প্রথম পাতা

যুবলীগের কমিটি ভেঙে দেয়া নিয়ে আলোচনা

কাজী সোহাগ

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৯:২৯ পূর্বাহ্ন

চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও অবৈধ ব্যবসাসহ নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসেবে ভেঙে দেয়া হতে পারে যুবলীগের কমিটি। যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া গ্রেপ্তার ও এ নিয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর প্রতিক্রিয়ার পর কমিটি ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে আলোচনায় রয়েছে। গতকাল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে আলাপ করলে তারা এ তথ্য জানান। অন্যদিকে, যে কোন সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের আরেক শীর্ষ নেতা। যদিও বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত নেতা-কর্মী নিয়ে তিনি কাকরাইলে নিজের অফিসে অবস্থান করেন। গুজব রয়েছে, যে কোন সময় দেশ ত্যাগ করতে পারেন তিনি। এদিকে দলীয় সূত্র জানিয়েছে, পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে কমিটি রাখার আর কোন সম্ভাবনাই নেই। যুক্তি দেখিয়ে তারা বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে দেয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনে তাদের প্রবেশের স্থায়ী পাশ বাতিল করা হয়েছিলো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা জানান,ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের চার নেতার গণভবনের প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে গণভবন থেকে আনুষ্ঠানিক কোন নির্দেশনা আসেনি।

এদিকে, যুবলীগের কমিটি ভেঙে দেয়ার আলোচনা প্রসঙ্গে জানতে সংগঠনটির সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তারা ফোন ধরেননি। খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া গ্রেপ্তারের পর কড়া প্রতিক্রিয়া জানান যুবলীগ সভাপতি। তিনি বলেন, হঠাৎ করে কেনো জেগে ওঠলেন? কারণটা কি? এটা কি বিরাজনীতিকরন নীতিতে আসছেন? দলকে পঙ্গু করার কোনো ষড়যন্ত্রে আসছেন? নিষ্ক্রিয় করার ষড়যন্ত্রে আসছেন? প্রমাণ দেখান ত্রুটি আমার আছে, ত্রুটি কি আপনার নাই? আমি সমালোচনা করতে বসিনি। আমি আমার স্বচ্ছতা প্রমাণ  করতে চাচ্ছি। আমার ট্রাইবুন্যাল আছে,অভিযোগকারী অভিযোগ যদি সত্য হয় তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। অভিযোগ যদি ফৌজদারী অপরাধ হয়, তাহলে আমরা থানায় চিঠি দিয়ে জানাই। অপরাধ করলে শাস্তির ব্যবস্থা হবে। কিন্তু প্রশ্নটি হচ্ছে কেনো এখন এ্যারেষ্ট হবে? অতীতে হলো না কেনো? তার এ বক্তব্য দলের মধ্যেই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। কয়েকজন নেতা জানান, দলীয় প্রধানের নির্দেশে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে,খালেদ মাহমুদ গ্রেপ্তার হয়েছেন। এটা জলের মতো স্পষ্ট। কিন্তু যুবলীগ চেয়ারম্যান এসব জেনেশুনেই মূলত দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন। এটাকে ঔদ্ধত্য আচরণ বলে মন্তব্য করেন তারা। তবে এসব বিষয় নিয়ে কোন নেতাই নাম প্রকাশ করতে চাননি। এদিকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি নিয়ে আত্মবিচারে নেমেছে যুবলীগ। গঠন করেছে ট্রাইব্যুনাল।

এ নিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দেয়া হয়েছে। সংগঠনটির সভাপতি আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়েছেন। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিষয়টি নজিরবিহীন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার ক্ষোভের কথা শুনে সংগঠনের অভিযোগবিদ্ধ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এ উদ্যোগ নিয়েছে যুবলীগ। যুবলীগ ট্রাইব্যুন্যালের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। তবে গতকাল পর্যন্ত ট্রাইবুন্যালে কোন অভিযোগ জমা পড়েনি বলে জানা গেছে। পত্রিকায় দেয়া বিজ্ঞাপনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদকের ফোন নম্বর দেয়া হলেও ওই নাম্বারে ফোন ধরছেন না বলে অভিযোগ করেছেন কয়েক নেতা। ২০১২ সালে ষষ্ঠ কংগ্রেসের মাধ্যমে যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান ওমর ফারুক চৌধুরী ও হারুনুর রশীদ। ১৪৮ সদস্যর কেন্দ্রিয় কমিটিতে চেয়ারম্যান ও সাধারন সম্পাদক ছাড়াও ২৬ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য, ৫ জন যুগ্ম সম্পাদক, ৭ জন সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৫ জন সম্পাদক, ৩৫ জন উপ-সম্পাদক, ২০ জন সহ-সম্পাদক এবং ২৬ জন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status