শেষের পাতা
চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, পাইলট জাওয়াদ নিহত
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১০ মে ২০২৪, শুক্রবারচট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান ওয়াইএকে-১৩০ বিধ্বস্ত হয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর সংলগ্ন কর্ণফুলী নদীতে তলিয়ে গেছে। এতে পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ নিহত হয়েছেন। আর বিমানে থাকা সহ-পাইলট উইং কমান্ডার সোহান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এতথ্য জানিয়েছে আইএসপিআর। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের অদূরে কর্ণফুলী নদীতে বিমানটি আছড়ে পড়ে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত দুর্ঘটনায় পড়া বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা যায়নি। সূত্রমতে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিমানবাহিনীর ওয়াইএকে-১৩০ নামক যুদ্ধবিমানটি উড্ডয়নকালে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এসময় বিমানটির পেছন দিকে আগুন লেগে যায় এবং চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের অদূরে কর্ণফুলী নদীতে আছড়ে পড়ে।
পতেঙ্গা থানার ওসি কবিরুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, সকাল ১০টা ৩১ মিনিটে বিমানবাহিনী থেকে আমাদের কাছে ফোন আসে। সঙ্গে সঙ্গে আমিসহ আমাদের কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থলে যাই। তারা জানিয়েছেন, প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘বিমানবাহিনীর বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানের পাইলট ও কো-পাইলট প্যারাসুট দিয়ে নেমে এলে তাদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেলা ১২টার দিকে তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসিম জাওয়াদ নামে একজনের মৃত্যু হয়।’ তিনি বলেন, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের সন্ধানে নৌবাহিনীর ডুবুরি, নৌ-পুলিশ, ফায়ার ফাইটাররা কাজ করছেন। আশা করছি সন্ধ্যা ৭-৮টার মধ্যেই আমরা এটাকে খুঁজে পাবো।
নিহত আসিম জাওয়াদের (রিফাত) গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামে। তিনি বাবা-মেয়ের একমাত্র সন্তান। তার বাবা আমান উল্লাহ একজন চিকিৎসক। আর মা নিলুফার খানম সাভার ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা ছিলেন। অসীম নারায়ণগঞ্জে বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রীর নাম অন্তরা আক্তার। অসীমের বাবা-মা মানিকগঞ্জ জেলা শহরের গোল্ডেন টাওয়ারে নিজস্ব ফ্ল্যাটে থাকতেন। আর চাকরিজনিত কারণে আসিম জাওয়াদ (রিফাত) স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানসহ চট্টগ্রামে থাকতেন।
জানা যায়, PT-6 , L-39ZA, F-7MB, F-BG1 ইত্যাদি বিমান চালানোয় দক্ষ অসীম জাওয়াদ ছিলেন ঋ-৭গএ১ এর অপারেশনাল পাইলট ও এলিমেন্ট লিডার। তিনি সাভার ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০০৭ সালে এসএসসি ও ২০০৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
চট্টগ্রাম বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, অসীম ২০১০ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স একাডেমিতে (বাফা) যোগদান করেন। তিনি ২০১১ সালে একজন পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। ওই সময় প্রশিক্ষণে সামগ্রিকভাবে সেরা পারফরম্যান্সের জন্যে তিনি পেয়েছেন গৌরবমণ্ডিত সোর্ড অব অনার।