এক্সক্লুসিভ
মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে নেই সহায়ক পরিবেশ
মরিয়ম চম্পা
৬ অক্টোবর ২০১৮, শনিবার, ৮:৫৩ পূর্বাহ্ন
ক্লাস সেভেনে পড়ে সোফিয়া। টেলিভিশনে ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপন দেখে মায়ের কাছে জানতে চেয়েছে এটা কিসের বিজ্ঞাপন? জবাবে মা এড়িয়ে গেলেও এর সপ্তাহখানেকের মধ্যে তাকেও ন্যাপকিনের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে কিছুই ভালো লাগছে না সোফিয়ার। অস্থিরতা, মেজাজ খিটমিটে, হাত-পা ও কোমরে ব্যথা, পেটে ব্যথাসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া পর্যন্ত করছে না। এরই মাঝে একদিন ক্লাসে দাঁড়িয়ে শিক্ষককে পড়া বলার সময় হঠাৎ তার জামা হালকা ভেজা অনুভব করে। ক্লাসের শিক্ষক বিষয়টি বুঝতে পেরে তৎক্ষণাৎ একজন নারী শিক্ষককে ডেকে সোফিয়াকে গ্রীন রুমে (বাথরুমে) নিয়ে ফ্রেস হতে বলেন। কিন্তু স্কুলের টয়লেটে নেই পানির সুব্যবস্থা। নারী শিক্ষিকাও কি করবেন বা বলবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তিনি সোফিয়াকে স্কুলের আয়ার সঙ্গে বাসায় পাঠিয়ে দেন।
সানজিদা খানম। বয়স ৩৫। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন গত ৫ বছর ধরে। পোশাক পরিচ্ছদে খুব টিপটপ একজন নারী। অপরিষ্কার কিছু দেখলেই তার এলার্জি উঠে যায়। ক্লাসের পাঠদানের নিয়মিত প্রসঙ্গ থাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। এতো পরিচ্ছন্নতার মাঝেও সানজিদাকে যে বিষয়টি হতাশ করেছে তা হলো ক্যাম্পাসে টয়লেটের অব্যবস্থাপনা বা নারীদের জন্য অপর্যাপ্ত টয়লেট। ফলে মাসিকের দিনগুলোতে তাকে ছুটি কাটাতে হয়। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের টয়লেটে পানি থাকলেও ফ্ল্যাস হয় না। কোনো প্যাডের ব্যবস্থা নেই। নিয়মিত টিস্যু থাকে না। অনেক সময় সাবানটা পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায় না।
শিক্ষক, পাইলট, ক্যাশিয়ার, পোশাক শ্রমিক, ডাক্তার, সাংবাদিক, খেলোয়াড়, কর্মজীবী নারী, স্কুলছাত্রী, কিশোরী প্রায় সব মেয়েই কখনো না কখনো মুখোমুখি হয় এরকম পরিস্থিতির। হয়তো বিষয়টি তাদের কাজের ক্ষেত্রে তেমন ক্ষতি করে না। কিন্তু মাসিক বিষয়টি কর্মজীবী মহিলাদের জন্য অনেক সময়ই বিব্রতকর একটি পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে। যদি কাজের স্থান মাসিক-বান্ধব না হয়। কারণ দিনের বেশিরভাগ সময়ই অফিসে কাটাতে হয়। এছাড়া অনেক মেয়েই কাজ করেন অফিস আওয়ারের বাইরেও তাই অফিসে মাসিক-বান্ধব পরিবেশ থাকা জরুরি।
মাসিক নিয়ে এক ধরনের কুসংস্কার ও লজ্জা কাজ করে সবার মধ্যে। কাছের মানুষ ছাড়া, প্যাড কেনা বা মাসিকের বিষয়টি যেমন সবাইকে বলতে পারে না মেয়েরা, তেমনি সব ছেলেরা বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিতেও পারে না। মাসিক হয়েছে এটা জানতে পারলে ছেলে সহকর্মীরা সামনাসামনি কথা না বললেও হয়তো আড়ালে হাসাহাসি করবে এই ভয়টা কাজ করে অনেক মেয়ের মধ্যে। বিষয়টা শেয়ার করলে অসুস্থতা হিসেবেও ট্রিট করে অনেকেই। তাই কারো সঙ্গে শেয়ার করার আগে বেশ কয়েকবার ভাবে মেয়েরা। কি বলবে, কীভাবে বলবে?
