শিক্ষাঙ্গন

শাবিতে দেশের প্রথম পায়ে হাঁটা রোবট উদ্ভাবন

শাবি প্রতিনিধি

২০১৯-০৪-২৩

দেশের প্রথম পায়ে হাঁটা রোবট উদ্ভাবন করেছেন শাজলালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) একদল শিক্ষার্থী। গত সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে ‘লি’ নামে রোবটটি সবার সামনে উন্মুক্ত করা হয়। সামাজিক রোবট ‘রিবো’ উদ্ভাবনের পর এবার ‘লি’ নামে পায়ে হাঁটা রোবট উদ্ভাবন করে শাবিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে একদল শিক্ষার্থী। শাবির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের প্রভাষক নওশাদ সজীবের নেতৃত্বে ‘ফ্রাইডে ল্যাব’ নামে পাঁচ জনের একটি টিম এই রোবটটি উদ্ভাবন করেন। এটি দেশের প্রথম পায়ে হাঁটা রোবট বলে দাবি করছেন উদ্ভাবকবৃন্দ। রোবট ‘লি’ এর বিষয়ে নওশাদ সজীব জানান, বাংলাদেশে তৈরি হিউমেনয়েড রোবটটি দেখতে মানুষের মত এবং এর উচ্চতা ৪ ফুট ১ ইঞ্চি  (১২৬ সেমি)। এটির প্রধান বৈশিষ্ট্য এটি মানুষের মতো হাঁটতে পারে, বাংলায় কথা বলতে পারে, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে যে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। এটির ওজন ৩০ কেজি। বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশনের ইনভেশন ফান্ডের ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ রোবটটি তৈরিতে সময় লেগেছে তিন বছর। তিনি আরও জানান, ফ্রাইডে ল্যাবের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আছেন জনপ্রিয় লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। গত ২০শে এপ্রিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এমপি রোবটটি উদ্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শাবি’র কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম, সিএসই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. জহিরুল ইসলাম প্রমুখ। সে সময় রোবটটি প্রতিমন্ত্রীকে ডান হাত উঁচু করে স্যালুট দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করে এবং হেঁটে দেখায়। টিমের সদস্য মেহেদী হাসান রুপক বলেন, আইসিটি ডিভিশন থেকে দশ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যদি আমাদেরকে সহযোগিতা করা হয় তাহলে আরও ভালো মানের রোবট তৈরি করতে পারবো। ‘আমিসু’ বিশ্বের অন্যতম একটি ইন্টিলিজেন্ট রোবট যেটি ভালোভাবে হাঁটতে পারে। এটি কিনতে গেলে ২৫ কোটি টাকা খরচ হবে। আমাদেরকে যথেষ্ট সহযোগিতা করা হলে আমরা এমন রোবট তৈরি করতে পারবো।’ আরেক সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শাবিতে তৈরি আগের রোবট ‘রিবো’ এর সাথে বর্তমান ‘লি’ এর পার্থক্য হচ্ছে লি হাটতে পারি। রোবটকে হাঁটানোর জন্য অনেক দামি মোটর প্রয়োজন। কিন্তু আমরা কম বাজেট পেয়েছি। আরও বাজেট পেলে উন্নত মানের রোবট তৈরি করতে পারবো।’
ফ্রাইডে ল্যাবের সদস্যবৃন্দ: শাবির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের প্রভাষক নওশাদ সজীব, আর্কিটেকচার বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রুপক, ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাইফুল ইসলাম, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মোহাম্মদ সামিউল হাসান এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং জিনিয়া সুলতানা জ্যোতি। পাঁচজন টিম সদস্যের বাহিরে গত তিন বছর সাজিদ, শান্ত, খাইরুল, শোভন, সোহান, জান্নাতসহ আরও অনেকে কাজ করেছে বলে জানান ফ্রাইডে ল্যাবের সদস্যবৃন্দ।
‘লি’র প্রধান বৈশিষ্ট্য: মানুষের মত দুই পায়ে হাঁটতে পারে। বাংলা ভাষা বুঝতে পারে এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজিন্সের মাধ্যমে মানুষের কথার উত্তর দিতে পারে। ফেস রিকগনিশনের মাধ্যমে মানুষকে মনে রাখতে পারে। হ্যান্ডশেক, নাচা, স্যালুটসহ বিভিন্নরকম অঙ্গভঙ্গি করতে পারে। মুখে মানুষের মত চোখ, চোখের পাতা, ঠোঁট প্রভৃতির মাধ্যমে ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন করতে পারে।
নামকরণ: বাংলা স্বরবর্ণ থেকে হারিয়ে যাওয়া একটি লিপি হল ‘লি’ যা দেখতে ৯-এর মতো ছিল। এ থেকেই নামকরণ করা হয়েছে রোবটটির। রোবটটির নামকরণ করেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিন সুলতানা।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status