বাংলারজমিন
লাখাইয়ে কাবিখা প্রকল্পে পুকুর চুরি
কাজ না করেই বিল উত্তোলন
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে
৭ মে ২০২৪, মঙ্গলবারহবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার কাবিখা প্রকল্পে পুকুর চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই প্রকল্পের আওতায় ৯টি প্রকল্পে ৫৯৪ টন চাল বরাদ্দ হয়। হাওরে নামেমাত্র কাজ করে ইতিমধ্যে বিল উত্তোলন করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে আত্মসাতের তথ্য ফাঁস হয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম রাকিব যোগদানের পর। হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার ২০২২-২৩ অর্থ বছরের কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির বিশেষ প্রকল্পে (কাবিখা) ৫৯৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। যার মূল্য ২ কোটি ৩৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু নামেমাত্র হাওরের কিছু কিছু জায়গায় মাটি ভরাটের কাজ করে ইতিমধ্যেই টাকা উত্তোলনও করেন ৪ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। প্রকল্পের উল্লেখিত অধিকাংশ জায়গায় কোনো কাজ হয়নি। তৎকালীন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আলী নুরের আমলেই এ প্রকল্পের সকল অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পরে ২০২৩ সালের ২৩শে নভেম্বর তিনি মানিকগঞ্জ উপজেলায় বদলি হয়ে যান। এর আগেই এ প্রকল্পের সকল নথিপত্র সরিয়ে রেখে টাকা হজম করে নেন আত্মসাৎকারীরা।
উপজেলার বামৈ, মুড়িয়াউক, করাব ও বুল্লা ইউনিয়ন পরিষদে কাবিখার এ বিশেষ প্রকল্পের ৫৯৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পায় ওই ইউনিয়নগুলো। কিন্তু আত্মসাতের অভিযোগ উঠলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়েছেন বাকি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা। তবে চেয়ারম্যানদের দাবি নামেমাত্র প্রকল্প তাদের নামে হলেও কাজ করেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বিশেষ প্রকল্পে ৮টি গ্রামীণ সড়ক ও ১টি মাঠ তৈরির জন্য ২ কোটি ৩৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
বামৈ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন ফুরুক জানান, কাবিখার বিশেষ প্রকল্পের বরাদ্দ আমার ইউনিয়ন পেলেও সেই কাজ করেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসের লোকজন। কি কাজ হয়েছে তা আমি নিজেও জানি না, তবে এরই মধ্যে আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। যথাযথভাবে হাওরের রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজ করেছি। তবে এই কাজের বিপরীতে কোনো ধরনের নথিপত্র আমার কাছে নেই।
লাখাইয়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম রাকিব জানান, প্রকল্পে কোনো ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রমাণিত হলে আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিউল আলম আজাদ জানান, এ কাজের দায়দায়িত্ব ইউএনও ও পিআইও’র। তাদের তদারকিতেই কাজ হয়েছে। আমি শুধু তারা স্বাক্ষর দেয়ার পর বিলে স্বাক্ষর দিয়েছি। তবে কাজ সঠিকভাবেই হয়েছে বলে আমি মনে করি।
অন্যদিকে লাখাই ইউএনও নাহিদা সুলতানা জানান, পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। কাজের দায়দায়িত্ব ও তাদের। কোনো অনিয়ম হলে তারাই এর জবাবদিহিতা করবেন।