বাংলারজমিন

তাহিরপুরে ইউএনও-এএসআই সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

২৪ অক্টোবর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৮:৫৪ পূর্বাহ্ন

বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও এক ব্যবসায়ীর ৪০টি গরু জব্দ এবং বেআইনিভাবে নিলাম দেয়ার অভিযোগে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ভারপ্রাপ্ত) ও টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক গরু ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেছেন তাহিরপুর উপজেলার পার্শ্ববর্তী ধরমপাশা উপজেলার বৌলাম গ্রামের গরু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম। আদালতের বিচারক শুভদীপ পাল মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযুক্তরা হলেন- ধরমপাশা উপজেলার রনসি গ্রামের আর্শাদ মিয়া, তাহিরপুর উপজেলার রামসিংপুর গ্রামের সেলিম মিয়া ও মনির মিয়া, টাঙ্গুয়ার হাওরে কর্মরত আনসার কাজল, তাহিরপুর থানার টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই আবু মুসা, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুনতাসির হাসান, তাহিরপুর উপজেলার সূর্যেরগাঁও গ্রামের স্বপন কুমার দাস। মামলায় টাঙ্গুয়ার হাওরে কর্মরত আনসার সদস্য ও পুলিশ সদস্য সহ আরো ১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী শফিকুল তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, তিনি একজন গরু ব্যবসায়ী। ২০ বছর ধরে গরু ব্যবসা করে আসছেন। গত ১৫ই অক্টোবর তিনি ধর্মপাশা উপজেলার মহেষখলা বাজার থেকে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ৪০টি গরু ক্রয় করেন। এসব গরু ক্রয়ের নির্ধারিত ফি দিয়েছেন এবং ইজারাদারের রসিদও তার কাছে ছিল। এর মধ্যে ১৯টি তার নিজের নামে এবং ২১টি তার ব্যবসায়ীক অংশীদার একই গ্রামের সাজলের নামে কেনা হয়। তারপর গরুগুলো স্থানীয় জালালপুর গ্রামের ইসলামের বাড়ি নিয়ে রাখেন। পরের দিন সকালে বড় একটি স্টিলবডি নৌকা ভাড়া করে গরুগুলো নিয়ে গত ১৮ই অক্টোবর নিজের গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। নৌকাটি টাঙ্গুয়ার হাওরের রনসি এলাকায় যাওয়া মাত্রই অভিযুক্ত আর্শাদ ...শিয়া ও সেলিম নৌকা থামাতে বলেন এবং দুজন  নৌকায় ওঠে তাদের নিজেদের পরিচয় দেন তারা টাঙ্গুয়ার হাওর সহব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য। এক পর্যায়ে গরু ব্যবসায়ীদের তারা বলে এসব গরু অবৈধভাবে এনেছেন। এসময় তাদের গরু ক্রয় করার বৈধ কাগজপত্র দেখানোর পরও তারা গরুগুলো না ছেড়ে হাওরে দায়িত্বে থাকা আনসার কাজলসহ আরো কয়েকজনকে নিয়ে আসেন নৌকাতে। তারা নানাভাবে গরু ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু গরু ব্যবসায়ী শফিকুল টাকা দিতে অস্বীকার করায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে এসব গরু ভারতীয় বলে জেলে দেয়ার হুমকি দেয়। এরপর তাদের ফোনে ঘটনাস্থলে আসেন  টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই আবু মোছা সহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। তারা নৌকাতে এসেও নানাভাবে হুমকি দেন এবং তাদের কাছে টাকা চান। কিন্তু তারা টাকা না দেয়ায় শেষ পর্যন্ত গরুগুলোসহ তাদের নৌকাটি টেকেরঘাট রেস্ট হাউসের পাশে নিয়ে রাখেন। তখন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুনতাসির হাসান বোটে নৌকার গরুর কাছে আসেন।
অভিযোগে শফিকুল আরো উল্লেখ করেন, ইউএনও মুনতাসির হাসানের সামনেই তাদের কাছে টাকা চাওয়া হয় এবং তাদের নানাভাবে হুমকি দেয়া হয়। একপর্যায়ে তারা গরিব মানুষ বলে ছেড়ে দেয়ার জন্য আকুতি জানালেও এএসআই মুছা সহ পুলিশ সদস্যরা ক্ষুব্ধ হয়ে গরুগুলোর একটি জব্দ তালিকা করেন। এরপর মুনতাসির হাসান জব্দকৃত গরুগুলো সাত লাখ টাকা নিলাম দেখিয়ে অভিযুক্ত স্বপন দাসকে দিয়ে দেন। এরপর সেখান থেকে তাদের বিদায় করে দেয়া হয়।
তাহিরপুর উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির হাসান বলেন, ৩৯টি গরু মালিক ছাড়া পেয়ে জব্দ তালিকা করা হয়। পরে কাস্টমস বিভাগে পাঠালে তারা গরুগুলো ৫ লাখ ৯৬ হাজার টাকায় নিলামে বিক্রি করেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আমিরুল হক বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status