বাংলারজমিন

তাহিরপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

২৩ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার, ৮:৫৬ পূর্বাহ্ন

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের ৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন ও এডিপি খাতের প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ও তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর উপজেলা চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল ও উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাইদুল্লাহ মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। গত বুধবার বিকালে তাহিরপুর উপজেলার ৭ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী খসরুল আলম, মো. বোরহান উদ্দিন, হাজী আজাহার আলী, আবুল কাশেম, আপ্তাব উদ্দিন, বিশ্বজিৎ সরকার, হাজী আব্দুর জহুর, স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত ৯ই মে সকালে উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সভাটি শুধু মাত্র দায়িত্বভার গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। উন্নয়নমূলক প্রকল্প সম্বন্ধে কোনো আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। পরে ২৫শে জুন সকালে উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির ২য় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এতে ৯ই মে তারিখে অনুষ্ঠিত মাসিক সভার কার্যবিবরণীতে অনেক প্রকল্পের আলোচনা ও প্রস্তাব সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত করা হয়েছে। যা পূর্ববর্তী সভায় কোনো রূপ অলোচনা করা হয়নি। বিষয়টি উপজেলার ৭ ইউপি চেয়ারম্যান সভার সভাপতি করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুলকে অবহিত করলে তিনি সভার কার্যবিবরণীতে বিগত সভায় তার কল্পনা প্রস্তুত এককভাবে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর বিষয়ে সংশোধনী আনবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেন। উক্ত সভায় সকল ইউপি চেয়ারম্যানগণ উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে উন্নয়ন ও এডিপি খাতে কত টাকা বরাদ্দ আছে জানতে চাইলে, তিনি শুধু মাত্র এডিপি খাতের ৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা বরাদ্দের কথা জানান। এডিপি খাতের বরাদ্দের টাকা দিয়ে সকল ইউপি চেয়ারম্যানগণের সঙ্গে সমন্বয় করে বেঞ্চ ক্রয় করে  উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমবণ্টন করার প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবটি সভায় সকল সদস্যের সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হয়। পরে ৩য় সভায় বিগত সভাগুলোর কার্যবিবরণী পেশ করা হলে তাতে তারা ব্যাপক অনিয়ম লক্ষ করেন। বিগত সভাগুলোর যে সংশোধনী আনার কথা ছিল তাও করা হয়নি। উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রকৌশলী তাদের সঙ্গে কোনো সমন্বয় না করেই এডিপি খাতের ৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকায়  ৮২ জোড়া বেঞ্চ নিয়মবহির্ভূতভাবে ক্রয় করেন। কিন্তু ক্রয়কৃত ৮২ জোড়া বেঞ্চের বাজার মূল্য সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ লাখ টাকা হবে বলে তাদের ধারণা। এ ছাড়াও ৮২ জোড়া বেঞ্চ উপজেলার ২ ইউনিয়নকে বাদ দিয়ে বাকি ৫ ইউনিয়নে উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রকৌশলীর মাধ্যমে বিতরণ করেন। কেন সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সমন্বয় না করে ৮২ জোড়া বেঞ্চ ক্রয় ও বিতরণ করা হলো তা উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে তিনি দাম্বিকতা ও স্বেচ্ছাচারী মনোভাব দেখিয়ে বলেন, উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন ও সমন্বয় সভার সকল সিদ্ধান্তই আমার একক সিদ্ধান্তেই গৃহীত হবে। তার এহেন আচরণে সকল ইউপি চেয়ারম্যানগণ সভা বর্জন করে চলে আসেন। এ সময় তিনি চিৎকার করে তাদেরকে দেখে নিবেন ও মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকিও দেন।
তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status