ঢাকা, ১০ মে ২০২৪, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

শরীর ও মন

হাড় ভাঙা বা মচকে গেলে

ডা. মো. বখতিয়ার
২ মার্চ ২০২৪, শনিবার
mzamin

আঘাতের কারণে এবং শরীরের একটি নির্দিষ্ট অঙ্গে যন্ত্রণা অনুভব করেন, তবে এটা বলা অনেক সময় কঠিন হতে পারে যে, এটি মচকানো  বা ভেঙে গেছে। আপনার অঙ্গটি মচকে গেছে নাকি অস্থিভঙ্গ হয়েছে তা জানার জন্য আপনাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে এবং এক্স-রে করতে হবে। একটি এক্স-রেতেই দেখা যাবে যে এটি ভাঙা নাকি মচকানো।
হাড় ভেঙে যাওয়ার কতিপয় লক্ষণ:
- ব্যথা এবং ফুলে যাওয়া;
- (ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গটির) বিকৃতি;
- একটি কুড়মুড় শব্দ অথবা শিরশিরানি;
- অসাড়তা অথবা অস্বস্তিকর অনুভূতি (এটি মচকে যাওয়ার সময়ও হতে পারে কিন্তু এই অনুভূতি বেশির ভাগ সময় বেশ গুরুত্বপূর্ণ আঘাতকে চিহ্নিত করে যেটা ডাক্তারের প্রথমেই দেখে নেয়া উচিত)।’
- শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গে কোনোরকম ওজন না বইতে পারা (যেমন-পায়ে ভর দিয়ে হাঁটতে না পারা, এটি খুব সম্ভবত ভাঙার জন্য হতে পারে)।
- অস্থিতে চাপ দিলে সেটি নরম অনুভূত হওয়া।
মচকে যাওয়া হলো: মচকে যাওয়া হলো প্রকৃতপক্ষে লিগামেন্টের আঘাত। লিগামেন্ট হলো অস্থিসন্ধির কোমল কলা যা অস্থিসন্ধিতে দুটি (অথবা তার বেশি) হাড়কে সংযুক্ত করে, যেমন, গোড়ালি, হাঁটু অথবা কনুই। যদিও মচকানোর লক্ষণগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই অস্থিভঙ্গের উপসর্গগুলোর থেকে বেশির ভাগ সময় অনেক  কম থাকে, তাও কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য দেখা যায়-
- ব্যথা এবং ফুলে থাকা;
- আপনার কোমল কলাগুলোতে ভঙ্গুর অনুভূতি হওয়া।
করণীয়: 
রাইস (আরআইসিই) করুন!
যদি আপনি আঘাতপ্রাপ্ত হন তাহলে রাইস (আর আইসিই)  নিয়ম মেনে চলুন এবং প্রথম ২৪-৪৮ ঘণ্টায় নিজেকে কিছুটা আরাম দিন:
- বিশ্রাম: আঘাতপ্রাপ্ত জায়গায় চাপ পড়ার মতো কাজকর্ম বন্ধ করুন অথবা কম করুন।
- বরফ: আঘাতপ্রাপ্ত জায়গায় যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব বরফ লাগান (সাধারণ নিয়ম হলো দিনে ২০ মিনিটের জন্য ৪-৮ বার ঠাণ্ডা প্যাক লাগানো)
- সংকোচন: কমানোর জন্য আঘাতপ্রাপ্ত জায়গায় একটি ইলাস্টিক ব্যান্ডেজ দিয়ে মুড়ে রাখুন।
- উচ্চতা: একটি (আপনার হৃদপিণ্ডের থেকে উঁচু) বালিশের ওপর আঘাতপ্রাপ্ত জায়গাটি রেখে বিশ্রাম নিন।
যদি ফোলা ভাব ঠিক হয়ে যায় এবং কয়েকদিনের মধ্যে এটি কম নরম মনে হয় তাহলে খুব সম্ভবত আপনি ঠিক আছেন। কিন্তু যদি এটি ২-৪ দিনের মধ্যে না ঠিক হয় তাহলে আপনার ডাক্তার দেখানো উচিত।
সন্দেহ থাকলে আঘাতপ্রাপ্ত জায়গাটি দেখান: যখন মচকানোর প্রসঙ্গ আসে, অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এটিকে মানিয়ে নিতে পারেন কিন্তু শিশুরা প্রাপ্তবয়স্ক নয়। যদি শিশুরা আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাদেরকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তার দেখান। শিশুরা গ্রোথ প্লেটে আঘাত পেতে পারে যেটি তাদের পরবর্তীকালে বৃদ্ধিতে বাধা দিতে পারে।
কী রকম ডাক্তার দেখাবেন: যেকোনো অস্থি সংক্রান্ত ডাক্তার যিনি এক্সরে দেখে সাধারণ মূল্যায়ন করতে পারবেন সেরকম ডাক্তার দেখানো উচিত। এই পরিষেবার জন্য যে চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয় তা হলো-
- নার্সিং হোম;
- প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র;
- জরুরি পরিষেবাসহ হসপিটাল।
আপনার আঘাতকে (বিশেষত আপনার শিশুদসহ) যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন ডাক্তারের দ্বারা পরীক্ষা করা উচিত। একটি বাড়ন্ত শিশুর মূল্যায়ন করে দেখা উচিত এবং নিশ্চিত করা উচিত যে, তার কোনো অস্থি ভঙ্গ নেই তো এবং এটি বোঝার একমাত্র উপায় হলো এক্সরে করা।
আপনাকে তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখাতে হবে যদি আঘাতপ্রাপ্ত জায়গাটিতে উল্লেখযোগ্য কাটা অংশ অথবা অন্য ক্ষত থাকে।

বিজ্ঞাপন
ক্ষতটিকে আলাদাভাবে চিকিৎসা করতে হবে। এটিকে হয়তো পরিষ্কার করে ব্যাপকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক সহযোগে চিকিৎসা করতে হবে।
লেখক: জনস্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও গবেষক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক, খাজা বদরুদজোদা মডার্ন হাসপাতাল, সফিপুর, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।

 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

   

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status