দেশ বিদেশ
মূল্যস্ফীতি কমবে মে মাসের মধ্যে, আশা অর্থ উপদেষ্টার
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবারমূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেগুলোর সুফল আগামী মে মাস নাগাদ মিলতে শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, রোজার সময় একটা মেজর পরিকল্পনা নেয়া হবে। সেটার ফলটা এপ্রিল-মে মাসের দিকে পাওয়া যাবে। পাশাপাশি আগামী বাজেটে ভ্যাটের বিষয়টি সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
আমদানির ফলসহ বিভিন্ন পণ্য ও সেবায় গত মাসে ভ্যাট বাড়িয়েছে সরকার। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকে ফল খালাস বন্ধ রেখেছেন আমদানিকারকরা। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চান, ব্যবসায়ীরা ফল আমদানি বন্ধের হুমকি দিয়েছে, দামও বেড়েছে তিনগুণ, মানুষের হাহাকার লেগে যাচ্ছে; এটা অনুভব করেন কিনা?
উত্তরে উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন বলেন, ফিল করি। তবে যখন বাজেট তৈরি করবো, তখন ভ্যাট নিয়ে একটা কমপ্রিহেনসিভ ব্যবস্থা নেবো। মূল উদ্দেশ্য ছিল এক্সামশন থেকে বেরিয়ে আসা। বহুলোক দিনের পর দিন বহুরকম এক্সামশন ভোগ করছিল। এরমধ্যে হয়তো দুই একটা পণ্য আক্রান্ত হয়েছে। সেটা আমরা চেষ্টা করবো যথাসম্ভব লাঘব করার। তিনি বলেন, আপাতত আমাদের মেইন কনসার্ন হলো- মূল্যস্ফীতিটা যতটা সম্ভব, যত দ্রুত সম্ভব কমিয়ে আনা। সঙ্গে সঙ্গে আয়ের উৎসটা বাড়ানো। কীভাবে বেসরকারি খাতে অর্থায়ন প্রবাহটা বাড়ানো যায় সেটা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করেছি।
অনেকে আবার শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনা করে। শ্রীলঙ্কা আর বাংলাদেশ এক নয়। বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতি হলে শ্রীলঙ্কাকে খুঁজেই পাওয়া যেতো না। এখন আমাদের ১২টা ব্যাংক ফাংশনালি ইফেক্টিভ। ৬০টি ব্যাংকের মধ্যে বাকি ব্যাংকগুলো চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। বিশ্বের কোনো দেশে এরকম হয়েছে?
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এক তৃতীয়াংশ ব্যাংক কাজ করে না। বাংলাদেশের তুলনায় শ্রীলঙ্কা ছিল আরও স্বস্তিকর পরিস্থিতিতে (অ্যা লিটলবিট ইজিয়ার)। সেখানে এত কনফ্লিক্ট ছিল না। সেখানে এত চ্যালেঞ্জ ছিল না। ওখানে যেই গভর্মেন্টই আসে তাদেরকে সাপোর্ট করা হতো। এখানে তো অনেক চ্যালেঞ্জ। অনেকে আমাদের পছন্দ করে না, বলে- ‘চলে যান’। এই সেই বলছে। এর মধ্যেও আমরা চেষ্টা করছি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাংক খাতে অনিয়মের কারণে দেশের আর্থিক অবস্থা শোচনীয় হয়েছে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা যদি কাউন্টার পদক্ষেপগুলো না নিতাম, তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা কিন্তু অকল্পনীয় অবস্থায় চলে যেতো। কোথাও কোনো অর্থ নেই। সব ব্যাংক থেকে অর্থ চলে গেছে। ক্যান ইউ ইমাজিন!
‘পৃথিবীর কোনো দেশে এমন হয়েছে? আমানতকারীর টাকাসহ নিয়ে গেছে। সাধারণত পরিচালকদের টাকা নিয়ে যায়, দিয়ে যায়। এখন তো টাকাই নেই। আমরা সেন্ট্রাল ব্যাংক থেকে দিচ্ছি। এখন প্লান করছি কীভাবে স্পেশাল ফান্ড করে সিএসএমইকে দেয়া যায় বা অন্যদের দেয়া যায়।’
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ। তাদের ভাষ্য, এনআরবিসি ব্যাংকের অর্থ লোপাটের সঙ্গে ছিলেন রাশেদ।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন বলেন, সেগুলো তারা বলুক। আমিও জানি। একেকজন একেক পার্সপেক্টিভে বলবে। যারা লস করেছে, তাদের প্রতি অবশ্যই সিম্প্যাথি আছে। কিন্তু সেটা নতুন চেয়ারম্যানের কারণে না। আগে যাদেরকে দেখেছেন, যেসব চেয়ারম্যান, তারা যেভাবে টাকা নিয়েছে আরকি। সুকুক বন্ডের মাধ্যমে তিন হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছে। এজন্য আমি বলছি যে, আমরা চেষ্টা করবো। শেয়ার মার্কেট, অনেকটুকু উঠেছে। চুরিদারি ধরা পড়ার পর অনেক নেমে গেছে।