বাংলারজমিন
মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের দায়ী করলেন শিল্প সচিব
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৮ আগস্ট ২০১৯, রবিবার, ৮:৫৭ পূর্বাহ্ন
সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ না করে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কাঁচা চামড়া নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ করেছেন শিল্প সচিব মো. আব্দুল হালিম। গতকাল সাভারে চামড়া শিল্পনগরীতে চামড়া শিল্প-সংক্রান্ত বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিসিকের চেয়ারম্যান মোস্তাক হাসান, প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী জিতেন্দ্রনাথ পাল, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল জলিল, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ, বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দিলজাহান ভূঁইয়া ও উপদেষ্টা এম এ আউয়াল, সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান ও সাভারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম সায়েদ। সাভার ট্যানারি শিল্পনগরীর সিইটিপি সম্পূর্ণ চালু রয়েছে উল্লেখ করে শিল্প সচিব বলেন, কোরবানির সময় ট্যানারিগুলো সারা বছরের সরবরাহের অর্ধেক চামড়া সংগ্রহ করে। আগামী দু-তিন মাস এ শিল্প নগরী ট্যানারিগুলো পূর্ণ গতিতে চলবে। পিক সিজনে উৎপাদিত চামড়ার আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার স্বার্থে সব ট্যানারিকে একসঙ্গে কাজ না করে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করার ফলে কিছু কিছু স্থানে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা কাঁচা চামড়া নষ্ট করেছেন। এটি পুরো দেশের চিত্র নয়। অন্য স্থানের চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিভাগীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শিল্প সচিব বলেন, লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের মানদ-ে ১ হাজার ৩৬২টি পয়েন্ট রয়েছে। এর মধ্যে ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ও ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্টের জন্য ২০০ পয়েন্ট। লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সার্টিফিকেট অর্জনে অবশিষ্ট পয়েন্টগুলোর প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিটিএ নেতা সাখাওযাত উল্লাহ বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় সাভার ট্যানারি শিল্প নগরী ভালোভাবে কাজ করছে। শিল্প নগরীর সিইটিপি’র চারটি ইউনিটই যথাযথভাবে কাজ করছে। শিগগিরই লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের মানদ- অর্জন করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
চামড়ার গুণগত মান ভালো থাকলে সরকারের নির্ধারিত মূল্যে ট্যানারিগুলো চামড়া ক্রয় করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
বিসিকের চেযারম্যান বলেন, সিইটিপি সম্পূর্ণ অটোমেটেড হবে। দূর থেকে এর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়েছে। ট্যানারির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য শিগগিরই অস্থায়ী ভিত্তিতে তিনটি ডাম্পিং ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে।
কিছু কিছু ট্যানারির সেডিমেন্টেশন ট্যাংক নেই আবার অনেক ট্যানারির ট্যাংকের আকৃতি ও ডিজাইনে ত্রুটি রয়েছে উল্লেখ করে বিসিকের চেয়ারম্যান বলেন, এ ত্রুটির ফলে বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত বস্তু পানিতে ভেসে এসে সিইটিপি’র কাজকে বাধাগ্রস্ত করছে। এ ধরনের ট্যানারিগুলো শনাক্ত করে সেগুলোকে নোটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত সভায় গৃহীত হয়। ট্যানারিগুলো যাতে সব নিয়ম-কানুন মেনে চলে সেজন্য মালিকদের পক্ষ থেকে তদারকির লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বুয়েটের অধ্যাপক মো. আব্দুল জলিল বলেন, কিছু কিছু ট্যানারি ক্রোম বর্জ্য পৃথকভাবে না ফেলায় ক্রোমের সাথে অন্যান্য জিনিস চলে আসছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী প্রতি মেট্রিকটন চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ট্যানারিগুলো ২৫ হাজার লিটার পানি ব্যবহার করতে পারবে। বর্তমানে সাভার ট্যানারি শিল্প নগরীর ট্যানারিগুলো একই পরিমাণ চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ৪০ হাজার লিটার পানি ব্যবহার করছে। এতে করে সিইটিপি’র ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। ডিপ টিউবওয়েলে মিটার লাগানো হলে পানির অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
আগামী অর্থবছরে ১৭ দেশ থেকে আয় হবে ১৭০০ কোটি ডলার
অর্থনৈতিক রিপোর্টার: রপ্তানি আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বৃহৎ অংকের লেনদেন হওয়া দেশের সংখ্যা। সমাপ্ত অর্থবছরেও (২০১৮-১৯) একশ কোটি ডলার লেনদেনের তালিকায় যুক্ত হয়েছে ভারত ও পোল্যান্ড। আলোচ্য সময়ে ১১টি দেশ থেকে শতকোটি ডলারের বেশি রপ্তানি আয় এসেছে। আগামী অর্থবছরে এর সংখ্যা ১৭টি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে সরকার। এ বছর ১১টি দেশ থেকে আলাদাভাবে শতকোটি ডলারের বেশি রপ্তানি আয় করেছে বাংলাদেশ। আরও ছয়টি দেশে বছরে শতকোটি ডলার করে পণ্য রপ্তানি করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশগুলো হচ্ছে বেলজিয়াম, চীন, ডেনমার্ক, সুইডেন, রাশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া।
ইতিমধ্যে যে ১১টি দেশের প্রতিটি থেকে শতকোটি ডলারের বেশি রপ্তানি আয় এসে গেছে, সেগুলো হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড ও ভারত। এর মধ্যে ভারত ও পোল্যান্ড নতুন করে এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে।