বাংলাদেশ ন্যাশনাল হাইজিন বেইজলাইন সার্ভে ২০১৪ বলছে, দেশের স্কুলগুলোর তিন ভাগের দুইভাগে টয়লেটের ভেতরে বা কাছাকাছি সাবান-পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। মাত্র ২২ শতাংশ স্কুলে মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট থাকলেও সেখানে মাসিক ব্যবস্থাপনা বলতে কিছু নেই। তাই মাসিকের কারণে ৪০ শতাংশ ছাত্রী মাসে গড়ে ৩ দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকে। ওই জরিপে আরো দেখা যায়, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকায় ৮৬ শতাংশ স্কুলছাত্রী মাসিকের সময় স্কুলে তাদের ব্যবহৃত কাপড় বা স্যানিটারি প্যাড বদলাতে পারে না। ফলে বিশেষ ওই সময়ে ব্যাহত হয় তাদের লেখাপড়া।
রেড অরেঞ্জ মিডিয়া এন্ড কম্যুনিকেশনস এর হেড অব প্রোগ্রামস নকিব রাজিব আহমেদ মানবজনিমকে বলেন, মাসিক শব্দটা কেউ স্বাভাবিকভাবে উচ্চারণ করতে চায় না। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে দেখা গেছে মাসিককে প্রজনন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি অংশ হিসেবে উচ্চারণই করা হয়নি। প্রথমত মাসিক সম্পর্কে ভুল ধারণা এবং লজ্জা ভেঙে ডায়লগ নিশ্চিত করাটা একান্ত দরকার। প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা বা প্রথার বাইরে এসে এ বিষয়ে পরিবার, বাবা-মা, ভাই, শিক্ষক ও প্রতিবেশীসহ প্রত্যেক স্তরে কথা বলতে হবে। কারণ দেশে অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী স্বাস্থ্যের একটি মৌলিক অংশ। দ্বিতীয়ত পারিবারিক পর্যায় থেকে শুরু করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এটার সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
মাসিক সংক্রান্ত সকল বিষয়ে মেয়েদের উৎসাহিত করতে হবে। স্কুলগুলোতে টয়লেট থেকে শুরু স্যানিটারি প্যাড আছে কিনা এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। এছাড়া রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এগুলোকে আমাদের স্বাস্থ্যনীতি ও নারী উন্নয়নের নীতিমালার অংশ হিসেবে আনতে হবে। যাতে করে মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা একটি সুনির্দিষ্ট আলোচনা অধ্যায় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ বলেন, সরকার কিন্তু এখন অনেক চেষ্টা করছে নারীবান্ধব টয়লেট ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়ে। কিন্তু প্রধান সমস্যাটা হচ্ছে আমাদের দেশে পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার জায়গা থেকে মাসিক শব্দটা উচ্চারণ করতে আমাদের কোথায় যেন খুব সমস্যা হয়। এটা সাধারণ এবং প্রাকৃতিক একটি প্রক্রিয়া। যেটা আমার মায়ের হয়েছে, মেয়ের হয়েছে। আমার স্ত্রী ও বোনেরও হয়। এ বিষয়টিকে সহজভাবে গ্রহণ করা থেকে আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি। এটার পরিবর্তন আনতে হবে।
