দেশ বিদেশ

নার্সিং প্রশিক্ষণ আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে

স্টাফ রিপোর্টার

১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:০৯ পূর্বাহ্ন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার দেশে এবং বিদেশে বিশেষায়িত নার্সদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার জোগান দিতে তাদের প্রশিক্ষণকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর তেঁতুইবাড়িতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ’র ১ম স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের নিজেদেরও এখন প্রচুর নার্সের দরকার। তাছাড়া বিভিন্ন ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি সেখানেও আমাদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নার্স দরকার হবে। ইতিমধ্যে বিদেশ থেকেও নার্সদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়ে আসছি। তিনি বলেন, বিদেশে যেমন প্রশিক্ষণ চলবে তেমনি দেশেও যেন শিক্ষার মানটা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয় সে ব্যবস্থাটাও আমরা নেব। এই গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান দেশের আরো ছেলে মেয়েকে মহান সেবামূলক নার্সিং পেশায় আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই এই হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা রোগীরা পাবে এবং যা সারা দেশের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। শেখ হাসিনা নবীন নার্স গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বলেন, কঠোর পরিশ্রম করে আর্ত মানবতার সেবায় আপনারা আপনাদের আজকের সার্টিফিকেট প্রাপ্তির মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাবেন। জরুরি রোগী আনা নেয়ার জন্য তার সরকার এখানে একটি আন্ডারপাস নির্মাণ করে দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে সেবা দেয়া।তিনি বলেন, আগামীতে একটি মেডিকেল কলেজ আমরা প্রতিষ্ঠা করবো। ইতিমধ্যে সেজন্য হাসপাতালের পাশের খালের বিপরীত পাশে জায়গা নেয়া হয়েছে। আমরা সুন্দরভাবে এখানে একটি মেডিকেল কলেজ করতে চাই তাহলে পুরো জায়গাটি একটি স্বাস্থ্যসেবার হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি স্বাস্থ্য শিক্ষার প্রসার ও মানোন্নয়নে দেশের সকল বিভাগে পর্যায়ক্রমে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে। তিনি বলেন, দেশে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ২০০৬ সালে থাকা ৪৬টি থেকে বর্তমানে ১১১টিতে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশে নার্সিং পেশাটি এক সময় অবহেলিত ছিল বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গার্মেন্টস শিল্পনির্ভর গাজিপুরের শ্রমিক শ্রেণীর জনগণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা ও এই কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার একটি উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, শুরুতে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড থেকে প্রথমে ১০ কোটি টাকা এবং আরো ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে দিয়ে ২০ কোটি টাকা দিয়ে এখানে একটি ট্রাস্ট ফান্ড করে দেয়া হয়। যাতে এখান থেকে একেবারে হতদরিদ্র রোগীরা যেন চিকিৎসা সেবাটা পেতে পারে। এখানে আরো কিছু অর্থ বরাদ্দ দেয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় রোগী আসে যাদের অপারেশন লাগে এবং অন্যান্য ব্যাপারেও অনেক অর্থ লাগে। সেখানে ৫ হাজার টাকার অধিক রোগীর জন্য বরাদ্দ করতে গেলে ট্রাস্টের অনুমোদন লাগে যে কারণে আমরা আরো কিছু অর্থ বরাদ্দ দেব।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন। তিনি রুবিনা জেসমিন (২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ), পোস্ট বেসিক’র শিক্ষার্থী কামরুন্নাহার (২০১৪-১৫ শিক্ষা বর্ষ) এবং রীনা আক্তার (২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ) কে প্রধানমন্ত্রী পদক প্রদান করেন। ৭৯ জন শিক্ষার্থী, এরমধ্যে ৫৭ জন পোস্ট বেসিকের শিক্ষার্থী ১ম ব্যাচে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। মালয়েশিয়ার কেপিজে হেলথ কেয়ার ইউনিভার্সিটি কলেজের ভিসি এবং স্কুল অব মেডিসিন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. দাঁতো লোকমান সাইম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজের সিইও অধ্যাপক তৌফিক বিন ইসমাইল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। গ্র্যাজুয়েশন অর্জনকারী শিক্ষার্থীগণের মধ্য থেকে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খায়রুল ইসলাম ও অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য দেন। এনার্জি প্যাক লিমিটেড শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজের জন্য দুটি অ্যাম্বুলেন্সের চাবি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। উল্লেখ্য,২০১৩ সালের ১৮ই নভেম্বর মালয়েশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দাঁতোসেরি মোহাম্মদ নজিব বিন তুন আব্দুল রাজাক বাংলাদেশ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ট্রাস্টের সহ-সভাপতি শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে এই হাসপাতাল উদ্বোধন করেন এবং ৮ই এপ্রিল ২০১৫ সালে বর্তমান নার্সিং কলেজটির যাত্রা শুরু হয়।
বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে এবং বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সহসভাপতি শেখ রেহানা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status