বাংলাদেশ কর্নার

ধোনির ইঙ্গিত ধরে ফেলেছিলেন সাইফুদ্দিন

স্পোর্টস ডেস্ক

১৪ জুলাই ২০১৯, রবিবার, ৮:৫৪ পূর্বাহ্ন

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে উইকেটের পেছনে থেকে নিজ দলের বোলারদের  নানা ইঙ্গিত দেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। আর ক্রিজে ভারতীয় উইকেটরক্ষকের ইঙ্গিত ধরে ফেলেছিলেন টাইগার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ভারতীয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকাকে এমনটি জানান সাইফুদ্দিন নিজেই। সেদিন শেষ পর্যন্ত ব্যাট হাতে হার না মানা অর্ধশতক হাঁকান তিনি। ২২ বছর বয়সী অলরাউন্ডার ভারতের বিপক্ষে ৩৮ বলে অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলে দেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সে ম্যাচে বাংলাদেশ হারলেও ক্রিকেটবিশ্বের প্রশংসা কুড়ান সাইফুদ্দিন।
দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে-

ফেনী জেলার প্রতিকূল পরিকাঠামোকে হার মানিয়ে দেশের জার্সিতে বিশ্বমঞ্চে সাড়া ফেলে দিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। চলতি বিশ্বকাপে মোস্তাফিজুর রহমানের পরে তিনিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। সাত ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ১৩।

২২ বছর বয়সী অলরাউন্ডার ভারতের বিরুদ্ধে ৩৮ বলে অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলে দেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সে ম্যাচে বাংলাদেশ হারলেও ক্রিকেটবিশ্বে পরিচিত হয়ে ওঠেন সাইফুদ্দিন। যে জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামিদের সামলাতে রাতের ঘুম চলে গিয়েছিল অনেক বড় দলের ব্যাটসম্যানের। তাঁদের বিরুদ্ধে ৯টি চার মেরে এই অমূল্য ইনিংস গড়েন তিনি।

সে দিন আরও একটি স্বপ্নপূরণ হয়েছিল তরুণ ক্রিকেটারের। মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে খেলার স্বপ্ন। ফেনী থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকারে সাইফুদ্দিন বললেন, ‘ধোনি কেনো অধিনায়ক হিসেবে এত সফল, তা জানার চেষ্টা করতাম ছোট থেকেই। বুঝতাম, উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে আঙুল ও হাতের মাধ্যমে বোলারকে কিছু একটা নির্দেশ দেয়। ভারতের বিরুদ্ধে ব্যাট করার সময় প্রত্যেক বলের আগে এক বার ধোনির দিকে তাকাতাম। লক্ষ্য করতাম হাত দিয়ে ঠিক কী ইশারা করে!’ কিছু ধরতে পারলেন? সাইফুদ্দিনের উত্তর, ‘অবশ্যই। হার্দিক বল করার সময় ধোনিকে দেখছিলাম বারবার বুকে হাত দিচ্ছে। তার পরের বলটিই বাউন্সার করছে হার্দিক। তখনই বুঝলাম, এটা বাউন্সারের নির্দেশ। কখনও দেখছিলাম বুমরাকে পায়ের দিকে আঙুল দেখাচ্ছে। পরের বলেই ইয়র্কার ধেয়ে আসছে। এ ভাবেই একাধিক ইঙ্গিত দিয়ে ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে ধোনি।’

সাইফুদ্দিনের বাবা আব্দুল খালেক পুলিশে চাকরি করেন। চাইতেন ছেলে পড়াশোনা করে ভালো চাকরি করুক। কিন্তু ছেলের স্বপ্ন যে কখনওই ১০টা-৫টার একঘেয়ে জীবনে আবদ্ধ থাকতে রাজি ছিল না। শাহিন অ্যাকাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপেনার হিসেবে প্রচুর রান করেছিলেন। সেখান থেকেই উত্থান। তার পরে অনূর্ধ্ব-১৬ বিভাগে চট্টগ্রামের হয়ে ৫৪৬ রান ও ২৪ উইকেট নিয়ে জাতীয় ক্রিকেটে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। সেখান থেকে আর ঘুরে দেখতে হয়নি।
কিট্‌স কেনার জন্য বাবার কাছে হাত পাততেন না। ‘খেপ ক্রিকেট’ খেলে ম্যাচ প্রতি চারশো টাকা করে পেতেন। একশো টাকা হাত খরচের জন্য রেখে তিনশো টাকা করে জমাতেন। তা দিয়েই ক্রিকেটের সরঞ্জাম কিনে আনতেন। সাইফুদ্দিন বলছিলেন, ‘এ ধরনের ক্রিকেট শুধু অর্থ সংগ্রহের রাস্তাই দেখায়নি, সঙ্গে গড়ে তুলেছে লড়াকু মনোভাবও।
যাদের হয়ে খেলতাম, তারা টাকা দিতেন ঠিকই, কিন্তু পারফর্ম করতে না পারলে কটূ মন্তব্যও শুনতে হতো।’
বিশ্বকাপে যে ১৩ উইকেট পেয়েছেন, তার মধ্যে সেরা কোনটি? ‘অবশ্যই ক্রিস গেইলের উইকেট। তা ছাড়া প্রস্তুতি ম্যাচে বিরাট কোহলিকে বোল্ড করে সব চেয়ে খুশি হয়েছিলাম। ওর মতো ব্যাটসম্যানকে আউট করা যে কোনো বোলারের কাছেই স্বপ্ন।’

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে নিয়মিত খেললেও সাইফুদ্দিনের স্বপ্ন আইপিএলে খেলা। কোন দলে খেলতে চাইবেন? তাঁর উত্তর, ‘সব চেয়ে খুশি হবো ধোনির নেতৃত্বে খেলার সুযোগ পেলে। তা না হলে আমার প্রিয় শহর কলকাতার হয়ে খেলতে চাই। শাকিব ভাইয়ের মতোই এপার বাংলার ভালোবাসাও কুড়িয়ে নিতে চাই।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status