বাংলারজমিন

আতঙ্কে হাজার হাজার মানুষ

জৈন্তাপুরে নাপিত খালের তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে

১৯ আগস্ট ২০১৯, সোমবার, ৮:০৬ পূর্বাহ্ন

 সিলেটের জৈন্তাপুর ইউনিয়নের কেন্দ্রী, লক্ষ্মীপুর, আমবাড়ীসহ কয়েকটি গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত নাপিত খাল ও কলসী নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে এলাকা। এতে বিলীন হওয়ার পথে নদী তীরবর্তী বসবাসরত প্রায় ৩শ’ পরিবারের মানুষের বসতবাড়ি, ৩টি মসজিদ, ১টি স্কুল, ১টি মাদ্রাসা ও ২টি কবরস্থানসহ গ্রামীণ রাস্তাঘাট। বর্ষা মৌসুমে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে এবং এই নদী পথ দিয়ে প্রতিদিন অতিরিক্ত ইঞ্জিন নৌকা চলাচলের ফলে প্রতিনিয়ত নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে নদী তীরবর্তী জনপদ। ইতিমধ্যে নদী তীরবর্তী কৃষকদের বাড়ি গাছপালা, বাঁশ বাগান ও কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নাপিত খালের তীরবর্তী লক্ষ্মীপুর-ডুলটিরপার গ্রামীণ রাস্তার বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গার নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে কৃষি জমিতে বালু প্রবেশ করে ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। এলাকার সাধারণ মানুষ নদী ভাঙনের কবলে পরিবার পরিজন নিয়ে নদীর উভয় তীরবর্তী বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন বন্যার পানিতে নদী ভাঙনের পাশাপাশি প্রতিদিন ডুলটিরপার এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৩০-৪০টি ইঞ্জিনচালিত বড় বড় নৌকা চলাচলের ফলে প্রতিনিয়ত নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এলাকাবাসী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নিবার্হী অফিসারের কাছে ইঞ্জিন নৌকা চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এই নিয়ে লক্ষ্মীপুর, কেন্দ্রী, নলজুরী, আমবাড়ী এবং ডুলটিরপার এলাকার জনগণের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। নদী তীরবর্তী গ্রামের লোকজন জানান নাপিত খাল ও কলসী নদী দিয়ে প্রতি রাতে এসব ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে চোরাকারবারিরা ভারতীয় অবৈধভাবে গাড়ির টায়ার, স্প্রিং, পাত, অফিসার চয়েস মদ, ভারতীয় বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট, চা-পাতা, চকলেট, সুপারি, ইয়াবা, ভারতীয় শাড়ি, মোবাইল সামগ্রী নৌকা বোঝাই করে চলাচল করছে। ছোট নদীপথ দিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচলের ফলে সৃষ্ট টেউয়ের কারণে নদীর দুই তীরের রাস্তা ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। নদী তীরবর্তী প্রায় ৩শ’ পরিবার প্রশাসনের কাছে এসব ইঞ্জিন নৌকা চলাচল বন্ধের দাবি জানান। এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য জৈন্তাপুর মডেল থানার এসআই আজিজুর রহমান গতকাল সরজমিন পরিদর্শন করেন। এ সময় স্থানীয়রা নদী ভাঙনের বিষয়ে তাদের দুঃখ-বেদনার কথা জানান। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নদীর উভয় পাড়ের ভাঙন অংশে ব্লক স্থাপনের অনুরোধ জানান। বিগত বছরের বন্যায় নাপিত খালের দক্ষিণ পাড়ের গ্রামীণ রাস্তার অন্তত ১ হাজার মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এলাকাবাসী ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় ইউনিয়ন পরিষদ ও এলাকাবাসীর অর্থায়নে বালুর বস্তা দিয়ে নদী ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করেছিলেন। জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এখলাছুর রহমান জানান, জৈন্তাপুর ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা হাওর ও নদী বেষ্টিত হওয়ার পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানিতে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদী ভাঙনের শিকার মানুষের বসতভিটা ও কৃষি জমি রক্ষা করতে তিনি নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ স্থাপন কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানিতে নদী ভাঙনের শিকার হতে হচ্ছে। নদী তীরবর্তী জনগণের বসতভিটা রক্ষায় স্থায়ীভাবে সমাধান করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ কাজে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির, দিলাল আহমদ, নজির আহমদ জানান, বর্ষা মৌসুমে পরিবার পরিজন নদী ভাঙনের ভয়ে আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করতে হয়। ইতিমধ্যে গ্রামের ২টি সামাজিক কবরস্থান, গ্রামীণ রাস্তা নদীগর্ভে চলে গেছে।



   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status