নারী অধিকার কর্মী একশন এইডে কর্মরত কাশফিয়া ফিরোজ বলেন, আমরা ইতিমধ্যে নারীদের জন্য মিউচ্যুয়াল হাইজিন কিডের সূচনা করেছি। এটা মূলত স্কুলের স্বর্ণ কিশোরীদের ও বিভিন্ন বয়সী নারীদের দেয়া হয়। এটা দেখতে অনেকটা ছোট্ট পেন্সিল ব্যাগের মতো। ব্যাগটির মধ্যে ছোট্ট একটি হ্যান্ড টাওয়েল, মেয়েদের প্যান্টি, ১টি স্যানিটারি ন্যাপকিন, একটি হ্যান্ডওয়াস ও ছোট্ট একটি ক্যালেন্ডার থাকে।
যেটার ১ পাশে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের নিয়ম ও অন্যপাশে ক্যালেন্ডার। যেটাতে তারা প্রত্যেক মাসের মিউচুয়াল মিন্সট্রিশন সাইকেলটা ঠিকমতো চলছে কিনা সেটা কলম দিয়ে দাগ কেটে রাখবে। মোটকথা তারা যেনো স্কুল থেকে এটা চর্চা করতে পারে। মিউচ্যুয়াল হাইজিনের এই ছোট্ট ব্যাগটি মেয়েরা এখন তাদের স্কুল ব্যাগের ভেতরে ব্যবহার করছে। মহিলারা এটা নিয়ে মার্কেটে যাচ্ছে। কাজেই মাসিকের দিনগুলোতে এখন আর তাদের ঘরে বসে থাকার সময় নেই। ট্যাবু ভাঙার বিষয়ে বলবো এক্ষেত্রে আমরা অনেকটাই সফল। নারায়ণগঞ্জে মাদরাসার মেয়েরা পর্যন্ত পিছিয়ে নেই। তারা হিজাব পরে হলেও মাসিক সংক্রান্ত সব ধরনের পরামর্শ নিতে এখন কমুউনিটি ক্লাবে আসে। মাসিক নিয়ে ট্যাবু ভাঙতে আমরা ইতিমধ্যে ছোট ছোট কনসালটেন্সির ব্যবস্থা করেছি।
সানজিদা খানম। বয়স ৩৫। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন গত ৫ বছর ধরে। পোশাক পরিচ্ছদে খুব টিপটপ একজন নারী। অপরিষ্কার কিছু দেখলেই তার এলার্জি উঠে যায়। ক্লাসের পাঠদানের নিয়মিত প্রসঙ্গ থাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। এতো পরিচ্ছন্নতার মাঝেও সানজিদাকে যে বিষয়টি হতাশ করেছে তা হলো ক্যাম্পাসে টয়লেটের অব্যবস্থাপনা বা নারীদের জন্য অপর্যাপ্ত টয়লেট। ফলে মাসিকের দিনগুলোতে তাকে ছুটি কাটাতে হয়। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের টয়লেটে পানি থাকলেও ফ্ল্যাস হয় না। কোনো প্যাডের ব্যবস্থা নেই। নিয়মিত টিস্যু থাকে না। অনেক সময় সাবানটা পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায় না।
শিক্ষক, পাইলট, ক্যাশিয়ার, পোশাক শ্রমিক, ডাক্তার, সাংবাদিক, খেলোয়াড়, কর্মজীবী নারী, স্কুলছাত্রী, কিশোরী প্রায় সব মেয়েই কখনো না কখনো মুখোমুখি হয় এরকম পরিস্থিতির। হয়তো বিষয়টি তাদের কাজের ক্ষেত্রে তেমন ক্ষতি করে না। কিন্তু মাসিক বিষয়টি কর্মজীবী মহিলাদের জন্য অনেক সময়ই বিব্রতকর একটি পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে। যদি কাজের স্থান মাসিক-বান্ধব না হয়। কারণ দিনের বেশিরভাগ সময়ই অফিসে কাটাতে হয়। এছাড়া অনেক মেয়েই কাজ করেন অফিস আওয়ারের বাইরেও তাই অফিসে মাসিক-বান্ধব পরিবেশ থাকা জরুরি।
মাসিক নিয়ে এক ধরনের কুসংস্কার ও লজ্জা কাজ করে সবার মধ্যে। কাছের মানুষ ছাড়া, প্যাড কেনা বা মাসিকের বিষয়টি যেমন সবাইকে বলতে পারে না মেয়েরা, তেমনি সব ছেলেরা বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিতেও পারে না। মাসিক হয়েছে এটা জানতে পারলে ছেলে সহকর্মীরা সামনাসামনি কথা না বললেও হয়তো আড়ালে হাসাহাসি করবে এই ভয়টা কাজ করে অনেক মেয়ের মধ্যে। বিষয়টা শেয়ার করলে অসুস্থতা হিসেবেও ট্রিট করে অনেকেই। তাই কারো সঙ্গে শেয়ার করার আগে বেশ কয়েকবার ভাবে মেয়েরা। কি বলবে, কীভাবে বলবে?
