শেষের পাতা
নি র্বা চ নী হা ল চা ল টাঙ্গাইল ৫
আলোচনায় মুনির, মুরাদ লড়াই আওয়ামী লীগ-বিএনপির
মাহমুদ কামাল, টাঙ্গাইল থেকে
২০১৮-১১-০২
টাঙ্গাইল-৫ সদর আসনে এবারও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কিন্তু আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন পীরজাদা শফিউল্লাহ আল মুনির ও মুরাদ সিদ্দিকী। শফিউল্লাহ আল মুনীর নীড় খুঁজে পেয়েছেন জাতীয় পার্টিতে। মুরাদ সিদ্দিকী আপাতত নীড়হারা। কিন্তু নির্বাচনের মাঠে এই দুই প্রার্থী সবচেয়ে বেশি তৎপর। ইনডেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের পীর মরহুম ইয়াকুব আলীর সন্তান মুনির। তিনি এই আসন থেকে নির্বাচনের লক্ষ্যে বছর দেড়েক আগে থেকে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। তবে তিনি আওয়ামী লীগ না বিএনপি’র মনোনয়নের লড়বেন তা নিয়ে ছিল আলোচনা। শেষ পর্যন্ত তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের আশীর্বাদে পেয়েছেন এই আসনের জাপা প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা। পরবর্তীতে একে একে তিনি লাভ করেন, টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক, দলীয় চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক উপদেষ্টা, দলের নির্বাচন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান এবং সর্বশেষ কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যপদ। এখানেই থেমে নেই। সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হওয়া জেলা জাপার কমিটি না ভেঙেই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শফিউল্লাহ আল মুনিরকে আহ্বায়ক করে দেন। এ কারণে দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। মারামারির ঘটনাও ঘটেছে গত ২০শে অক্টোবর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে দলের মহাসমাবেশে।
এসব মোকাবিলা করেই তিনি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। উঠান বৈঠক, মোটরসাইকেল মিছিল এবং খণ্ড খণ্ড মিছিল করছেন।
মুরাদ সিদ্দিকী এই আসন থেকে তিনবার নির্বাচন করে উল্লেযোগ্য ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। দু’বার ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী। একবার স্বতন্ত্র। এবার চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার। এখনো কোনো ধরনের সিগন্যাল পাননি। কিন্তু থেমে নেই তার প্রচারণা। সর্বশেষ গত ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে টাঙ্গাইলের ৮টি আসনের মধ্যে তিনটিতে নির্বাচন হয়েছিল। তার একটি টাঙ্গাইল-৫। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মুরাদ সিদ্দিকী পেয়েছিলেন প্রায় ৬০ হাজার ভোট। তার আগে নবম নির্বাচনে তিনি ৪০৪৫৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন। মুরাদ সিদ্দিকীর রয়েছে নিজস্ব কর্মিবাহিনী এবং সমর্থক। এরাই তার নির্বাচনের প্রাণ। নাগরিক কমিটির ব্যানারে তিনি নির্বাচনী সভা করছেন।
১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আবদুল মান্নান জয়লাভ করেছিলেন। এরপর যথাক্রমে বিএনপি’র আবদুর রহমান (১৯৭৯), জাতীয় পার্টির মীর মাজেদুর রহমান (১৯৮৬), জাতীয় পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান (১৯৮৮), জাতীয় পার্টি, পরবর্তীতে বিএনপি’র মে.জে. মাহমুদুল হাসান (১৯৯১), বিএনপি’র মে.জে. মাহমুদুল হাসান (১৯৯৬, ১৫ই ফেব্রুয়ারি), আওয়ামী লীগের আবদুল মান্নান (১৯৯৬, ১২ই জুন), বিএনপি’র মাহমুদুল হাসান (২০০১), জাতীয় পার্টির আলহাজ আবুল কাশেম (২০০৮) এবং আওয়ামী লীগের আলহাজ ছানোয়ার হোসেন (২০১৪) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ ছানোয়ার হোসেন ছাড়াও মনোনয়নের দাবিদার পৌর মেয়র জামিলুর রহমান মিরণ, প্রয়াত ফারুক আহমদের স্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাহার আহমেদ এবং সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট খোরশেদ আলম। এ আসনে রয়েছে আওয়ামী লীগের নীরব কোন্দল। নিকট অতীতে জেলা আওয়ামী লীগ নিয়ন্ত্রণ করতেন শহরের বহুল আলোচিত খান পরিবারের চার ভাই। চার ভাইয়ের জ্যেষ্ঠ এমপি আমানুর রহমান খান