শেষের পাতা
সিরিজ জয়েও টপ অর্ডারে অস্বস্তি
স্পোর্টস রিপোর্টার
৮ মে ২০২৪, বুধবারজিতলেই সিরিজ নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা তিন জয়ে শেষ পর্যন্ত দুই ম্যাচ বাকি রেখেই সিরিজ নিজেদের করেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। তবে এ এমন জয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার সুযোগ নেই টাইগারদের। গতকাল চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে নড়বড়ে ব্যাটিংয়ে সফরকারীদের ১৬৫ রান তোলে ৫ উইকেট হারিয়ে। জবাব দিতে নেমে জিম্বাবুয়ে খেলে পুরো ২০ ওভার। কিন্তু জয় থেকে ৯ রান দূরেই শেষ হয় তাদের ইনিংস যদিও হাতে একটি উইকেট ছিল তাদের হাতে। অন্যদিকে বিশ্বকাপের আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে স্বাগতিকরা। কিন্তু টানা তিন ম্যাচ জিতলেই দলের ব্যাটিং মুক্ত হতে পারেনি চিন্তার কালো মেঘ থেকে। বিশেষ করে ওপেনার লিটন দাস তার ব্যাট থেকে এসেছে তিন ম্যাচে ৩৬ রান। এছাড়াও ওয়ান ডাউনে নামা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এখনো ফর্মে ফিরতে ধুঁকছেন।
সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাতীয় দলের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ তার তার ভালো লাগেনি। বরঞ্চ লিটন, শান্তদের ব্যাটিং দেখে তিনি ভয় পেয়েছেন। তিন ম্যাচে দলের সেরা ব্যাটার ও অধিনায়ক শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে তিন ম্যাচে ৪৩ রান। টপঅর্ডার ব্যর্থ হলেও সিরিজে এখন পর্যন্ত নিজেদের শক্ত অবস্থানে মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা। ৬০ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে টেনেছেন তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলী অনিক। ৫৮ বলে ৮৭ রানের জুটি গড়েন দু’জন। দু’জনই অবশ্য আউট হয়েছেন। তবে দলের স্কোর বোর্ডে রেখেছেন বড় অবদান। তার আগে পাওয়া প্লের ৬ ওভারে বাংলাদেশ ২ উইকেট হারিয়ে তোলে ৪২ রান স্বাগতিকরা। তামিম ও লিটন এর জুটিতে প্রথম ৩ ওভারে ২২ রান আসে। কিন্তু চতুর্থ ওভারে গিয়ে লিটন পাগলামি শুরু করেন। ব্লেসিং মুজারাবানির দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে স্কুপ করতে গিয়েও সেটি ঠিকঠাক করতে পারেননি। টানা তৃতীয় বলে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন ১৫ বল খেলে ২ চারে কেবল ১২ রান করে। এরপর শান্ত ও তামিমও ফিরে যান বাজে শটে আউট হয়ে। তবে হৃদয় ৩৮ বলে ৫৭ ও জাকের ৪৩ বলে ৪৪ রান করে দলর মান রক্ষা করেন। এ দু’জনের বিদায়ে পর ৯ রানে মাহমুদউল্লাহ ও রিশাদ ৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
অন্যদিকে ১৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৬৬ রানে ৫ উইকেট হারালেও ম্যাচ জমিয়ে তোলে জিম্বাবুয়ে। যদিও রান তাড়ায় নেমেও প্রথম দুই ম্যাচের মতো ব্যাটিংয়ের চেহারায় খুব একটা বদল আসেনি। গতকালও পাওয়ার প্লেতে হারিয়ে ফেলে ৩ উইকেট। বল হাতে দল সাফল্যের শুরুটা এনে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তার বলে পুল করতে গিয়ে ৮ বলে ৯ রান করা জয়লর্ড গাম্বি থার্ড ম্যানে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ। এরপর ৮ বলে ৫ রান করা ব্রায়ান বেনেটের ক্যাচ নিজের বলে নিজেই নেন তানজিম হাসান সাকিব। এরপর তৃতীয় শিকার সাইফউদ্দিনের। ৭ বলে ৭ রান করা ক্রেইগ আরভিনকে বোল্ড করেন তিনি। তিন উইকেট হারিয়ে ফেলার পর চাপে পড়া দলকে আরও একবার টেনে তুলতে ব্যর্থ হন জিম্বাবুয়ের জন্য লম্বা সময় ধরে ভরসা হওয়া অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। রিশাদ হোসেনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৫ বলে কেবল ১ রান করেন তিনি।
তবে একপ্রান্তে উইকেট যাওয়ার মিছিলে আরেক প্রান্ত আগলে রাখেন তাদিওয়ানাসে মারুমি। ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৬ বলে ৩১ রান করা এই ব্যাটারকে ফেরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার বলে দারুণ এক ক্যাচ নেন সাইফউদ্দিন। আগের জনাথন ক্যাম্পবেল নেমে ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করেন। ২ চার ও সমান ছক্কায় ১০ বলে ২১ রান করেন তিনি। টানা তৃতীয় বলে তানভীর ইসলামকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে বাউন্ডারির কাছে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তার বিদায়ের পর জিম্বাবুয়ের হয়ে শেষ লড়াইটুকু লড়েন ফারাজ আকরাম। বাংলাদেশের মনে ভয়ও ধরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার সঙ্গে নবম উইকেট ৩০ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েন দু’জন। শেষ ছয় ওভারে ৭৫ রান দরকার ছিল জিম্বাবুয়ের। সেখান থেকে শেষ ওভারে ২১ রানের সমীকরণে নিয়ে আসেন তারা। যদিও প্রথম বলেই ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে ইয়র্কারে বোল্ড করেন সাইফউদ্দিন। পরে টানা দুই বলে বাউন্ডারি হজম করার পর স্লোয়ার বাউন্সারে ডট দেন তিনি। এরপর সিঙ্গেলস নিয়ে আকরামকে স্ট্রাইক দেন মুজারাবানি। শেষ বলে দুই রানের বেশি নিতে পারেননি তিনি। ১৯ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন আকরাম।