শেষের পাতা

দক্ষিণে যেভাবে চলছে অভিযান

আল-আমিন

২৩ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার, ৯:০৭ পূর্বাহ্ন

এডিস মশা নিধন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাসাবাড়ি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি। এডিসের লার্ভা পেলে করা হচ্ছে জরিমানা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সতর্ক করা হচ্ছে। তবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে যেসব এলাকায়   সরজমিন তা ঘুরে দেখা গেছে বাসা-বাড়িতে অভিযান চললেও সড়কের পাশের ড্রেন, ডাস্টবিনে দেখা গেছে মশার আবাসের অস্থিত্ব। কোথাও কোথাও জমে থাকা পানিতে মশা কিলবিল করতে দেখা গেছে। গতকাল সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রমনা ও আশপাশের এলাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ১১৮টি বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখানে এসিড মশার লার্ভা পাওয়ার অভিযোগে ৪টি বাসার মালিককে ৪৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে ভ্রামমাণ টিমে থাকা মশক নিধন কর্মী দেখা যায়নি।

সিদ্বেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের একটি ডাস্টবিন রয়েছে। তার কিছু দুরেই রয়েছে বহুতল একটি আবাসিক ভবন। সেখানে মশার উৎপাত দেখা গেছে। ডাস্টবিনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ডাবের খোসা ও খালি বোতল। সেখানে জমানো পানিতে মশার উৎপাত দেখা গেছে। স্থানীয় চা দোকানি শমসের আলী অভিযোগ করে বলেন, দুই মাস হলো এখানে কর্তৃপক্ষের কোন মশক নিধন কর্মী দেখতে পাওয়া যায়নি। ডাস্টবিনসহ  ড্রেনে মশার উৎপাত রয়েছে। সেগুলো নিধন না করে এখন তারা বাসা বাড়িতে অভিযান চালাতে এসেছেন। এছাড়াও মগবাজারের কাজী অফিস লেনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার ডাস্টবিনে মশার লার্ভার উপস্থিতি।

৩২ এর সি নম্বর বাসার কেয়ারটেকার আজিজুল ইসলাম জানান, ডেঙ্গু জ্বরের আক্রান্তের খবর বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় পাওয়ার পর এলাকার ফ্ল্যাট বাড়ির মালিকরা সতেচন হয়েছেন। তারা নিজেদের ফ্ল্যাট ও আশপাশের স্থান পরিষ্কার পরিছন্ন রাখছেন। তিনি আরও জানান, ডেঙ্গু মশার উৎপাত বেড়ে যাওয়ার পরও এলাকায় কোন মশক নিধন কর্মী দেখতে পাওয়া যায়নি। বরং সামনের ডাস্টবিনে মশার লার্ভা দেখতে পাওয়া গেছে। ডাস্টবিনে ডাবের  খোসা, খালি পানির বোতল ও পলিথিনে পানি জমে আছে। কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিতে আরও পানি জমছে। এতে মশার উৎপাত বেড়ে গেছে।

গতকাল দুপুরে রমনার একাধিক বাড়িতে অভিযান চালায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভ্রামমাণ আদালত। ১/সি বেইলি রোডের একটি তিনতলা বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ছাদে গার্ডেন রয়েছে। আশপাশের ভবনের লোকজন অভিযোগ করেছেন, ওই বাসায় এসিড মশার লার্ভা জন্মাতে পারে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালাতে যায় ভ্রামমাণ আদালত। তবে সেখানে গাছের গোড়ায় পানি জমতে দেখা যায়নি। বাড়ির  কেয়ারটেকার সুমন জানান, গার্ডেনটি দেখাশোনার জন্য দুইজন কর্মী রয়েছে। ডেঙ্গ জ্বরের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় তারা সেখানে পানি জমতে দেননি। এছাড়াও শান্তিনগরের নিটল টাটার সার্ভিসিং সেন্টারে যায় ভ্রামমাণ আদালত। তিনতলা ভবন হলেও সেটির ওপরে টিনের ছাদ রয়েছে। সেখানেও এসিড মশার কোন লার্ভা পাওয়া যায়নি।
ভ্রামমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, যে ৪ টি বাড়িকে জরিমানা করা হয়েছে সেই বাড়ির বিভিন্নস্থানের ফেলে রাখা জমাট পাত্রের ৮০ শতাংশের মধ্যে লার্ভা মিলেছে। এছাড়াও বাড়ির নিচের গ্যারেজের পরিত্যক্ত টায়ার, বাড়ির মূল ফটকের লোহার গেটের ফাঁকে, পরিত্যক্ত কমোডে, খানাখন্দে পানি জমতে দেখতে পেয়েছেন। সেগুলোতে মশার বিচরণ ক্ষেত্র ছিল। তারা বাসা ও প্রতিষ্ঠানের অভিযানের পাশাপাশি বিভিন্ন পার্ক, নার্সারি ও ফোয়ারা গুলোতেও অভিযান চালাবেন।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী মাজিষ্ট্রেট মো: মিজানূর রহমান মানবজমিনকে জানান, আমরা অভিযানের পাশাপাশি জনগণকে সচেতনও করেছি। স্থানীয় জনগণ আমাদের সহযোগিতা করেছে। এডিস মশা যাতে চারপাশের ছড়াতে না পারে সেক্ষেত্রে তারা আগের চেয়ে অনেক সচেতন হয়েছেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির করপোরেশনের জনসংযোগ কমকর্তা উত্তম কুমার রায় জানান, গতকাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মোট ১১৮টি বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে ৪টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ২টিতে নোংরা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ পাওয়ায় মোট ৪৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে মোবাইল কোর্ট । তিনি আরও জানান, ১৯৩ ফকিরাপুলের নির্মাণাধীন একটি ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ১০ হাজার টাকা, ৪৩/১ হাজারীবাগ শেরে বাংলা রোডের বাড়ির ছাদে পরিত্যক্ত টায়ারে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ২৫ হাজার টাকা এবং কেএমদাস লেনের ২টি বাড়িতে লার্ভা জন্মানোর উপযোগী পরিবেশ পাওয়ায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও পুরান ঢাকার অভয় দাস লেনের ২টি বাড়িতে নোংরা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ বিদ্যমান থাকায় ৪ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৪৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে মোবাইল কোর্ট।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status