বাংলাদেশ কর্নার

তিনিই মাহমুদউল্লাহ

মারুফ কিবরিয়া

৩ জুন ২০১৯, সোমবার, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এক ভরসার নাম। বাংলাদেশ ক্রিকেটের আস্থার প্রতীক। যিনি যেকোনো অবস্থায় প্রতিপক্ষের কাছে ত্রাস হয়ে ওঠেন। মুশফিক-সাকিবের অনবদ্য ব্যাটিং নৈপুণ্যে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে বড় স্কোরের সম্ভাবনা জেগেছিল। কিন্তু হঠাৎ রানের গতি কমে যায় ইমরান তাহিরের জোড়া আঘাতে। টাইগারদের তিনশ’র বেশি রানের আশার প্রদীপও যেন নিভু নিভু করছিল। কিন্তু না, ভক্ত সমর্থকরা হতাশ হননি একটুও। কারণ আজও সেই আস্থার প্রতীক দলের প্রয়োজনে নিজেকে মেলে ধরেছেন। তিনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের সব চাপ সামলে শেষ মুহূর্তে দলকে উপহার দেন অন্যরকম এক ইনিংস। শুধু তাই নয়, মাহমুদউল্লাহর অপরাজিত ৪৬ রানের ওই ইনিংসের কল্যাণে ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের চূড়ায় পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। একই সঙ্গে এই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ স্কোর সংগ্রকারীর দল হিসেবে বাংলাদেশের নাম লেখানো হয় ওই মাহমুদউল্লাহর ঝড়ো ব্যাটিংয়েই। মাত্র ৩৩ বল খেলে তার এই ইনিংসে আসে তিনটি চার ও একটি বড় ছয়ের মার। যার ফলে বাংলাদেশের স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩০ রানে।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এমনই। দলের যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে উজাড় করে খেলেন। ব্যাট হাতে নিজেকে প্রমাণ করেন তিনি বার বার। গত বছর নিদহাস ট্রফির অঘোষিত সেমিফাইনালেও তাই করে দেখিয়েছেন তিনি। শেষ ওভারের মাত্র তিন বলেই মাহমুদউল্লাহর ঝড়ো ব্যাটিং লঙ্কা বধ করতে সক্ষম হয়েছিল টাইগাররা। এখানেই শেষ নয়, রিয়াদের গল্প।
সেঞ্চুরিয়নে তার করা ১০৩ রানের অনবদ্য ইনিংসে ভর করে ২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচ ছাড়া যেসব ম্যাচে তিনি ব্যাট হাতে ভালো করেছিলেন সেখানে অন্য কেউ নায়ক বনে গেছে। তাকে হতে হয়েছে সাইড নায়ক। এবার বিশ্বকাপে তিনি পারবেন কী বাংলাদেশের নায়ক হতে? বড় ম্যাচের তারকা খ্যাত সাইলেন্ট কিলার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ঘিরে ভক্ত-সমর্থকদের প্রত্যাশাও কম নয়।
মাহমুদউল্লাহর জন্ম ময়মনসিংহে। সেখানেই তার ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয়। ২০০০ সালে তিনি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টে সুযোগ পান। এরপর ২০০৪ সালে তিনি ঘরের মাঠে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও খেলেন। একই বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার অভিষেক হয় বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে। ২০০৫-০৬ মৌসুম থেকে নিয়মিত ক্লাব ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন।
১৯ বছর বয়সে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে তার অভিষেক হয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দলের বিপক্ষে তার অভিষেক ম্যাচে ৫৫ ও ৪২ রান করেন। ২০০৭ সালের জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার ওয়ানডে অভিষেক হয়। অভিষেক ম্যাচে বল হাতে তিনি ২ উইকেট নেন। আর ব্যাট হাতে করেন ৩৬ রান। অভিষেক ম্যাচে তার পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট হয়ে বাংলাদেশের কেনিয়া সফরেও তাকে রাখা হয় এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলেও সুযোগ দেয়া হয়। ২০০৮ সালে তিনি দল থেকে বাদ পড়লেও ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করে আবার জাতীয় দলে ডাক পান।
ওয়ানডেতে ৭ নম্বরে ব্যাটিং করে তিনি অনেক রান করেছেন। ২০১১ বিশ্বকাপে শফিউল ইসলামকে নিয়ে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। বিশ্বকাপের পর তাকে সহ-অধিনায়ক করা হয়েছিল।
এরপর ২০১৪ সালটি তার ভালো যায়নি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও হাসেনি তার ব্যাট। তবে ২০১৫ সালে তিনি নিজেকে ফিরে পান। সে কারণে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পান। ২০১৫ বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি (১০৩) হাঁকিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে তোলেন বাংলাদেশকে। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন ১২৮ রান। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করেন তিনি। বিশ্বকাপের সাত ইনিংসে ৩৬৫ রান করেছিলেন তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status