দেশ বিদেশ

পুঁজিবাজার থেকে বড় প্রকল্পে অর্থায়নের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৩১ পূর্বাহ্ন

বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়নের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারের ভূমিকা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, অর্থনীতিকে বেগবান, বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়নের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারের অবদান বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আমি বিএসইসিসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই।
গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) রজতজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে সরকার প্রধানের এ আহ্বান আসে। পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে প্রধানমন্ত্রী আরো ৭টি বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান।
দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের উৎস হিসেবে বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন; নতুন নতুন প্রোডাক্ট চালুর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সামনে বিনিয়োগের সুযোগ ও বৈচিত্র্য বাড়ানো; নতুন প্রোডাক্ট চালুর আগে তা পরিচিত করা, পরিচালন প্রক্রিয়া ও কৌশল সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করার মতো বিষয় রয়েছে এর মধ্যে। এছাড়া বিএসইসি’র প্রশিক্ষণ একাডেমির কার্যক্রম জোরদার করে সর্বস্তরে বিনিয়োগ শিক্ষার বিস্তৃতি ঘটানো; আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারের ভূমিকা ও গুরুত্ব, অন্যান্য খাতের সঙ্গে পুঁজিবাজারের আন্তঃসম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়ে সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা; ভেঞ্চার ক্যাপিটালের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি মূলধনী কোম্পানির শেয়ার লেনদেন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘স্মল ক্যাপ বোর্ড’ চালু করার কথা ভাবতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়াও পুঁজিবাজারের সব ধরনের অবকাঠামোগত সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সব জায়গায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন- আমি নিশ্চিত, এসব কর্মকাণ্ড বাস্তবায়িত হলে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে এবং দেশের অগ্রগতির ধারা আরো বেগবান হবে।
একইসঙ্গে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি অনুরোধ করবো, যে প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করবেন সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে বিনিয়োগ করবেন। বিনিয়োগ করে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হোক- এটা আমরা চাই না। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ‘ভবিষ্যতেও’ পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাবে, যাতে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস হয়ে ওঠে। আর্থিক খাতের অন্যতম স্তম্ভ পুঁজিবাজারের বিকাশে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। পুঁজিবাজার আজকে স্থিতিশীল অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দ্রুত বিকাশমান ও সম্ভাবনাময় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
২০১০ সালে বাজারে ধসের পর স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশন, ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল গঠন, আইন সংস্কার ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রণোদনা দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথা মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ২০৪৩ সালে যখন বিএসইসি’র সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হবে, অর্থনীতির অন্যতম নিয়ামক শক্তি হিসেবে পুঁজিবাজারের অবস্থান আরো বলিষ্ঠতর হবে। আমাদের কর্মপ্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে বিএসইসি পেয়েছে ‘এ’ ক্যাটাগরির নিয়ন্ত্রক সংস্থার সম্মান, বেড়েছে বৈদেশিক বিনিয়োগ। আমাদের বাজারের প্রতি ভারত, চীনসহ অন্যান্য দেশের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া ভারত ও বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ায় এবং চীনের কনসোর্টিয়াম ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কৌশলগত অংশীদার হওয়ায় পুঁজিবাজারের ‘গভীরতা’ বাড়ার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীসহ স্টেকহোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সবাই উপকৃত হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতিষ্ঠার বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলেও একটি কার্যকর নিয়ন্ত্রক সংস্থার জন্য যে আইনকানুন ও বিধিমালা তা ২০১১ সালের আগে ছিল না।
ধসের পর বিভিন্ন আইনি সংস্কারের কথা তুলে ধরে মুহিত বলেন, ২০১৮ সালে এসে আমরা বাজার নিয়ে তৃপ্তিবোধ করতে পারি। এর অগ্রযাত্রা রোধ করা যাবে না। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম এবং বিএসইসি’র চেয়ারম্যান মো. খায়রুল হোসেনও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কার্যাবলী নিয়ে একটি ভিজ্যুয়াল প্রেজেনটেশন অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status