প্রথম পাতা
সরজমিন কুড়িগ্রাম
দুর্ভোগে বানভাসি মানুষ পাশে নেই কেউ
পিয়াস সরকার ও সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী (কুড়িগ্র
১৯ জুলাই ২০১৯, শুক্রবার, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
দুর্ভোগে বানভাসি মানুষ,আশ্রয় নিয়েছেন ঘরের চালে। ছবিটি কুড়িগ্রামের চিলমারী থেকে তোলা ছবি: জীবন আহমেদ
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমে অবনতির দিকে যাচ্ছে। বাড়ছে পানি। বাড়ছে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ। পানি বাড়তে বাড়তে ভেসে গেছে বাড়িঘর, ফসলি জমি। ঘরে পানি উঠায় অনেকে মাচায়, ঘরের চালায় আশ্রয় নিয়ে দিন-রাত পার করছেন। কেউ কেউ দূরে কোথাও সড়ক বা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যায় দুর্ভোগে পড়া মানুষ কোনো ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছেন না। তাদের খোঁজ নিতেও যাচ্ছে না কেউ। গতকাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। গত ৯ দিন ধরে চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছেন। ঘর-বাড়ি ভেসে যাওয়া মানুষ যে সড়কের ধারে আশ্রয় নিয়েছিলেন, গতকাল আচমকা ডুবে গেছে চিলমারীর সড়ক। এলাকাবাসীর ভাষ্য ১৯৮৮ বা ২০১৭ সালের বন্যাকেও হার মানিয়েছে এই বন্যা। তারা বলছেন, এলাকায় খাবার, পানি ও ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
ক্ষতি বেশি যে কারণে: খড়খড়ি ভট্টপাড়ার সুবেদ আলী। ঘুমিয়েছিলেন ঘরের অনেক নিচে পানি দেখে। হঠাৎ রাতের বেলা চিল্লাচিল্লি শুনে ঘুম ভাঙে। আর কিছু নেবার আগেই তলিয়ে যায় বাড়ি। তিনি বলেন, কিচু নিবার পাও নাই বাবা। সউগ গ্যাচে পানিত ভাসি। বাদোত উটচো। খায়া না খায়া আচো। কখনবা বাদ খানোও ভাঙি যায়।
এলাকাটি মুলতঃ ব্রক্ষ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর মাঝামাঝি স্থান। ফলে গজলডোবা বাঁধ ছেড়ে দেয়ায় হুরমুর করে ডুকেছে পানি। প্লবিত হয়েছে এলাকা। পানি এসেছে হালকা স্রোতের মত। আর হঠাৎ পানি আসায় পূর্ব প্রস্তুতির অভাবে ঘটেছে ব্যাপক ক্ষতি।
উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস: স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গতকাল সকাল থেকেই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন। সকাল থেকে ৯ জনকে উদ্ধার করেন তারা। চিলমারি শহরের হ্যালিপ্যাড। এই হ্যালিপ্যাডে বেঁধে রাখা হত এক প্রতিবন্ধী শিশুকে। পরিবারের লোকজন বাধ্য হয়ে বেঁধে রাখতেন শিশুটিকে। কারণ দিনের বেলা তাকে দেখার কেউ নেই। শিশুটির নাম সুরভী, বয়স ৬। কিন্তু হঠাৎ পানি উঠায় শিশুটির কাছে যেতে পারেননি পরিবারের কেউ। পানিবন্দি অবস্থায় স্রোতর মাঝে বাধা ছিল সে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে। ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ পরিচালনা করেন উদ্ধার কার্যক্রমটি। তিনি জানান, আমাদের কাছে ৯৯৯ এর মাধ্যমে তথ্য পাই। এরপর তাকে উদ্ধার করি। হ্যালিপ্যাড কাছে হওয়ায় শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। নয়ত শিকলে বাধা অবস্থায় ডুবে মারা যেত।
বন্যার পানিতে ভাসলো নব দম্পতির সংসার: সালেকা বেগম ও ইকবাল হোসেনের বিয়ে হয়েছে গত ঈদের ২ দিন পরে। আর বিয়ের আগেই ঋণ নিয়ে করেছেন কোন রকম মাথা গোজার ঠাঁই। তৈরি করেছিলেন নতুন আসবাবপত্র। কৃষক পরিবার। নব দম্পতি পরিবারের বাড়ি এখন পানির নিচে। শুন্য হাতে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে সড়কের পাশে অবস্থান নিয়েছেন তারা। শ্বশুর বাড়ি থেকে উপহার পেয়েছিলেন রঙ্গিন টেলিভিশন। সেই টিভিটাও পানির নিচে। হঠাৎ পানি উঠায় ২ টি গরু আর কিছু কাপড় চোপড় ছাড়া কিছুই নিতে পারেননি তারা। বৃদ্ধা মাকে নিয়ে অর্ধাহারে কাটছে তাদের দিন। এখন পর্যন্ত মেলেনি কোন সহায়তা। সাথে যে খাবার তা শেষ হয়ে যাবে ২ দিনের মাঝেই। সকলের কথা মহিলাদের জন্য চাই শৌচাগার। চারিদিকে পানি, তাদের প্রাকৃতিক কর্ম সারার কোন উপায় নেই।