ঈদের আগে ৮ই আগস্ট পণ্য ও সেবা খাত মিলিয়ে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি থেকে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫৫০ কোটি ডলার। ওইদিন মন্ত্রণালয় দুই বছরের রপ্তানি আয়, প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্য নিয়ে যে তথ্য-উপাত্ত তৈরি করেছে, তাতে শতকোটি ডলারের আয় আসা সম্ভাব্য এমন দেশগুলোর চিত্র উঠে এসেছে।
তবে বিশ্লেষণে দেখা যায়, ইতিমধ্যে শতকোটি ডলারের আয় এসেছে এমন ১১ দেশের মধ্যে ৭টিই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ)। আর হাতছানি দেওয়া নতুন ৬টির মধ্যেও ইইউভুক্ত দেশ তিনটি। এদিকে ভারত থেকে গত অর্থবছরে আয় এসেছে ১২৪ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আগের অর্থবছরে দেশটি থেকে আয় এসেছিল ৮৭ কোটি ৩২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য খাতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এই অর্থ আগের ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পণ্য খাতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি ৮১ লাখ ৭০ হাজার ডলারের তুলনায় ১০.৫৫ শতাংশ বেশি।
বিটিএ নেতা সাখাওযাত উল্লাহ বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় সাভার ট্যানারি শিল্প নগরী ভালোভাবে কাজ করছে। শিল্প নগরীর সিইটিপি’র চারটি ইউনিটই যথাযথভাবে কাজ করছে। শিগগিরই লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের মানদ- অর্জন করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
চামড়ার গুণগত মান ভালো থাকলে সরকারের নির্ধারিত মূল্যে ট্যানারিগুলো চামড়া ক্রয় করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
বিসিকের চেযারম্যান বলেন, সিইটিপি সম্পূর্ণ অটোমেটেড হবে। দূর থেকে এর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়েছে। ট্যানারির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য শিগগিরই অস্থায়ী ভিত্তিতে তিনটি ডাম্পিং ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে।
কিছু কিছু ট্যানারির সেডিমেন্টেশন ট্যাংক নেই আবার অনেক ট্যানারির ট্যাংকের আকৃতি ও ডিজাইনে ত্রুটি রয়েছে উল্লেখ করে বিসিকের চেয়ারম্যান বলেন, এ ত্রুটির ফলে বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত বস্তু পানিতে ভেসে এসে সিইটিপি’র কাজকে বাধাগ্রস্ত করছে। এ ধরনের ট্যানারিগুলো শনাক্ত করে সেগুলোকে নোটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত সভায় গৃহীত হয়। ট্যানারিগুলো যাতে সব নিয়ম-কানুন মেনে চলে সেজন্য মালিকদের পক্ষ থেকে তদারকির লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বুয়েটের অধ্যাপক মো. আব্দুল জলিল বলেন, কিছু কিছু ট্যানারি ক্রোম বর্জ্য পৃথকভাবে না ফেলায় ক্রোমের সাথে অন্যান্য জিনিস চলে আসছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী প্রতি মেট্রিকটন চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ট্যানারিগুলো ২৫ হাজার লিটার পানি ব্যবহার করতে পারবে। বর্তমানে সাভার ট্যানারি শিল্প নগরীর ট্যানারিগুলো একই পরিমাণ চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ৪০ হাজার লিটার পানি ব্যবহার করছে। এতে করে সিইটিপি’র ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। ডিপ টিউবওয়েলে মিটার লাগানো হলে পানির অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
আগামী অর্থবছরে ১৭ দেশ থেকে আয় হবে ১৭০০ কোটি ডলার
অর্থনৈতিক রিপোর্টার: রপ্তানি আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বৃহৎ অংকের লেনদেন হওয়া দেশের সংখ্যা। সমাপ্ত অর্থবছরেও (২০১৮-১৯) একশ কোটি ডলার লেনদেনের তালিকায় যুক্ত হয়েছে ভারত ও পোল্যান্ড। আলোচ্য সময়ে ১১টি দেশ থেকে শতকোটি ডলারের বেশি রপ্তানি আয় এসেছে। আগামী অর্থবছরে এর সংখ্যা ১৭টি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে সরকার। এ বছর ১১টি দেশ থেকে আলাদাভাবে শতকোটি ডলারের বেশি রপ্তানি আয় করেছে বাংলাদেশ। আরও ছয়টি দেশে বছরে শতকোটি ডলার করে পণ্য রপ্তানি করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশগুলো হচ্ছে বেলজিয়াম, চীন, ডেনমার্ক, সুইডেন, রাশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া।
ইতিমধ্যে যে ১১টি দেশের প্রতিটি থেকে শতকোটি ডলারের বেশি রপ্তানি আয় এসে গেছে, সেগুলো হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড ও ভারত। এর মধ্যে ভারত ও পোল্যান্ড নতুন করে এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে।
ঈদের আগে ৮ই আগস্ট পণ্য ও সেবা খাত মিলিয়ে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি থেকে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫৫০ কোটি ডলার। ওইদিন মন্ত্রণালয় দুই বছরের রপ্তানি আয়, প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্য নিয়ে যে তথ্য-উপাত্ত তৈরি করেছে, তাতে শতকোটি ডলারের আয় আসা সম্ভাব্য এমন দেশগুলোর চিত্র উঠে এসেছে।
তবে বিশ্লেষণে দেখা যায়, ইতিমধ্যে শতকোটি ডলারের আয় এসেছে এমন ১১ দেশের মধ্যে ৭টিই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ)। আর হাতছানি দেওয়া নতুন ৬টির মধ্যেও ইইউভুক্ত দেশ তিনটি। এদিকে ভারত থেকে গত অর্থবছরে আয় এসেছে ১২৪ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আগের অর্থবছরে দেশটি থেকে আয় এসেছিল ৮৭ কোটি ৩২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য খাতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এই অর্থ আগের ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পণ্য খাতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি ৮১ লাখ ৭০ হাজার ডলারের তুলনায় ১০.৫৫ শতাংশ বেশি।