বাংলারজমিন

ভারি বর্ষণে ১৫ জেলায় বন্যা, দুর্ভোগ

বাংলারজমিন ডেস্ক

১৩ জুলাই ২০১৯, শনিবার, ৮:৩৩ পূর্বাহ্ন

ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলে দেশের প্রায় ১৫  জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই ডুবছে ওই সব জেলার নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। বন্যাদুর্গত এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অঘোষিত ছুটি চলছে। বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। এ ছাড়া বন্যা আক্রান্ত হতে পারে এমন জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। যেসব জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে সেগুলো হলো- কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, ফেনী, গাইবান্ধা, বান্দরবান, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জ, নীলফামারী, জামালপুর ও ভোলা। বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টে-

সিলেটে বিপদসীমার উপর পানি
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে: সিলেটের পূর্বে ভারতের মেঘালয়ের বিস্তীর্ণ পাহাড়ি এলাকা। শ’শ’ মাইল পাহাড়ি জনপদে বৃষ্টি হলেই পানি অপসারণের একমাত্র পথ সিলেট ও সুনামগঞ্জের সুরমা ও কুশিয়ারা। রয়েছে সারিসহ ছোট ছোট আরো শাখা নদী। আর মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের উজানে আসামের করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। এসব এলাকার পানির খোয়াই, সোনাই দিয়ে প্রবেশ করে। আবহাওয়া বার্তা জানান দিয়েছে- ভারতের মেঘালয় ও আসামের ওই এলাকাগুলোতে ভারি বর্ষণ হচ্ছে। ফলে সিলেট বিভাগ দিয়ে উজানের ঢল আসছে। প্রবল বেগে আসা ঢলে এরই মধ্যে সিলেটের নদ-নদী উপচে গেছে পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র মতে- সিলেট বিভাগের সবক’টি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেটের কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া, সিলেট নগরে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার, অমলসীদে কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার দিয়ে উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সিলেটের প্রধান প্রধান নদীগুলোই নয়, শাখা নদীর পানিও বিপদসীমা ছাড়িয়ে গেছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বিয়ানীবাজারের শেওলায় বিপদসীমা পাড়ি দেয় ১২ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। শেরপুরে বিপদসীমার পাড়ি দেয় ৮ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া- জৈন্তাপুরে সারি নদীর পানি বিপদসীমা পেরিয়ে ১১ দশমিক ৬১ সেন্টিমিটার, কানাইঘাটে লোভাছড়ার পানি বিপদসীমা পাড়ি দেয় ১৪ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। নদ-নদী উপচে পানি ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। হাওর তলিয়ে গেছে দুইদিন আগে। সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাটের শতাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। সিলেটের সঙ্গে সালুটিকর হয়ে গোয়াইনঘাটের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
লালমনিরহাটে ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি
লালমনিরহাট প্রতিনিধি: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও চার দিনের ভারি বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে। স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গত চারদিনের ভারি বৃষ্টি। এতে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা ও ধরলা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। এর সঙ্গে গত বুধবার দিনগত মধ্যরাত থেকে তিস্তার পানিপ্রবাহ বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভারি বৃষ্টিতে কিছু পরিবার গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নৌকা বা ভেলা ছাড়া চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ধেয়ে আসছে পাহাড়ি ঢল। এতে বড় সমস্যায় পড়েছে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা। চারদিকে অথৈ পানির কারণে গবাদি পশুপাখি নিয়ে অনেকটা বিপাকে চরাঞ্চলের খামারি ও চাষিরা। উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট এ বন্যায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, কুলাঘাট ও মোগলহাট ইউনিয়নের তিস্তা ও ধরলার নদীর চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এসব ইউনিয়ের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
যমুনায় বাঁধে ভাঙন
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে সিরাজগঞ্জে প্রতিদিনই যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীগুলোতেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের ফসলি জমি তলিয়ে যাচ্ছে। কাজীপুর ও এনায়েতপুরে ভেঙে যাচ্ছে মাটির বাঁধ। যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার জানিয়েছেন। যমুনা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের কবলে পড়েছে কাজীপুর উপজেলার বাহুকা, সিংড়াবাড়ি, বাঐখোলা ও পাটগ্রাম এলাকা। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বাঐখোলা বাঁধসহ এসব এলাকার বিস্তীর্ণ জনপথ। পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি ভাঙন অব্যাহত থাকায় হুমকির মধ্যে রয়েছে গান্দাইল, রতনকান্দি ও শুভগাছা ইউনিয়নের বাহুকা, বাঐখোলা, পূর্ব খুশকিয়া, পাটাগ্রাম, কুড়ালিয়া, সিংড়াবাড়ি, চিলগাছাসহ নদীতীরবর্তী ৮ গ্রামের লাখো মানুষ।
চরফ্যাশনে ১৫০ গ্রাম প্লাবিত
চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি: অতিরিক্ত ভারি বর্ষণে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের ১৫০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে কৃষকের বীজতলা ও শাকসবজির খামার। ভেসে গেছে পুকুরের ও ঘেরের মাছ। এতে কৃষকের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। কৃষক দিশাহারা হয়ে গৃহপালিত গবাধি পশু নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিলেও স্থায়ী ভালো পরিবেশ নেই সেখানেও। ফলে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে কৃষকদের মাঝে। প্লাবিত হওয়া ইউনিয়নগুলো হচ্ছে- চরমাদ্রাজ, আছলামপুর, ওসমানগঞ্জ, আবদুল্লাহপুর, আমিনাবাদ, নীলকমল, নূরাবাদ, আহাম্মদপুর, চর কলমী, মুজিব নগর, নজরুল নগর, চর মানিকা, রসুলপুর, হাজারীগঞ্জ, এওয়াজপুর, ঢালচর, কুকরী মুকরী, জিন্নাগড় ও চরফ্যাশন পৌরসভাসহ বেশ কিছু গ্রাম।
