প্রথম পাতা

স র জ মি ন ঢামেক

ডেঙ্গু রোগীর চাপে হিমশিম কর্তৃপক্ষ

মরিয়ম চম্পা

১৯ জুলাই ২০১৯, শুক্রবার, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন

বেলা ১২টা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় পুরুষ ওয়ার্ড ৬০১-এর করিডোর থেকে ভেতরের পুরোটাজুড়েই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। ওয়ার্ডের করিডোরের বেডে ৪৫ বছর বয়সী শামীম উদ্দিনের পাশেই শুয়ে আছেন তার স্ত্রী। ৪ দিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসকরা তাকে ডেঙ্গুর চিকিৎসা অনুযায়ী স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় সেবা দিচ্ছেন। তবে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছে না। ৬০২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন ছালাম। ২৮ বছরের যুবক ছালাম শুরুতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন জ্বর নিয়ে। আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই  চোখে ঝাপসা দেখছিলেন। পরবর্তীতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তার শরীর, হাত-পা অনেকটা ফুলে গেছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের রক্তে সাধারণত প্লাটিলেট কমে যায়। কিন্তু তার রক্তে প্লাটিলেট এখন পর্যন্ত ঠিক থাকলেও পরীক্ষায় তার ডেঙ্গু ধরা পড়েছে।
৫ম তলায় মহিলা ওয়ার্ডে তুলনামূলকভাবে রোগীর সংখ্যা পুরুষ ওয়ার্ডের চেয়ে কিছুটা কম। মেডিসিন ওয়ার্ড হওয়াতে এখানে সব ধরনের রোগীকেই ভর্তি করা হয়। ৫৮ বছর বয়সী রহিমা বেগম অনেকটা অচেতন অবস্থায় মেয়ের কোলে মাথা এলিয়ে ঘুমিয়ে আছেন। ছেলে মেয়ে আর নাতি নাতনি নিয়ে তার সংসার। কিন্তু গত দুই দিনের জ্বরে চেতনা হারিয়ে ফেলেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা কিছুটা ধীর গতিতে উন্নতি হচ্ছে। ৬ষ্ঠ তলার ৬০২ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স শাপলা বলেন, শুধুমাত্র বৃহস্পতিবার সকালেই ১৭ থেকে ১৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। সকালে রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও বিকালে রোগীর চাপ আরো বেড়ে যায়। এ সময়টাতে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী ভর্তি হয়। ইউনিট ৫-এ এ পর্যন্ত মোট ৯শ ৫৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। রোগীর সংখ্যা এতো বেশি যে ওয়ার্ডে ভর্তি দেয়ার পর যে রোগীরা আসেন তাদের ফ্লোরিং করতে হয়।

৬০১ নম্বর পুরুষ ওয়ার্ডের নার্স নাজমা বলেন, আমাদের এডমিশন ডে না। আক্রান্তরা আজ অন্য ওয়ার্ডে ভর্তি হচ্ছেন। এই ওয়ার্ডে ১৬ জুলাই ৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং ১৭ জুলাই ৭ জন। অনেক আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক রোগী মারা গেলেও এ ওয়ার্ডে সম্প্রতি কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো রোগীকেই ফিরিয়ে দেয় না। সব রোগীকেই ভর্তি নেয়া হয়। কিন্তু সিট যেহেতু কম তাই অনেক রোগীকে বাধ্য হয়ে বারান্দায় কিংবা মেঝেতে থাকতে হয়। খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে আসা বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে জ্বর চলে যাওয়ার পর অনেক সময় পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে দেখা যায়। ৫ম তলায় মহিলা ওয়ার্ডের দায়িত্বরত একজন নার্স বলেন, ১৭ই জুলাই সকাল ৮টা থেকে ১৮ জুলাই সকাল ৮টা পর্যন্ত ৯১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। কিছু কিছু রোগী সিরিয়াস হওয়ার পর হাসপাতালে আসেন। পরবর্তীতে তাদের আইসিইউতে পাঠানো হয়। রোগীরা চিকিৎসার পর যখন সুস্থ বোধ করে তখন নিজ দায়িত্বে চলে যায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status