির অনুরোধ জানান। তখন হাফিজুরের চুক্তির মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধির সুপারিশ করেন সেলিম ভূঁইয়া। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ সালের হিসেবে ৬ষ্ঠ গ্রেডে বেতন নিতে হলে নূন্যতম ৫ বৎসরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। এরপর ২০১৮ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ৬ মাসের জন্য এডহক ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামার হিসেবে যোগদান করেন হাফিজুর। ওই বছর ১৪ই আগষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুনরায় ৬ মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ সালের কাঠামো অনুযায়ী ৫ বছর অভিজ্ঞতার কথা বলা থাকলেও মাত্র দুই বছরের অভিজ্ঞতা দিয়ে গত ১৬ই মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ তম সিন্ডিকেটে হাফিজকে প্রোগ্রামার হিসেবে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি আনোয়ার হোসেন সেলিম ভূঁইয়ার আস্থাভাজন হওয়ায় অনিয়ম করে একই দপ্তরের কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পান। অথচ দপ্তরে যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মচারি থাকলেও তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। এই কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি অনুমোদন ছাড়াই ঢাকার বাইরে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে থাকেন।
অভিযোগ আছে, টেন্ডার ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ, ক্যাফেটেরিয়া, এডমিশন সার্ভারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের কাজ করেন। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে অচল করে নিজেই সকল কাজ করেছেন।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে কোষাধ্যক্ষের ‘অবৈতনিক’ পদ। এ পদের সম্মানী হিসাবে তিনি শুধু গাড়ি সুবিধা পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসাবে নিজ কর্মস্থল থেকে বেসিক বেতনসহ অন্যান্য সুবিধা পাবেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সেলিম ভূঁইয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুধুমাত্র বেসিক বেতনই নেন অধ্যাপক সমমান ৭৬ হাজার ৪৯০ টাকা। সব মিলিয়ে তা ৩ লাখ টাকার কাছাকাছি। তৃতীয় মেয়াদে এ শিক্ষককে আবারও নিয়োগ দেয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় কোষাগার থেকে এ অতিরিক্ত খরচা গুনতে হবে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের সঙ্গে সাংঘার্ষিক।
এদিকে কোষাধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া গাড়ি ব্যবহার করে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়) নিয়মিত যাতায়াত করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব খাটিয়ে ইভিনিং এমবিএতে ক্লাস নিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা নেন। কেরানীগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্প প্রণয়নের সময় দুই বেসিক বেতন ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা এবং জমি অধিগ্রহণের কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে ৯০ হাজার টাকা অতিরিক্ত নিয়েছেন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে ভূমি ক্রয় করার সময়ও একইভাবে টাকা নিয়েছেন। এভাবে দাপ্তরিক কাজকে অতিরিক্ত কাজ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোষাধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া বলেন, বিগত ৮ বছরে এগুলি জানার প্রয়োজন হয়নি কেন? এখন কার ইন্ধনে এসব করা হচ্ছে? এগুলি আমার নলেজে আছে। কোন আইনে আছে আপনি আমার বেতন সম্পর্কে জানার? আপনি আইন নিয়ে আসেন। এতদিন এইসব বিষয়ে প্রশ্ন করেননি কেন? এখন এসব বিষয় কেন আলোচনা হচ্ছে?
রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান প্রতিবেদককে বলেন, তোমাকে কে বলেছে এসব জানতে? টেন্ডারের কিছু বিষয় আছে যেগুলি অল্প অল্প করে কাজ করলে টেন্ডারের প্রয়োজন পড়ে না। এক বাজেটে টাইলস, অন্য বাজেটে কর্মচারিদের বেতন এভাবে আলাদা করলে টেন্ডার প্রয়োজন হয় না। পরবর্তীতে তিনি জানান, নতুন ক্যাম্পাসে প্রকল্পে সেলিম ভূঁইয়ার অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার বিষয় আংশিক সত্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে ১৭ই অক্টোবর মো. সেলিম ভূঁইয়ার দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব শেষ হয়। এখন তৃতীয় মেয়াদে নিয়োগ পেতে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, গণভবন ও বঙ্গভবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তদবির শুরু করেছেন। তবে সাবেক এ ট্রেজারারের নামে নানা বিতর্ক থাকায় তৃতীয় মেয়াদে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসাবে মানতে অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মকর্তা নারাজ।
গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্য থেকে ট্রেজারার নিয়োগ দেয়ার দাবি জানান। এদিকে, দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাবেক ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন। এই বলয়ে নির্দিষ্ট কিছু লোক পদ-পদবি থেকে শুরু করে সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। এছাড়া নানা অনিয়মের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে তিনি অবৈতনিক কর্মকর্তা হলেও নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেই অর্থ ভোগ ও বন্টন করছেন।
অভিযোগ রয়েছে, চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারিকে অনিয়ম করে একই দপ্তরের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। অভিজ্ঞতা না থাকলেও একজন চুক্তিভিত্তিক আইটি কনসাল্ট্যান্টকে সরাসরি প্রোগ্রামার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনের টাকা নিজ আত্মীয়ের একটি বেসরকারি ব্যাংকের ডেমরা শাখার একাউন্টে রেখে সুবিধা ভোগ করেছেন। টেন্ডার ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরাদ্ধকৃত গাড়ি ব্যবহার করে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্টটাইম চাকরি করেন সদ্য সাবেক এই কোষাধ্যক্ষ।
জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী ট্রেজারারের মেয়াদ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে তিনজন শিক্ষকের নাম পাঠাতে হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুধু কোষাধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়ার নাম পাঠানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষকের চাকরির সময়সীমা শেষ হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় একজন শিক্ষকের নাম পাঠানোয় সেই চিঠি আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরত পাঠিয়ে তিনজন শিক্ষকের নাম পাঠাতে বলে। দ্বিতীয় দফায় কোষাধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়াসহ আরও দুই জনের নাম পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়ার আস্থাভাজন লোক হওয়ার কারণে ৩ই মে ২০১৬ সালে মো. হাফিজুর রহমানকে চুক্তিভিত্তিক আইটি কনসাল্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ দেন। হাফিজুর ‘পিপলস বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ২০১৬ সালে ইউজিসি’র জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুয়ায়ী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ গ্রহণযোগ্য নয়। এরপর তিনি গত ৩ই মে ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রামার পদে (৬ গ্রেড) চাকরির অনুরোধ জানান। তখন হাফিজুরের চুক্তির মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধির সুপারিশ করেন সেলিম ভূঁইয়া। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ সালের হিসেবে ৬ষ্ঠ গ্রেডে বেতন নিতে হলে নূন্যতম ৫ বৎসরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। এরপর ২০১৮ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ৬ মাসের জন্য এডহক ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামার হিসেবে যোগদান করেন হাফিজুর। ওই বছর ১৪ই আগষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুনরায় ৬ মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ সালের কাঠামো অনুযায়ী ৫ বছর অভিজ্ঞতার কথা বলা থাকলেও মাত্র দুই বছরের অভিজ্ঞতা দিয়ে গত ১৬ই মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ তম সিন্ডিকেটে হাফিজকে প্রোগ্রামার হিসেবে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি আনোয়ার হোসেন সেলিম ভূঁইয়ার আস্থাভাজন হওয়ায় অনিয়ম করে একই দপ্তরের কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পান। অথচ দপ্তরে যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মচারি থাকলেও তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। এই কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি অনুমোদন ছাড়াই ঢাকার বাইরে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে থাকেন।
অভিযোগ আছে, টেন্ডার ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ, ক্যাফেটেরিয়া, এডমিশন সার্ভারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের কাজ করেন। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে অচল করে নিজেই সকল কাজ করেছেন।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে কোষাধ্যক্ষের ‘অবৈতনিক’ পদ। এ পদের সম্মানী হিসাবে তিনি শুধু গাড়ি সুবিধা পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসাবে নিজ কর্মস্থল থেকে বেসিক বেতনসহ অন্যান্য সুবিধা পাবেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সেলিম ভূঁইয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুধুমাত্র বেসিক বেতনই নেন অধ্যাপক সমমান ৭৬ হাজার ৪৯০ টাকা। সব মিলিয়ে তা ৩ লাখ টাকার কাছাকাছি। তৃতীয় মেয়াদে এ শিক্ষককে আবারও নিয়োগ দেয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় কোষাগার থেকে এ অতিরিক্ত খরচা গুনতে হবে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের সঙ্গে সাংঘার্ষিক।
এদিকে কোষাধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া গাড়ি ব্যবহার করে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়) নিয়মিত যাতায়াত করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব খাটিয়ে ইভিনিং এমবিএতে ক্লাস নিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা নেন। কেরানীগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্প প্রণয়নের সময় দুই বেসিক বেতন ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা এবং জমি অধিগ্রহণের কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে ৯০ হাজার টাকা অতিরিক্ত নিয়েছেন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে ভূমি ক্রয় করার সময়ও একইভাবে টাকা নিয়েছেন। এভাবে দাপ্তরিক কাজকে অতিরিক্ত কাজ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোষাধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া বলেন, বিগত ৮ বছরে এগুলি জানার প্রয়োজন হয়নি কেন? এখন কার ইন্ধনে এসব করা হচ্ছে? এগুলি আমার নলেজে আছে। কোন আইনে আছে আপনি আমার বেতন সম্পর্কে জানার? আপনি আইন নিয়ে আসেন। এতদিন এইসব বিষয়ে প্রশ্ন করেননি কেন? এখন এসব বিষয় কেন আলোচনা হচ্ছে?
রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান প্রতিবেদককে বলেন, তোমাকে কে বলেছে এসব জানতে? টেন্ডারের কিছু বিষয় আছে যেগুলি অল্প অল্প করে কাজ করলে টেন্ডারের প্রয়োজন পড়ে না। এক বাজেটে টাইলস, অন্য বাজেটে কর্মচারিদের বেতন এভাবে আলাদা করলে টেন্ডার প্রয়োজন হয় না। পরবর্তীতে তিনি জানান, নতুন ক্যাম্পাসে প্রকল্পে সেলিম ভূঁইয়ার অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার বিষয় আংশিক সত্য।