দেশ বিদেশ

রেটিংয়ে অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে ঋণ নয়- গভর্নর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১৮ জানুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার, ৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, বর্তমান সময়ের শিল্প খাতের বৈশিষ্ট্যে দ্রুত পরিবর্তনশীলতার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ঋণগ্রহীতার সক্ষমতা মূল্যায়নে ব্যাংকের দক্ষতা বাড়াতে নতুন একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী রেটিংয়ে অযোগ্য হলে কোনো গ্রাহক বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়া যাবে না। গতকাল ইন্টারনাল ক্রেডিট রিস্ক রেটিং সিস্টেম (আইসিআরআর) নীতিমালা উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে নীতিমালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন গভর্নর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, আশা করি এই নীতিমালার বাস্তবায়ন হলে খেলাপি ঋণ কমে আসবে। পাশাপাশি কমে আসবে ব্যাংক খাতের ঋণ ঝুঁকিও। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল খেলাপি কমাতে যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা পরিপালনেও সহায়ক ভূমিকা রাখবে এই নীতিমালা। নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলো এখন থেকে প্রত্যেক ঋণগ্রহীতার একটি রেটিং করবে এবং এ সংক্রান্ত তথ্যভাণ্ডার তৈরি করবে। এ রেটিংয়ে পরিমাণ ও গুণগত উভয় ধরনের সক্ষমতার মূল্যায়ন থাকবে। মূল্যায়নের ভিত্তিতে গ্রাহককে চার শ্রেণিতে বিভাজন করবে ব্যাংকগুলো। কোনো গ্রাহক ‘চমৎকার’ (এক্সিলেন্ট) বা ‘ভালো’ (গুড) রেটিং পেলে ব্যাংক তাকে অর্থায়ন করতে পারবে। ‘প্রান্তিক’ (মার্জিনাল) রেটিংধারী গ্রাহককে পুরনো ঋণ নবায়ন বা নতুন করে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তবে ‘অগ্রহণযোগ্য’ রেটিংধারীকে কোনো পরিস্থিতিতেই নতুন ঋণ দিতে পারবে না ব্যাংকগুলো, যদি না আগের ঋণ শতভাগ নগদ পরিশোধ হয় অথবা জামানত দিয়ে ঋণটি আচ্ছাদন করা হয়। ‘অগ্রহণযোগ্য’ (আনএকসেপ্টেবল) রেটিংভুক্ত গ্রাহকের আগের ঋণ সর্বোচ্চ দু’বার নবায়ন বা বর্ধিত করা যাবে।  
নীতিমালায় বলা হয়, রেটিং করার ক্ষেত্রে একটি পার্টি বা গ্রাহকের পরিমাণগত সক্ষমতায় ৬০ শতাংশ নম্বর এবং গুণগত সক্ষমতায় ৪০ শতাংশ নম্বর থাকবে। পরিমাণগত সক্ষমতা সূচকে ৬০ নম্বরের মধ্যে মোট গৃহীত ঋণ ও আর্থিক সক্ষমতায় ১০, চলতি দায় ও তরল সম্পদে ১০, মুনাফার সক্ষমতায় ১০, সুদ পরিশোধের সক্ষমতা ও নগদ প্রবাহের ওপর ১৫, পরিচালনগত দক্ষতায় ১০ এবং ব্যবসার মানের উপর পাঁচ নম্বর থাকবে।
এছাড়া গুণগত সক্ষমতায় ৪০ নম্বরের মধ্যে কার্যদক্ষতার আচরণে (পারফরম্যান্স বিহেবিয়ার) ১০, ব্যবসা ও খাত ঝুঁকিতে সাত, ব্যবস্থাপনা ঝুঁকিতে সাত, জামানত ঝুঁকিতে ১১, সম্পর্ক ঝুঁকিতে তিন, পরিপালন ঝুঁকিতে দুই নম্বর থাকবে।
এই রেটিংয়ে কোনো গ্রাহক ৮০’র বেশি নম্বর পেলে তাকে ‘চমৎকার’, ৭০-এর বেশি এবং ৮০’র কম নম্বর পেলে ‘ভালো’, ৬০-এর বেশি এবং ৭০-এর কম পেলে ‘প্রান্তিক’ এবং ৬০-এর নিচে নম্বর পেলে ‘অগ্রহণযোগ্য’ রেটিং দেয়া হবে। তবে কোনো গ্রাহক গুণগত রেটিংয়ে যত নম্বরই পাক না কেন, পরিমাণগত রেটিংয়ে ৫০ শতাংশ নম্বর না পেলে তাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ রেটিং দেয়া হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী এখন থেকে নতুন ঋণ, ঋণ নবায়ন ও বিদ্যমান ঋণ বর্ধিতকরণের প্রস্তাবের ক্ষেত্রে অবশ্যই এ রেটিং সম্পন্ন করতে হবে ব্যাংকগুলোকে। এ রেটিং পদ্ধতিটিকে ফলপ্রসূ করার জন্য কোন কোন খাতের গ্রাহকের রেটিং করতে হবে, তার কিছু খাত-উপখাত নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ভোক্তাঋণ, ৫০ লাখ টাকার কম ঋণ আছে- এমন ক্ষুদ্রশিল্প প্রতিষ্ঠান, স্বল্পমেয়াদি কৃষিঋণ, ক্ষুদ্রঋণ, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বীমা কোম্পানিকে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে এ রেটিং অনুসরণ করতে হবে না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status