এক্সক্লুসিভ

বিরোধী নেতাদের গণগ্রেপ্তার

সুদানে অসহযোগ

মানবজমিন ডেস্ক

১০ জুন ২০১৯, সোমবার, ৮:৪৫ পূর্বাহ্ন

সুদানে অন্তর্বর্তী সামরিক কাউন্সিলের (টিএমসি) বিরুদ্ধে গণঅসহযোগ আন্দোলন ডেকেছে প্রধান বিরোধী গ্রুপগুলো। জবাবে সামরিক কাউন্সিল গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে সুদানিজ প্রফেশনালস এসোসিয়েশন (এসপিএ)। তারা বলেছে, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ডাকা ওই অসহযোগ আন্দোলনকে সামনে রেখে ব্যাংক, বিমানবন্দর ও বিদ্যুৎ বিভাগের বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কর্মকর্তা ও কর্মজীবীদেরও হুমকি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ- এমন দাবি করেছে এসপিএ। তবে, এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করে নি সামরিক কাউন্সিল। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

কয়েকদিন আগে রাজধানী খার্তুমে সামরিক বাহিনীর দমনপীড়নে নিহত হয়েছেন কয়েক ডজন মানুষ। এরপর রোববার থেকে সেখানে অসহযোগ আন্দোলন ডেকেছে গণতন্ত্রের পক্ষের প্রচারণাকারী গ্রুপগুলো। এপ্রিলে এ দেশটিতে ৩০ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী। তারা ক্ষমতা দখল করে বেসামরিক প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতিতে। কিন্তু সোমবার খার্তুমে অবস্থান ধর্মঘটের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী যে নিপীড়ন চালিয়েছে তাতে তাদের এই প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখতে পারছে না গণতন্ত্রপন্থিরা। সেনাবাহিনী এরই মধ্যে যে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে তাও প্রত্যাখ্যান করেছে তারা। সরকার গ্রেপ্তার করেছে বিরোধী দলের তিন জন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে। তারাই সেনাবাহিনীর সঙ্গে মধ্যস্থতা চেষ্টায় জড়িত ছিলেন।

খার্তুমের সর্বশেষ অবস্থা
রাজধানীতে বেশিরভাগ অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শহরের ট্রাফিক লাইটগুলো জ্বলছে। খার্তুম থেকে বিবিসির সাংবাদিক ক্যাথেরিন বারুহাঙ্গা এ খবর দিচ্ছেন। এতে বলা হয়েছে, রাজধানী খার্তুমের বেশিরভাগ এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে গুলি বিনিময়ের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয়া নেতারা লোকজনকে বাড়িতে অবস্থান করার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, কোনো কাজে যোগ দেবেন না। এটা হলো গণঅসহযোগ। তাদের যুক্তি সেনাবাহিনী যে নৃশংসতার সঙ্গে দমনপীড়ন চালাচ্ছে তাতে সাধারণ বিক্ষোভ চালানো আর সম্ভব নয়। ফলে এসপিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, রোববার থেকে শুরু হচ্ছে গণঅসহযোগ। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে যদি বেসামরিক প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা দেয়া হয় শুধু তাহলেই এই অসহযোগ আন্দোলন বন্ধ হবে। অসহযোগ আন্দোলন হলো শান্তিপূর্ণ একটি কর্মসূচি। এটি হলো বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র, যা শেষ অবলম্বন হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

তাদের এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো এমন একটি কার্যকর অচলাবস্থা সৃষ্টি করা, যার অধীনে সামরিক কাউন্সিল দেশ চালাতে ব্যর্থ হয়।

বিরোধী নেতাদের গ্রেপ্তার
ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবিই আহমেদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক করেন বিরোধী রাজনীতিক মোহামেদ আসমত। এর পর পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার সকালের দিকে গ্রেপ্তার করা হয় এসপিএলএম-এন গ্রুপের নেতা ইসমাইল জালাব ও তার মুখপাত্র মুবারক আরদোলকে। তাদের কোথায় রাখা হয়েছে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই গ্রেপ্তার অভিযান এটাই প্রমাণ করে যে- সামরিক বাহিনী মধ্যস্থতা প্রক্রিয়াকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না।

বুধবার খার্তুমে নিজের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এসপিএলএম-এনের উপ-প্রধান ইয়াসির আরমানকে। ওমর আল বশিরের পতনের পর তিনি নির্বাসন থেকে দেশে ফিরেছিলেন।

আসমত ও জালাব দু’জনেই ছিলেন অ্যালায়েন্স ফর ফ্রিডম অ্যান্ড চেঞ্জের শীর্ষস্থানীয় দুই নেতা। বিরোধী নেতা, প্রতিবাদী জনতা ও বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর কাছে অ্যালায়েন্স ফর ফ্রিডম অ্যান্ড চেঞ্জ হলো একটি আমব্রেলা সংগঠন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status