দেশ বিদেশ
এডিপি কমিয়ে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন
স্টাফ রিপোর্টার
১৯ মে ২০২৫, সোমবারআগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। উন্নয়ন বাজেটে বরাবরের মতো এবারো বড় ৫ খাতেই ৭০ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে শুধু পরিবহন ও যোগাযোগ খাতই ২৫ শতাংশ বরাদ্দ পেয়েছে। গতকাল শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এনইসি সভায় উন্নয়ন বাজেট চূড়ান্ত করা হয়। এডিপি’র খসড়া জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় অনুমোদন দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ এনইসি সভা শেষে এই তথ্য জানান। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আগামী অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দিয়েছে এনইসি। এটি আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম। প্রায় সব খাতেই বরাদ্দ কমছে। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতও। পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, টেকসই বাজেট ব্যবস্থাপনার জন্য এগিয়ে নিতে হলে ঘাটতি বাজেট কমাতে হবে, এবং আগে থেকে যে ঋণের দায় আছে তা কমিয়ে নিয়ে আসা হবে, ভর্তুকি কমিয়ে আনা হবে। তবে এটা হঠাৎ করে কমিয়ে আনা সম্ভব না। ক্রমাগত ঘাটতি বাজেট পূরণ করতে গিয়ে দেশ যাতে ঋণের ফাঁদে পড়ে না যায়-সেদিকে নজর দেয়া হবে। তিনি বলেন, ক্রমাগতভাবে ঘাটতি বাজেটে বৈদেশিক ঋণ ও অভ্যন্তরীণ ঋণ নেয়া হয়। এতে পরবর্তীতে আবার ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ে। উন্নয়ন বাজেট এবং পরিচালন বাজেট উভয়ের জন্যই এই ঋণ নেয়া হয়। এতে একটা দুষ্টচক্র তৈরি হয়। এই দুষ্ট চক্র থেকে বেরিয়ে আসার জন্য রাজস্ব বৃদ্ধির প্রচেষ্টা নেয়া হবে। যদিও রাতারাতি রাজস্ব বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেট হবে শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের বাজেট। দায়িত্বজ্ঞানহীন বাজেট হবে না। এখানে এমন ব্যয় থাকবে না যা সাময়িকভাবে মনে হবে জনতুষ্টির, কিন্তু আসলে এর দায় গিয়ে পড়বে পরবর্তী বাজেটগুলোর ওপর। তিনি আরও বলেন, অনেক অনেক ব্যয় আছে, যেমন টাকা ছাপিয়ে যে ব্যয় হয়, তার জন্য মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব সঙ্গে সঙ্গে পড়ে না। এর প্রভাব পড়ে পরবর্তী বছরগুলোতে। এখন অনেক বেতন বাড়ানো হয়, তার প্রভাবও এখনই পড়বে না। কয়েক মাস পরে গিয়ে পড়বে। এ কারণে বর্তমান সরকার দায়িত্বজ্ঞানহীন কিছু করবে না, যার দায় পড়বে পরবর্তী বাজেটগুলোতে। একই কারণে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প উন্নয়ন বাজেটে নেয়া হচ্ছে না। নতুন মেগাপ্রকল্প নেয়া হচ্ছে না। যে দুই-একটা নেয়া হয়েছে, সেগুলোর প্রক্রিয়া আগে থেকেই চলমান ছিল। যেমন মাতারবাড়ী উন্নয়ন প্রকল্প আমরা অনুমোদন দিয়েছি, সেটাই একমাত্র মেগা প্রকল্প। এটা জাপানের ঋণে হচ্ছে এবং জাপানের ঋণ খুবই দীর্ঘমেয়াদি। ঋণ দায় যাতে না বাড়ে, সেকারণে স্বল্পমেয়াদি এবং উচ্চ সুদে কোনো ঋণ নেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, আগামী বাজেট ব্যবস্থাপনা টেকসই করা কষ্টকর হলেও-ভবিষ্যতে বাজেট ব্যবস্থাপনা টেকসই করতে বিদেশি ঋণের দায় পরিশোধ করা হচ্ছে। যেমন জ্বালানি খাতের অনেক বকেয়া বিল আমরা পরিশোধ করে দিয়েছি। অর্থ সংকটের মধ্যে আমরা দায় পরিশোধ করেছি। ভবিষ্যতে বাজেট ব্যবস্থাপনা টেকসই করতেই এটা করা হচ্ছে।