রানা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। অপর তিন ভাই ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাঁকন, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান খান মুক্তি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক সহ সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা রয়েছেন পলাতক। চার ভাইকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। খান পরিবার জেলার রাজনীতি থেকে আউট হলেও রয়ে গেছে তাদের অনেক অনুসারী। এই আসনের বর্তমান এমপি আলহাজ ছানোয়ার হোসেন অনেকটাই ক্লিন ইমেজের। মনোনয়নের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমি পাঁচটি বছর মাঠপর্যায়ে কাজ করেছি। মানুষের কাছাকাছি গিয়েছি। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এলাকার জনগণ আমার সাথেই আছেন। গতবারের মতোই এবারও আমি দলের মনোনয়ন পাবো। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী মুরাদ সিদ্দিকীও। গতবার তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এবার কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন এই প্রশ্নে তিনি বলেন,‘ নির্বাচন করবো এটি শতভাগ সত্য। আমি মুক্তিযুদ্ধের পরিবারের সন্তান। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ লালন করে যে দল সেই দল থেকেই নির্বাচন করবো।’
নির্বাচনী প্রচারণা শুরু না হলেও বিএনপি থেকে প্রার্থী হবেন মেজর জেনারেল ( অব:) মাহমুদুল হাসান। এ আসন থেকে তিনি চারবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। দলের বাইরে এলাকায় তার রয়েছে নিজস্ব সমর্থক। মন্ত্রী থাকার সময় এলাকায় তিনি ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। প্রার্থী হিসেবে আরও তিনজনের নাম শোনা যাচ্ছে। এরা হলেন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ সভাপতি ছাইদুল হক ছাদু ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল। ছাইদুল হক ছাদু নিজেকে তৃণমূল থেকে উঠে আসা প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, দল যদি তাকে মনোনয়ন দেন তাহলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন। দলের সাধরণ সম্পাদক এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী এডভোকেট ফরহাদ ইকবালের বক্তব্য, ‘ মনোনয়ন কে পাবেন তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে যিনিই পাবেন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষেই কাজ করব। তবে এই মুহূর্তে নির্বচনের চাইতে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আন্দোলন করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
জেলা জাতীয় পার্টির ত্রিশঙ্কু অবস্থা। মনোনয়ন নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ আবুল কাশেম ও জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হকের সাথে ছিল দা’কুমড়ো সম্পর্ক। উভয়ের সমর্থকের সঙ্গে মারামারিও ঘটেছে। ভাঙচুর হয়েছে আবুল কাশেমের গাড়ি। জেলা জাপার সাবেক সাধরণ সম্পাদক আব্দুস সালাম চাকলাদরকে প্রহৃত করা নিয়ে মামলায় মোজাম্মেল হক দিন পাঁচেক জেল খেটে বর্তমানে জামিনে আছেন। এর মধ্যে প্রবেশ করেছেন ইনডেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান পীরজাদা শফিউল্লাহ আল মুনীর। তিনি জেলা জাপার আহ্বায়ক হলেও অধিকাংশ কর্মী তা মেনে নিতে পারেনি। এ প্রসঙ্গে জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা জাপার সাবেক আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় পার্টির একাধিক প্রার্থী মনোনয়নের জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং দলের তৃণমূলের সমর্থিত প্রার্থী সাবেক সংসদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ আবুল কাশেম। জাপার মনোনয়ন এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পার্লমেন্টারি বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে কে প্রার্থী হবে।’ শফিউল্লাহ আল মুনীরের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি মনোনয়ন পেয়ে গেছেন এটা পরিষ্কার নয়।