বাংলাদেশ ন্যাশনাল হাইজিন বেইজলাইন সার্ভে ২০১৪ বলছে, দেশের স্কুলগুলোর তিন ভাগের দুইভাগে টয়লেটের ভেতরে বা কাছাকাছি সাবান-পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। মাত্র ২২ শতাংশ স্কুলে মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট থাকলেও সেখানে মাসিক ব্যবস্থাপনা বলতে কিছু নেই। তাই মাসিকের কারণে ৪০ শতাংশ ছাত্রী মাসে গড়ে ৩ দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকে। ওই জরিপে আরো দেখা যায়, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকায় ৮৬ শতাংশ স্কুলছাত্রী মাসিকের সময় স্কুলে তাদের ব্যবহৃত কাপড় বা স্যানিটারি প্যাড বদলাতে পারে না। ফলে বিশেষ ওই সময়ে ব্যাহত হয় তাদের লেখাপড়া।
রেড অরেঞ্জ মিডিয়া এন্ড কম্যুনিকেশনস এর হেড অব প্রোগ্রামস নকিব রাজিব আহমেদ মানবজনিমকে বলেন, মাসিক শব্দটা কেউ স্বাভাবিকভাবে উচ্চারণ করতে চায় না। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে দেখা গেছে মাসিককে প্রজনন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি অংশ হিসেবে উচ্চারণই করা হয়নি। প্রথমত মাসিক সম্পর্কে ভুল ধারণা এবং লজ্জা ভেঙে ডায়লগ নিশ্চিত করাটা একান্ত দরকার। প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা বা প্রথার বাইরে এসে এ বিষয়ে পরিবার, বাবা-মা, ভাই, শিক্ষক ও প্রতিবেশীসহ প্রত্যেক স্তরে কথা বলতে হবে। কারণ দেশে অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী স্বাস্থ্যের একটি মৌলিক অংশ। দ্বিতীয়ত পারিবারিক পর্যায় থেকে শুরু করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এটার সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
মাসিক সংক্রান্ত সকল বিষয়ে মেয়েদের উৎসাহিত করতে হবে। স্কুলগুলোতে টয়লেট থেকে শুরু স্যানিটারি প্যাড আছে কিনা এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। এছাড়া রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এগুলোকে আমাদের স্বাস্থ্যনীতি ও নারী উন্নয়নের নীতিমালার অংশ হিসেবে আনতে হবে। যাতে করে মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা একটি সুনির্দিষ্ট আলোচনা অধ্যায় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ বলেন, সরকার কিন্তু এখন অনেক চেষ্টা করছে নারীবান্ধব টয়লেট ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়ে। কিন্তু প্রধান সমস্যাটা হচ্ছে আমাদের দেশে পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার জায়গা থেকে মাসিক শব্দটা উচ্চারণ করতে আমাদের কোথায় যেন খুব সমস্যা হয়। এটা সাধারণ এবং প্রাকৃতিক একটি প্রক্রিয়া। যেটা আমার মায়ের হয়েছে, মেয়ের হয়েছে। আমার স্ত্রী ও বোনেরও হয়। এ বিষয়টিকে সহজভাবে গ্রহণ করা থেকে আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি। এটার পরিবর্তন আনতে হবে।
নারী অধিকার কর্মী একশন এইডে কর্মরত কাশফিয়া ফিরোজ বলেন, আমরা ইতিমধ্যে নারীদের জন্য মিউচ্যুয়াল হাইজিন কিডের সূচনা করেছি। এটা মূলত স্কুলের স্বর্ণ কিশোরীদের ও বিভিন্ন বয়সী নারীদের দেয়া হয়। এটা দেখতে অনেকটা ছোট্ট পেন্সিল ব্যাগের মতো। ব্যাগটির মধ্যে ছোট্ট একটি হ্যান্ড টাওয়েল, মেয়েদের প্যান্টি, ১টি স্যানিটারি ন্যাপকিন, একটি হ্যান্ডওয়াস ও ছোট্ট একটি ক্যালেন্ডার থাকে।
যেটার ১ পাশে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের নিয়ম ও অন্যপাশে ক্যালেন্ডার। যেটাতে তারা প্রত্যেক মাসের মিউচুয়াল মিন্সট্রিশন সাইকেলটা ঠিকমতো চলছে কিনা সেটা কলম দিয়ে দাগ কেটে রাখবে। মোটকথা তারা যেনো স্কুল থেকে এটা চর্চা করতে পারে। মিউচ্যুয়াল হাইজিনের এই ছোট্ট ব্যাগটি মেয়েরা এখন তাদের স্কুল ব্যাগের ভেতরে ব্যবহার করছে। মহিলারা এটা নিয়ে মার্কেটে যাচ্ছে। কাজেই মাসিকের দিনগুলোতে এখন আর তাদের ঘরে বসে থাকার সময় নেই। ট্যাবু ভাঙার বিষয়ে বলবো এক্ষেত্রে আমরা অনেকটাই সফল। নারায়ণগঞ্জে মাদরাসার মেয়েরা পর্যন্ত পিছিয়ে নেই। তারা হিজাব পরে হলেও মাসিক সংক্রান্ত সব ধরনের পরামর্শ নিতে এখন কমুউনিটি ক্লাবে আসে। মাসিক নিয়ে ট্যাবু ভাঙতে আমরা ইতিমধ্যে ছোট ছোট কনসালটেন্সির ব্যবস্থা করেছি।