ষোলো আনা
যেন সবাই বঙ্গোপসাগরে আটকে আছি
ইমরান আলী
১৬ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার, ৮:২৯ পূর্বাহ্ন
ছবিঃ ইমরান আলী
হাজার হাজার মানুষ। চারদিকে কোনো বাড়িঘর নেই। গাছ নেই। ছায়া নেই৷ মানুষগুলো ট্রাকের ছাদে। যারা বাসে তারাও বসে থাকতে পারছে না। আবার নামতেও পারছে না। বাসের ভেতর নারী, শিশু বাচ্চারা বমি করছে। ক্ষুধায় কাতর। সবাই সবার কাছে থাকা খাবার ভাগাভাগি করে খেল শেষ দফা। যেন সবাই বঙ্গোপসাগরে আটকে আছি। বিপদে সবাই সবার স্বজন।
কি বিশ্বাস হয়না?
পুরুষরা রাস্তায় নেমে প্রস্রাব করছে। কিন্তু নারীরা কী করবে? সবার চোখে-মুখে ক্লান্তি। এদিকে রাত কেটেছে নির্ঘুম সবার। গরমে শিশু-বাচ্চারা বাসের ভেতর গগনবিদারি চিৎকার করছে। তাদের কান্না সইবার মতো না। আমার পায়ের উপর বমি করে দিলো এক নারী। কিছুই বলতে পারছি না। সে নারীও নিরুপায়। কাঠফাটা রোদ আহা! বাসের ভেতরই থাকতে পারি না। ভাবছেন এমনভাবে বলছি যেন আর কেউ জার্নি করে না। কিন্তু যা বর্ণনা দিলাম সড়কের অবস্থা তার চেয়ে সহস্রগুণ ভয়াবহ। জন্মের পর এমন বীভৎস ভ্রমণ আমি করিনি। সামনে কেউ যদি ভুল করে বলে, ঐ ছাড়ছেরে অমনি শতকণ্ঠে হইহই করে উঠছে। কিন্তু পরে দেখে গাড়ি যেখানে সেখানেই দাঁড়িয়েই।
ঈদের সময় কিছুটা চাপ থাকবে স্বাভাবিক কিন্তু তাই বলে এত! আমরা সহনশীল মানুষ। তবুও কিছু বলছি না। যুগে যুগে সব মানিয়ে নিচ্ছি। অবশেষে ২৩ ঘণ্টার ভয়াবহ যাত্রা শেষে কোনোরকম জান বাঁচিয়ে নাটোরে পৌঁছাই। আল্লাহ্ এমন বিপদ যেন শত্রুরও না হয়।