অনলাইন

শামীমের টাকার ভাগ পেতেন প্রভাবশালী কয়েক নেতা

অনলাইন ডেস্ক

২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, সোমবার, ১২:০২ অপরাহ্ন

টেন্ডারমুঘল শামীম। মাত্র ১০-১২ বছরে আঙুল ফুলে কলাগাছ। আলাদীনের চেরাগ হাতে না থাকলেও ছিলো প্রভাশালী কয়েক নেতা। এমনকি মন্ত্রীও। জি কে শামীম টেন্ডার বাগিয়ে নিতে ব্যবহার করতেন তদবির, অর্থ ও অস্ত্র। মাসোহারা দিতেন সরকারের মন্ত্রীসহ শীর্ষস্থানীয় কয়েক নেতাকে। টেন্ডারবাজি, ক্যাসিনো ব্যবসাসহ সকল কাজে সহযোগিতা করতেন এই নেতারা। তাই প্রতি মাসে প্রায় ২৫ কোটি টাকা যেতো প্রভাবশালী এসব নেতাদের পকেটে। তবে সকল ক্ষেত্রেই তাদের নেতা ছিলেন যুবলীগের দক্ষিণের এক প্রভাবশালী। যিনি ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা হিসেবে পরিচিত। গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মাসোহারার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন তিনি।

টেন্ডার বাগিয়ে নিতে তদবির, ঘুষ, জাল কাগজপত্র প্রদান এমনকি অস্ত্রেরও ব্যবহার করতেন শামীম। এজন্য প্রভাবশালী নেতার তদবির থেকে সন্ত্রাসী সবই ছিলো তার। টাকার বিনিময়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী হিসেবে ব্যবহার করতেন তিনি।

জাল কাগজপত্র দাখিল করে হাতিয়ে নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন নির্মাণের ৭৫ কোটি টাকার কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা অনুষদ ভবনের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজের জন্য ২০১৬ সালে এই দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই সময়ে ইচ্ছে থাকলেও দুটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া কেউ দরপত্র জমা দিতে পারেননি। এজন্য ব্যবহার করা হয়েছিলো ছাত্রলীগকে। ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের মারমুখি ভূমিকায় কাজটি পায় জি কে শামীমের মালিকানাধীন মেসার্স দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স-জিকেবিএল (জেভি)। এজন্য চবি ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতাদের ২ কোটি টাকা দেওয়া হয়। এর বাইরে তিন শিক্ষক প্রত্যেকে ২০ লাখ টাকা করে পান।
এই টাকার ভাগবাটোয়ারা কেন্দ্র করে ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর নিজের বাসায় খুন হন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী। প্রথমে তা আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়। কিন্তু অধিকতর তদন্তে বেরিয়ে আসে দিয়াজকে খুন করা হয়েছে। ওই সময় দিয়াজের বাসা থেকে ২৫ লাখ টাকার একটি চেকও উদ্ধার করা হয়। চেকটি চবি দ্বিতীয় কলা অনুষদ ভবনের কাজের কমিশন সংক্রান্ত কি না, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।

জাল কাগজপত্র দাখিল করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন নির্মাণের ৭৫ কোটি টাকার টেন্ডার হাতিয়ে নেন জি কে শামীম। অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

জিজ্ঞাসাবাদে শামীম আরও তথ্য দিয়েছেন যে, ঘুষ না দিলে বিল আটকে দিতেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী। যে কারণে তাকে ১২শ’ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছেন শামীম। বিপুল টাকা ঘুষ, মাসোহারার দিতে গিয়ে কাজের ক্ষেত্রে অনিয়মের আশ্রয় নিতেন। আলোচিত জি কে বিল্ডার্স কোম্পানির বালিশকান্ড ঘটানোর পেছনেও এটি অন্যতম কারণ বলে শামীম জানান।

গত শুক্রবার রাজধানীর নিকেতনে অভিযান চালিয়ে জি কে শামীমকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। জি কে শামীম নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সন্মানদী ইউনিয়নের (চরভুলুয়া গ্রামের) দক্ষিণপাড়ার মৃত মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status