এ প্রসঙ্গে শফিউল্লাহ আল মুনীর বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন যা দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়েছে। আবুল কাশেম সম্পর্কে তিনি বলেন, কাশেম সাহেব ভালো মানুষ। কিন্তু তিনি বিল খেলাপি হওয়ার কারণে সংসদ সদস্য পদ হারিয়েছেন। অপর প্রার্থী মোজাম্মেল হক সম্পর্কে বলেন, তাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। অচিরেই চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হবে। এ ছাড়া পার্টির চেয়ারম্যান দু’জনকেই বলেছেন আমাকে যেন সহায়তা করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন- জাতীয় পার্টির তিনিই প্রার্থী। এ আসনে লাঙ্গলের রয়েছে অসংখ্য সমর্থক। তারা আমাকেই নির্বাচিত করবেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন সৈয়দ খালেদ মোস্তফা। এর আগেও তিনি নির্বাচন করেছেন। তাকে নিয়ে রয়েছে শহরবাসীর ভিন্ন আগ্রহ। তার সাথে কেউ না থাকলেও তার একাকী প্রচার এলাকাবাসী উপভোগ করেন।
আগামীকাল: পঞ্চগড়-২
এসব মোকাবিলা করেই তিনি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। উঠান বৈঠক, মোটরসাইকেল মিছিল এবং খণ্ড খণ্ড মিছিল করছেন।
মুরাদ সিদ্দিকী এই আসন থেকে তিনবার নির্বাচন করে উল্লেযোগ্য ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। দু’বার ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী। একবার স্বতন্ত্র। এবার চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার। এখনো কোনো ধরনের সিগন্যাল পাননি। কিন্তু থেমে নেই তার প্রচারণা। সর্বশেষ গত ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে টাঙ্গাইলের ৮টি আসনের মধ্যে তিনটিতে নির্বাচন হয়েছিল। তার একটি টাঙ্গাইল-৫। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মুরাদ সিদ্দিকী পেয়েছিলেন প্রায় ৬০ হাজার ভোট। তার আগে নবম নির্বাচনে তিনি ৪০৪৫৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন। মুরাদ সিদ্দিকীর রয়েছে নিজস্ব কর্মিবাহিনী এবং সমর্থক। এরাই তার নির্বাচনের প্রাণ। নাগরিক কমিটির ব্যানারে তিনি নির্বাচনী সভা করছেন।
১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আবদুল মান্নান জয়লাভ করেছিলেন। এরপর যথাক্রমে বিএনপি’র আবদুর রহমান (১৯৭৯), জাতীয় পার্টির মীর মাজেদুর রহমান (১৯৮৬), জাতীয় পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান (১৯৮৮), জাতীয় পার্টি, পরবর্তীতে বিএনপি’র মে.জে. মাহমুদুল হাসান (১৯৯১), বিএনপি’র মে.জে. মাহমুদুল হাসান (১৯৯৬, ১৫ই ফেব্রুয়ারি), আওয়ামী লীগের আবদুল মান্নান (১৯৯৬, ১২ই জুন), বিএনপি’র মাহমুদুল হাসান (২০০১), জাতীয় পার্টির আলহাজ আবুল কাশেম (২০০৮) এবং আওয়ামী লীগের আলহাজ ছানোয়ার হোসেন (২০১৪) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ ছানোয়ার হোসেন ছাড়াও মনোনয়নের দাবিদার পৌর মেয়র জামিলুর রহমান মিরণ, প্রয়াত ফারুক আহমদের স্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাহার আহমেদ এবং সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট খোরশেদ আলম। এ আসনে রয়েছে আওয়ামী লীগের নীরব কোন্দল। নিকট অতীতে জেলা আওয়ামী লীগ নিয়ন্ত্রণ করতেন শহরের বহুল আলোচিত খান পরিবারের চার ভাই। চার ভাইয়ের জ্যেষ্ঠ এমপি আমানুর রহমান খান রানা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। অপর তিন ভাই ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাঁকন, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান খান মুক্তি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক সহ সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা রয়েছেন পলাতক। চার ভাইকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। খান পরিবার জেলার রাজনীতি থেকে আউট হলেও রয়ে গেছে তাদের অনেক অনুসারী। এই আসনের বর্তমান এমপি আলহাজ ছানোয়ার হোসেন অনেকটাই ক্লিন ইমেজের। মনোনয়নের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমি পাঁচটি বছর মাঠপর্যায়ে কাজ করেছি। মানুষের কাছাকাছি গিয়েছি। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এলাকার জনগণ আমার সাথেই আছেন। গতবারের মতোই এবারও আমি দলের মনোনয়ন পাবো। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী মুরাদ সিদ্দিকীও। গতবার তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এবার কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন এই প্রশ্নে তিনি বলেন,‘ নির্বাচন করবো এটি শতভাগ সত্য। আমি মুক্তিযুদ্ধের পরিবারের সন্তান। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ লালন করে যে দল সেই দল থেকেই নির্বাচন করবো।’
