শেষের পাতা
রিমান্ডে মিল্টন বেশির ভাগ অভিযোগ স্বীকার করেছেন দাবি ডিবি’র
স্টাফ রিপোর্টার
১০ মে ২০২৪, শুক্রবারঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেছেন, চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অধিকাংশ অভিযোগই স্বীকার করেছেন। তিনটি মামলার মধ্যে দু’টি মামলায় আমরা তাকে রিমান্ডে এনেছিলাম। ভুয়া ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি করে মরদেহ দাফনের বিষয়টিও সে স্বীকার করেছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ডিবি প্রধান বলেন, আমরা তাকে সাতদিনের রিমান্ডে এনেছিলাম। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ মিডিয়াতে এসেছে তার অধিকাংশই আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। আমরা তার কাছে আশ্রমে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ডেথ সার্টিফিকেট তৈরির বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। মিল্টন নিজেই বলেছে যে, ভুয়া ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি করে ডাক্তারের সই জাল করে নিজেই সবকিছু লিখে দিতো। তাছাড়া তার আশ্রমে কোনো ডাক্তার ছিল না। অপারেশন থিয়েটারে সে নিজেই ব্লেড, ছুরি দিয়ে কাটাকাটি করতো। আর আশ্রমে আসা অধিকাংশ মানুষজনই প্যারালাইজড কিংবা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার কারণে অস্বাভাবিক আচরণ করতো।
তিনি বলেন, আমরা তার কাছে এসব নিরীহ মানুষকে পেটানোর বিষয়ে জানতে চেয়েছি। সে আমাদেরকে জানিয়েছে, যখন নির্যাতন করা হতো তখন সে ইয়াবা ও মাদক সেবন করে নিতো। এতে করে তখন তার কোনো হিতাহিত জ্ঞান থাকতো না। এই কাজটি যে করা ঠিক হয়নি সেটিও সে আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। ভিআইপিদের সঙ্গে ওঠাবসা থাকার কারণে মিল্টন কাউকেই পরোয়া করতো না জানিয়ে তিনি বলেন, তার এসব কর্মকাণ্ডের মূল শক্তি ছিল ভিআইপিদের সঙ্গে ওঠাবসা। আরও তদন্তের জন্য তার স্ত্রীকে আবারও জিজ্ঞাসা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
হারুন অর রশীদ বলেন, ৯০০ লাশ দাফন করা হয়েছে- এমন ভিডিও মিল্টন মানুষের সহানুভূতি ও টাকার জন্য করেছে। আমরা তার কাছে ৯০০ লাশ কোথায় কবর দেয়া হয়েছে- সেটি জানতে চেয়েছি। পরে সে নিজের মুখে ১৩৫টি লাশ দাফনের কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু সেসব লাশের ব্যাপারেও কোনো ধরনের প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি। এগুলো আমরা আরও তদন্ত করবো। অনাথ-অসহায় মানুষের এসব ভিডিও ফেসবুকে দিয়ে সে মানুষের বিবেকে নাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আর মানুষজন তাকে বিশ্বাস করে বিকাশ-নগদের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছে। সবকিছুই আমরা বের করেছি। আমাদের আরও কিছু তথ্য জানার আছে। প্রয়োজনে তাকে আবারও রিমান্ডে আনবো। সমাজে এ ধরনের কাজ আরও যারা করছেন তাদের ব্যাপারেও আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আমরা দেখেছি মানুষের কাছ থেকেই কোটি কোটি টাকা এনে নিজের অ্যাকাউন্টে রেখে দিয়েছে। কারা তাকে সহযোগিতা করেছে সেসব বিষয়েও আমরা বের করবো।