৯ দিন ধরে ঘরের চালে নুর বানু: ভিজে গেছে সব কাপড়। পড়নে যে কাপড় ছিল, সেটা দিয়েই ৮ দিন ধরে বাস। লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছিলেন না। শরীর যে পুরা ভেজা। আর গায়ে দিয়ে রেখেছিলেন প্লাস্টিকের বস্তা। কোন রকম ঘরের চালে বসে দিনপার করছেন প্রত্যন্ত এলাকার বানভাসী নুর বানু। তার স্বামীর নাম রহিজল ইসলাম। পেশায় দিন মজুর। ভেলায় ভাসিয়ে রেখেছেন ২টি গরু আর ৪ টি ছাগল। নিজের খাওয়া নেই, খাওয়া নেই পশুগুলোরও।
ক্ষতি বেশি যে কারণে: খড়খড়ি ভট্টপাড়ার সুবেদ আলী। ঘুমিয়েছিলেন ঘরের অনেক নিচে পানি দেখে। হঠাৎ রাতের বেলা চিল্লাচিল্লি শুনে ঘুম ভাঙে। আর কিছু নেবার আগেই তলিয়ে যায় বাড়ি। তিনি বলেন, কিচু নিবার পাও নাই বাবা। সউগ গ্যাচে পানিত ভাসি। বাদোত উটচো। খায়া না খায়া আচো। কখনবা বাদ খানোও ভাঙি যায়।
এলাকাটি মুলতঃ ব্রক্ষ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর মাঝামাঝি স্থান। ফলে গজলডোবা বাঁধ ছেড়ে দেয়ায় হুরমুর করে ডুকেছে পানি। প্লবিত হয়েছে এলাকা। পানি এসেছে হালকা স্রোতের মত। আর হঠাৎ পানি আসায় পূর্ব প্রস্তুতির অভাবে ঘটেছে ব্যাপক ক্ষতি।
উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস: স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গতকাল সকাল থেকেই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন। সকাল থেকে ৯ জনকে উদ্ধার করেন তারা। চিলমারি শহরের হ্যালিপ্যাড। এই হ্যালিপ্যাডে বেঁধে রাখা হত এক প্রতিবন্ধী শিশুকে। পরিবারের লোকজন বাধ্য হয়ে বেঁধে রাখতেন শিশুটিকে। কারণ দিনের বেলা তাকে দেখার কেউ নেই। শিশুটির নাম সুরভী, বয়স ৬। কিন্তু হঠাৎ পানি উঠায় শিশুটির কাছে যেতে পারেননি পরিবারের কেউ। পানিবন্দি অবস্থায় স্রোতর মাঝে বাধা ছিল সে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে। ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ পরিচালনা করেন উদ্ধার কার্যক্রমটি। তিনি জানান, আমাদের কাছে ৯৯৯ এর মাধ্যমে তথ্য পাই। এরপর তাকে উদ্ধার করি। হ্যালিপ্যাড কাছে হওয়ায় শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। নয়ত শিকলে বাধা অবস্থায় ডুবে মারা যেত।
বন্যার পানিতে ভাসলো নব দম্পতির সংসার: সালেকা বেগম ও ইকবাল হোসেনের বিয়ে হয়েছে গত ঈদের ২ দিন পরে। আর বিয়ের আগেই ঋণ নিয়ে করেছেন কোন রকম মাথা গোজার ঠাঁই। তৈরি করেছিলেন নতুন আসবাবপত্র। কৃষক পরিবার। নব দম্পতি পরিবারের বাড়ি এখন পানির নিচে। শুন্য হাতে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে সড়কের পাশে অবস্থান নিয়েছেন তারা। শ্বশুর বাড়ি থেকে উপহার পেয়েছিলেন রঙ্গিন টেলিভিশন। সেই টিভিটাও পানির নিচে। হঠাৎ পানি উঠায় ২ টি গরু আর কিছু কাপড় চোপড় ছাড়া কিছুই নিতে পারেননি তারা। বৃদ্ধা মাকে নিয়ে অর্ধাহারে কাটছে তাদের দিন। এখন পর্যন্ত মেলেনি কোন সহায়তা। সাথে যে খাবার তা শেষ হয়ে যাবে ২ দিনের মাঝেই। সকলের কথা মহিলাদের জন্য চাই শৌচাগার। চারিদিকে পানি, তাদের প্রাকৃতিক কর্ম সারার কোন উপায় নেই।
৯ দিন ধরে ঘরের চালে নুর বানু: ভিজে গেছে সব কাপড়। পড়নে যে কাপড় ছিল, সেটা দিয়েই ৮ দিন ধরে বাস। লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছিলেন না। শরীর যে পুরা ভেজা। আর গায়ে দিয়ে রেখেছিলেন প্লাস্টিকের বস্তা। কোন রকম ঘরের চালে বসে দিনপার করছেন প্রত্যন্ত এলাকার বানভাসী নুর বানু। তার স্বামীর নাম রহিজল ইসলাম। পেশায় দিন মজুর। ভেলায় ভাসিয়ে রেখেছেন ২টি গরু আর ৪ টি ছাগল। নিজের খাওয়া নেই, খাওয়া নেই পশুগুলোরও।