ঢাকা, ১৯ মে ২০২৪, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

অনলাইন

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র ছায়া সংসদে এলজিইডি মন্ত্রী

রাজনৈতিক দলগুলো কথা বলা বন্ধ রাখলে গণতন্ত্র পিছিয়ে পড়বে

স্টাফ রিপোর্টার

(১ সপ্তাহ আগে) ৫ মে ২০২৪, রবিবার, ৭:৫২ অপরাহ্ন

mzamin

মৃত ব্যক্তি বা শিশুদের ভোট দেয়ার বিষয়টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, এটা কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিইডি) মন্ত্রী মো তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন,  সব দলের মধ্যে কথা বলা ও ডিবেট করার মাধ্যমেই গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কথা বলা বন্ধ থাকলে গণতন্ত্র পিছিয়ে পড়বে।
রোববার ঢাকার এফডিসিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিযোগিতার আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। 

এলজিইডি মন্ত্রী আরও বলেন,  স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বা নির্দলীয় প্রার্থীতা উভয় ক্ষেত্রেই ভালো মন্দ আছে। এ নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়া বা না হওয়া কোনোটাই আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। সময়ের প্রেক্ষাপটে অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়। নির্বাচন ব্যবস্থাও পরিবর্তিত হতে পারে। বাংলাদেশ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গণতান্ত্রিক দেশ হয়েছে এটা মনে করি না। তবে গণতন্ত্র চর্চার পথে আছে। অন্য দলের মাঝে যদি ভালো কিছু থাকে তা গ্রহণ করার মানসিকতাই গণতন্ত্র চর্চা।

বিজ্ঞাপন
সব দলের মধ্যে কথা বলা ও ডিবেট করার মাধ্যমেই গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কথা বলা বন্ধ থাকলে গণতন্ত্র পিছিয়ে পড়বে। রাতারাতি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শতভাগ সুসংহত করা সম্ভব নয়। নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা, কানাডা, ভারতসহ অনেক দেশে বিতর্ক রয়েছে। নেদারল্যান্ডে ভোট কম পড়ায় পুনরায় নির্বাচন করতে হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন,  যারা নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলে তারা যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে কীভাবে তা বাস্তবায়ন হবে। পাকিস্তানে ইমরান খানের দলকে ব্যান্ড করার পরেও তারা নানা কৌশলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। 
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারো বিএনপি ও তার শরিকরা উপজেলা নির্বাচন বর্জন করেছে। বিএনপি নির্বাচনে আসলে এ নির্বাচন আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হতো। আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে মন্ত্রী এমপিদের আত্মীয় স্বজন উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার হুঁশিয়ারি দিলেও তা অনেক জায়গায় মানা হচ্ছে না। বেশ কয়েক জায়গায় মন্ত্রী এমপিদের ছেলে, ভাই, ভাগ্নেরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন বলি আর স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন বলি সব ক্ষেত্রেই মানি, মাসেল, পাওয়ার নির্বাচনের প্রধান অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে লড়াইটা হবে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ। এ লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের যে নেতার ক্ষমতা, অর্থবিত্ত বেশি তিনিই জয়ের মালা পরবেন বলে মনে করা হয়।

কিরণ আরও বলেন, এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রচুর অর্থ ব্যয় করে নির্বাচিত হতে হয় । ফলে নির্বাচনে ব্যয় করা অর্থ উঠানোর জন্য কেউ কেউ অসৎ উপায় অবলম্বন করে থাকে। এতে সাধারণ মানুষকে সেবা পেতে অর্থ ব্যয়সহ নানা রকম দেন দরবার করতে হয়, যা মোটেই কাম্য নয়। এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের জামানত ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করায় অনেক ছোট ছোট দলের প্রার্থীরা মনঃক্ষুণœ হয়েছে। নির্বাচন কমিশন জামানত বাড়ানোর বিষয়টি স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে নিলে এ ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হতো না। সুশাসন নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকারকে শুধু শক্তিশালী করলেই হবে না। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দুনীর্তিমুক্ত করা ছাড়া স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের ইমেজ সংকট রয়েছে। এক সময় আমরা দেখতে পেতাম শিক্ষিত সৎ, গণ্যমান্য ব্যক্তিরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করতেন। অর্থ উপার্জনের জন্য তারা জনপ্রতিনিধি হতে চাইত না। রাজনৈতিক পরিচয়ের চেয়ে তার জনপ্রিয়তা, সততা, শিক্ষা দীক্ষা মানুষকে আকৃষ্ট করতো। 

তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে রাজনৈতিক ঐক্যের প্রয়োজন। সব দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জরুরি। তার জন্য সব রাজনৈতিক পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। যেখানে ভিন্নমত থাকলেও বিতর্ক হবে। বিতর্কের মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক বিরোধের মীমাংসা করা যাবে। উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ইউএনওদের মধ্যে ক্ষমতা প্রয়োগে যে অলিখিত দ্বন্দ্ব রয়েছে তার অবসান হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে সংসদ সদস্যদেরও স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের ওপর প্রভাব বিস্তারের যে  অভিযোগ রয়েছে তা দূর করতে হবে। নারী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানদের ক্ষমতায়ন করতে হবে। নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশীদারিত্ব বাড়াতে হবে। 

“ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘নির্দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে” শীর্ষক ছায়া সংসদে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক মশিউর রহমান খান, সাংবাদিক মো. হুমায়ুন কবীর ও সাংবাদিক সাদিয়া আফরোজ। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

ইউকে-বাংলাদেশ ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তিতে সম্মত / বৃটেন থেকে ফেরত পাঠানো হবে ১১ হাজার বাংলাদেশিকে

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status