নির্বাচনী প্রচারণা শুরু না হলেও বিএনপি থেকে প্রার্থী হবেন মেজর জেনারেল ( অব:) মাহমুদুল হাসান। এ আসন থেকে তিনি চারবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। দলের বাইরে এলাকায় তার রয়েছে নিজস্ব সমর্থক। মন্ত্রী থাকার সময় এলাকায় তিনি ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। প্রার্থী হিসেবে আরও তিনজনের নাম শোনা যাচ্ছে। এরা হলেন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ সভাপতি ছাইদুল হক ছাদু ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল। ছাইদুল হক ছাদু নিজেকে তৃণমূল থেকে উঠে আসা প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, দল যদি তাকে মনোনয়ন দেন তাহলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন। দলের সাধরণ সম্পাদক এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী এডভোকেট ফরহাদ ইকবালের বক্তব্য, ‘ মনোনয়ন কে পাবেন তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে যিনিই পাবেন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষেই কাজ করব। তবে এই মুহূর্তে নির্বচনের চাইতে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আন্দোলন করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
জেলা জাতীয় পার্টির ত্রিশঙ্কু অবস্থা। মনোনয়ন নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ আবুল কাশেম ও জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হকের সাথে ছিল দা’কুমড়ো সম্পর্ক। উভয়ের সমর্থকের সঙ্গে মারামারিও ঘটেছে। ভাঙচুর হয়েছে আবুল কাশেমের গাড়ি। জেলা জাপার সাবেক সাধরণ সম্পাদক আব্দুস সালাম চাকলাদরকে প্রহৃত করা নিয়ে মামলায় মোজাম্মেল হক দিন পাঁচেক জেল খেটে বর্তমানে জামিনে আছেন। এর মধ্যে প্রবেশ করেছেন ইনডেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান পীরজাদা শফিউল্লাহ আল মুনীর। তিনি জেলা জাপার আহ্বায়ক হলেও অধিকাংশ কর্মী তা মেনে নিতে পারেনি। এ প্রসঙ্গে জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা জাপার সাবেক আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় পার্টির একাধিক প্রার্থী মনোনয়নের জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং দলের তৃণমূলের সমর্থিত প্রার্থী সাবেক সংসদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ আবুল কাশেম। জাপার মনোনয়ন এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পার্লমেন্টারি বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে কে প্রার্থী হবে।’ শফিউল্লাহ আল মুনীরের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি মনোনয়ন পেয়ে গেছেন এটা পরিষ্কার নয়।
এ প্রসঙ্গে শফিউল্লাহ আল মুনীর বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন যা দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়েছে। আবুল কাশেম সম্পর্কে তিনি বলেন, কাশেম সাহেব ভালো মানুষ। কিন্তু তিনি বিল খেলাপি হওয়ার কারণে সংসদ সদস্য পদ হারিয়েছেন। অপর প্রার্থী মোজাম্মেল হক সম্পর্কে বলেন, তাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। অচিরেই চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হবে। এ ছাড়া পার্টির চেয়ারম্যান দু’জনকেই বলেছেন আমাকে যেন সহায়তা করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন- জাতীয় পার্টির তিনিই প্রার্থী। এ আসনে লাঙ্গলের রয়েছে অসংখ্য সমর্থক। তারা আমাকেই নির্বাচিত করবেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন সৈয়দ খালেদ মোস্তফা। এর আগেও তিনি নির্বাচন করেছেন। তাকে নিয়ে রয়েছে শহরবাসীর ভিন্ন আগ্রহ। তার সাথে কেউ না থাকলেও তার একাকী প্রচার এলাকাবাসী উপভোগ করেন।
আগামীকাল: পঞ্চগড়-২