বাংলারজমিন
সিলেটে আলোচিত যুবলীগ নেতা জাকির আটক
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২৩ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার, ৮:৩০ পূর্বাহ্ন
সিলেটের আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও পরিবহন সেক্টরের শীর্ষ নেতা আবুল কালাম চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলনের পরদিনই গ্রেপ্তার হলেন যুবলীগ নেতা জাকিরুল আলম জাকির। র্যাব সদস্যরা বুধবার বিকালে তাকে নগরীর গার্ডেন টাওয়ারের সামনে থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর রাতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি দেখিয়ে মোগলাবাজার থানায় হস্তান্তর করেছে। গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রেরণ করে জাকিরকে আটকের কথা জানিয়েছে র্যাব। জাকিরুল আলম জাকির সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদের বলয়ের শীর্ষ নেতা। গত সম্মেলনে তিনি মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদককে ছাড় দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি সিলেটের আলোচিত যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত। নগরীর উপশহরে রয়েছে তার নিজস্ব একটি গ্রুপ। বিগত ইউনিয়ন নির্বাচনে জাকির নৌকার প্রার্থী হয়ে তৎকালীন বিএনপি নেতা আবুল কালামের সঙ্গে শহরতলীর কুছাই ইউনিয়ন পরিষদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। আর ওই নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে জাকির নিজের এলাকায় অবস্থান শক্তিশালী করতে কাজ করছিলেন। এ নিয়ে তিনি বার বার কালাম চেয়ারম্যানের মুখোমুখি হন। প্রায় এক বছর আগে আবুল কালাম চেয়ারম্যান বিএনপির সঙ্গ ত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এরপর থেকে কালামের সঙ্গে জাকিরের দ্বন্দ্ব আরো প্রকট হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা। গত সোমবার আবুল কালাম চেয়ারম্যান জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ তুলেন। আর এই অপপ্রচারের জন্য তিনি দোষারোপ করেছিলেন যুবলীগ নেতা জাকিরুল আলম জাকিরকে। জাকির বলয়ের নেতারা জানিয়েছেন, এলাকায় জাকিরের অবস্থান সুদৃঢ় হওয়ার কারণে কালাম চেয়ারম্যান এলাকায় তার কর্তৃত্ব বজায় রাখতে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এরপর থেকে জাকিরের সঙ্গে নতুন করে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এদিকে র্যাব-৯ এর পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে- বুধবার বিকাল ৩টার দিকে নগরীর উপশহরের গার্ডেন টাওয়ার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করেন র্যাব-৯ সিলেট ক্যাম্পের এএসপি সত্যজিৎ কুমার ঘোষের নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল। বুধবার রাতে তাকে পুলিশের কাছে হন্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৯ সিলেটের মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। নানা ঘটনায় সিলেটের উপশহরে আলোচিত ছিল জাকিরুল আলম জাকির। এ কারণে দুটি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন। এ দুটি মামলায় জামিন না নিয়েও তিনি রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় ছিলেন। মহানগর যুবলীগের সম্মেলনের আগে জাকির তার বলয়কে নিয়ে নগরীতে শোডাউন দেন। তারও আগে তিনি শাহপরান থানার তৎকালীন ওসি আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ওসি আক্তার শাহপরান থানায় থাকার সময় জাকিরের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করায় জাকির ক্ষেপে গিয়ে ওই অভিযোগ দিয়েছিলেন। এসব অভিযোগের কারণে ওসি আক্তারকে শাহপরান থানা থেকে বদলি করা হয় মোগলাবাজার থানায়। আর জাকিরকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে মোগলাবাজার থানায়ই হস্তান্তর করে জাকিরকে।