বান্দরবানে পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ
বান্দরবান প্রতিনিধি: বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। বৃহস্পতিবার বিকালের পর থেকে পানি বেড়ে যাওয়ায় সদর উপজেলাসহ নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা, আলীকদম, থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। টানা ৭ দিনের ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগসহ চারদিন ধরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বন্ধ হয়ে পড়েছে সারা দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ। এর ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। জানা গেছে, বান্দরবান জেলা শহরের আর্মি পাড়া, ইসলামপুর, শেরে বাংলা নগর, উজানি পাড়া, মেম্বার পাড়া, ওয়াপদা ব্রিজ এলাকা, কাশেম পাড়া, বালাঘাটা, কালাঘাটা, ক্যাচিংঘাটা, বনানী স মিল এলাকা, হাফেজঘোনাসহ সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে লামা পৌরসভার অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রাঙামাটির সঙ্গেও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
কুড়িগ্রামে ভাঙনের মুখে বাঁধ
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে: কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সারডোব এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে গত বছর মেরামত করা অংশের কয়েকটি স্থানে ধস নেমেছে। বাঁধের ৩-৪ ফুট অংশ অবশিষ্ট আছে। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে। বাঁধটি ভেঙে গেলে পানি ঢুকে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হবার পাশাপাশি ফসলহানি ও নদী ভাঙনের কবলে পড়ার আশঙ্কা করছেন নদী তীরের মানুষ। কয়েক হাজার মানুষ ঝুঁকির মুখে থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা পরিদর্শন না করায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এলাকাবাসীর মনে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বাঁধটি রক্ষায় বালুর বস্তা ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিগগিরই শুরু করা হবে কাজ। সারডোব গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান, বাঁধটি ভেঙে গেলে হলোখানা, রাঙ্গামাটি, চর কাগজিপাড়া, ভাঙামোড়, খোঁচাবাড়ি, চর বড়াইবাড়ি, লক্ষ্মীকান্ত, দ: রাঙ্গামটি, মণ্ডলপাড়াসহ প্রায় ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হবে।
নেত্রকোনায় দুই শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি
নেত্রকোনা প্রতিনিধি: ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার দুর্গাপুর, বারহাট্টা ও কলমাকান্দার প্রায় ১৫টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে কলমাকান্দা উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রায় সবকটি। বন্যায় তিন উপজেলায় অন্তত দুই শতাধিক গ্রামে প্রায় ৫০ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকছে। গ্রামীণ বেশ কয়েকটি সড়ক পানির নিচে থাকায় উপজেলা ও জেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এলাকাবাসী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার থেকে মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাতে জেলার প্রধান নদী কংস, সোমেশ্বরী, ধনু, উব্দাখালিতে পানি বিপদসীমার ওপরে রয়েছে। কলমাকান্দার বড়খাপন, রংছাতি, লেঙ্গুরা, খারনৈ, নাজিরপুর, পোগলা, কৈলাটি ও সদর, দুর্গাপুরের গাওকান্দিয়া, কুল্লাগড়া, বাকলজোড়া, কাকৈরগড়া ও বিরিশিরি ইউনিয়নের আংশিক এবং বারহাট্টার রায়পুর ও বাউসী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে করে অন্তত ৫০ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। স্কুল, মাদ্রাসায় পানি ঢুকছে। কলমাকান্দার পাঁচগাও, লেঙ্গুরা, বড়খাপন, চারালকোনাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামীণ বাজার পানির নিচে রয়েছে। এ ছাড়া বড়খাপন, চানপুর, ধিতপুর, পাঁচকাঠা, পালপাড়া, কলেজ রোডসহ বেশ কয়েকটি গ্রামীণ পাকাসড়ক পানির নিচে থাকায় মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে দুর্গাপুরের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তাহের ভূঁইয়া জানান, ওই উপজেলার ২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।  
প্লাবিত হচ্ছে চিলমারীর নিম্নাঞ্চল
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে তা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে সঙ্গে জনজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যস্ত। জানা গেছে, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার পুটিমারী কাজলডাঙ্গা, কাঁচকোল, সোনারীপাড়া, রমনাঘাট, দক্ষিণ খাউরিয়া, খেরুয়ারচর, ছালিপাড়া, যুগ্নিদহ, খামার বাঁশপাতার, বৈলমনদিয়ার খাতা, শাখাহাতি, মাঝিপাড়া, পাত্রখাতাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ছাতকে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ছাতক উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শহরের সঙ্গে গ্রামের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বাড়ির আঙ্গিনাসহ নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে। অন্তত অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অঘোষিতভাবে বন্ধ হয়ে পড়েছে। টানা বর্ষণের কারণে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশে বন্যার পানি প্রবেশ করায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে দিচ্ছেন না অভিভাবকরা। ইতিমধ্যেই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য কোনো আশ্রয়কেন্দ্র খোলার খবর এখনো পাওয়া যায়নি। ৫-৬ দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের মানুষ বর্তমানে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status