ঢাকা, ২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৫ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

শেষের পাতা

চ্যালেঞ্জে সৌদি আরবের আর্থিক খাত

মানবজমিন ডেস্ক
২ মার্চ ২০২৫, রবিবার

বৈশ্বিক অর্থনীতি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে পড়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড  ট্রাম্প  ক্ষমতায় এসে একগাদা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকে তালগোল পাকিয়ে গেছে সব। এমন অবস্থা সত্ত্বেও সৌদি আরবের আর্থিক বাজার ঊর্ধ্বমুখী। বুধবারও এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এ সূচক ৬০০০ এর নিচে নেমে গেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ট্রাম্পের পলিসি। এতে তেলের বাজার অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। অব্যাহতভাবে সাপ্লাই চেইনে বিঘ্ন ঘঠছে। এতে ক্রমাগত বিনিয়োগ পড়ছে ঝুঁকিতে। এমন অবস্থায় সৌদি আরবের ‘ভিশন-২০৩০’ এর অধীনে প্রচেষ্টায় বৈচিত্র আনা এবং শক্তিশালী রেগুলেটরি সংস্কারের ফলে এসব চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে সহায়ক হয়েছে সৌদি আরবের জন্য। ২০২৪ সালে সেখানে অর্থনীতি শতকরা ১.৩ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। তেলবিষয়ক কর্মকাণ্ড কমে গেলেও তেলনির্ভর নয় এমন কর্মকাণ্ডে শতকরা ৪.৬ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।  

সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বৃদ্ধি ঘটবে বলেই ধরা হচ্ছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন থেকেই যায়। তা হলো- এমন একটি অপ্রত্যাশিত বিশ্ব পরিবেশের মধ্যে তারা কি বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হবে? এফটিআই কনসালটিং মিডল ইস্ট অ্যান্ড আফ্রিকার নেতা বিকাশ পাপরিওয়াল আরব নিউজকে বলেছেন, এক্ষেত্রে নিজের গন্তব্য সম্পর্কে সৌদি আরব বেশ সচেতন। নবায়নযোগ্য এবং টেকসই জ্বালানির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য গবেষণা, উন্নয়ন ও উদ্ভাবনী কাজের মাধ্যমে জ্বালানি বিষয়ক শিল্পে নেতৃস্থানে নিজেদের ধরে রাখতে পারে সৌদি আরব। বিস্তৃত রেগুলেটরি সংস্কারের মাধ্যমে দেশটির অগ্রগতি লক্ষ্য করা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা, অধিকতর স্বচ্ছতা, স্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগ সহজ করার মাধ্যমে আর্থিক বাজারকে ধরে রাখার জন্য তাদেরকে কঠোরভাবে কাজ করতে হবে। আর্থার ডি. লিটলের আর্থিক সেবা বিষয়ক প্রিন্সিপাল রেজওয়ান শফিক বলেন, ওইসব সংস্কার হলো সবেমাত্র সূচনা। এর মধ্য দিয়ে এটা জোর দিয়ে প্রকাশ করে যে, সামনে যে পথ আছে তা একটি পাওয়ারহাউজ হতে যাচ্ছে।  

কোম্পানি আইন, সিএমএ কৌশলগত পরিকল্পনা, বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দিক-নির্দেশনার মতো রেগুলেটরি সংস্কার করপোরেট স্বচ্ছতা, স্থিতিশীলতা এবং পূর্বানুমানকে উন্নত করতে ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করেছে। সৌদি আরব এখন বৈশ্বিক পর্যায়ে এসব খাতের সঙ্গে যুক্তদের জন্য যোগাযোগের একটি সুযোগ। তিনি বলেন, এরই মধ্যে এক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি করেছে দেশটি। তিনি জোর দিয়ে বলেন-  সৌদি আরবের এমএসসিআই  ইমার্জিং মার্কেটস ইনডেক্স ২০১৯ সালে ছিল শতকরা ২.৭ ভাগ। তা এখন বেড়ে হয়েছে শতকরা ৪ ভাগ। তিনি আরও বলেন, সৌদি এক্সচেঞ্জে বিদেশি মালিকানাধীন বিনিয়োগ গত ৫ বছরে ২৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে এই বিনিয়োগের পরিমাণ ১০০০০ কোটি ডলার। এর অর্থ সৌদি আরবে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

ওদিকে আঞ্চলিক আর্থিক খাতে সৌদি আরবের নেতৃত্ব দেয়ার আকাঙ্ক্ষাও প্রমাণিত। গত কয়েক বছরে তাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক বেশি। এরফলে বৈশ্বিক ১০টি শেয়ারবজারের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে তারা। ২০২৪ সালের শেষের দিকে এই বাজারে পুঁজির পরিমাণ দাঁড়ায় ২.৯ ট্রিলিয়ন ডলার। তারপরও সৌদি আরব অব্যাহতভাবে বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করছে। বিশেষ করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাবলিক অফার (পিও)-এর মাধ্যমে কমপক্ষে ২৫০০ কোটি ডলার সংগ্রহ করেছে। এতে ২০১৯ সালে যুক্ত হয়েছে আরামকো। ডেলোইট মিডল ইস্টের সেরকান তেকের বলেন, ওয়াল স্ট্রিট, লন্ডনের মতো বৈশ্বিক জায়ান্ট প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে তরলীকরণ, প্রতিনিধিত্বশীল খাতগুলোতে বৈচিত্র্য আনা,  স্বচ্ছতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সৌদি আরবকে  তার আর্থিক বাজারের অব্যাহত বিকাশ ঘটাতে হবে। 
 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status