খেলা
৫ গোল খেয়ে ম্যারাডোনা-রোনালদিনহোদের উদাহরণ দিলেন চেলসি কোচ
স্পোর্টস ডেস্ক
(১ সপ্তাহ আগে) ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ৪:০২ অপরাহ্ন
আর্সেনালের বিপক্ষে নাকাল হলো নগর প্রতিদ্বন্দ্বী চেলসি। মঙ্গলবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে লন্ডন ডার্বিতে আর্সেনালের মাঠে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয় অল ব্লু শিবির। ম্যাচ শেষে কোচ মাউরিসিও পচেত্তিনো অকপটেই বলেন, ‘একটা পর্যায়ে দল হাল ছেড়ে দিয়েছে’। তবে এজন্য ফুটবলারদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে নারাজ চেলসির আর্জেন্টাইন কোচ। তার মতে, ফুটবলে এরকম বাজে দিন সব দলেরই আসতে পারে। নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের গ্রেট ফুটবলারদের কখনও কখনও ভেঙে পড়ার উদাহরণও তুলে ধরলেন তিনি।
এমিরেটস মাঠে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে চেলসি। প্রথমার্ধে গোল ছিল ওই একটিই। দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম ১২ মিনিটের মধ্যে তারা গোল হজম করে আরও দুটি। এরপরই চেলসি রণে ভঙ্গ দিয়ে ফেলে। ম্যাচ শেষে কোচ পচেত্তিনো বলেন, “মাঝবিরতিতে আমরা কথা বলেছি যে, কীভাবে একটি ম্যাচ এভাবে শুরু করা উচিত নয়।
তিন গোল হজমের পর যদি হাল ছেড়ে দেয় কোনো দল, তাদের মানসিকতাও তখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তবে দলকে সেই অপবাদও দিচ্ছেন না পচেত্তিনো। চেলসি কোচ এটিকে বলছেন ফুটবলের স্বাভাবিক ঘটনা, যা অনেক বড় ফুটবলারদের ক্ষেত্রেও হয়েছে। পাঁচ গোল হজমের পর ম্যারাডোনা-রোনালদিনহোর উদাহরণ দিলেন চেলসি কোচ। পচেত্তিনো বলেন, “নাহ, এটা মানসিকতার ব্যাপার নয়। আমিও ফুটবল খেলেছি এবং এরক পরিস্থিতিতে অনেক বড় ফুটবলার ও অভিজ্ঞ ফুটবলারদের দেখেছি। ম্যারাডোনা, রোনালদিনহো, বাতিস্তুতার সঙ্গে খেলেছি। মৌসুমের কোনো একটা পর্যায়ে এই ধরনের ব্যাপার ঘটতে পারে এবং মনে হতে পারে, ‘হ্যাঁ, ওরা পারফরম্যান্সের চূড়ায় আছে, কিছু করার নেই।”
৫২ বছর বয়সী কোচ বলেন, “কখনও কখনও প্রতিপক্ষের পারফরম্যান্সের মাত্রা, নিজেদের প্রাণশক্তির ঘাটতি, কোনো কিছুই পক্ষে না পাওয়া, এসব কারণে ম্যাচে ইতিবাচক কোনোকিছুই খুঁজে পাওয়া যায় না এবং তখন এই ধরনের ফলাফল হয়ে থাকে। অন্য দলগুলির ক্ষেত্রেও এরকম হয় এবং সামনেও হবে।”
দলবদলের বাজারে কোটি কোটি ডলার খরচ করলেও বয়স ও অভিজ্ঞতার দিক থেকে চেলসি এখনও বেশ তরুণ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের এবার দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ স্কোয়াড তাদের। সেটিও আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন পচেত্তিনো। তিনি বলেন, “ফুটবলারদের দোষ দিতে পারি না আমরা, ওদেরকে দায় দেব না আমি। প্রিমিয়ার লীগ জয়ের লড়াইয়ে থাকা দলের বিপক্ষে মাঠে নেমে এরকম পরিস্থিতির শিকার হওয়ার জন্য তরুণ এক দলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাব না আমি। অবশ্যই আমরা হতাশ নিজেদের পারফরম্যান্সে। তবে এমন কিছু বলব না, আমাদের দল, ফুটবলার ও স্কোয়াডের জন্য যা অন্যায্য।”
এই মৌসুমে কখনও কখনও দু-এক ম্যাচে জ্বলে উঠতে পেরেছে চেলসি। তবে সেই ধারাবাহিকতা তারা ধরে রাখতে পারেনি। সেটি তুলে ধরেই উন্নতির তাগিদ জানালেন পচেত্তিনোও। তিনি বলেন, “অসাধারণ পারফরম্যান্স করার সামর্থ্য আমাদের আছে, তিন দিন পর আবার উল্টোটা দেখাই আমরা। যখন আমাদের বাজে দিন যায়, তা খুবই বাজে হয়। যখন আমরা ভালো খেলি, যে কোনো কিছুই করতে পারি। এটা অন্য ব্যাপার যে, ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের ধারাবাহিকতা বাড়াতে হবে আমাদের।”
প্রিমিয়ার লীগে ৩৪ ম্যাচে ২৪ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে ৭৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল। এক ম্যাচ কম খেলা লিভারপুল ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। শিরোপাধারী ম্যানচেস্টার সিটির সংগ্রহ ৩২ ম্যাচে ৭৩ পয়েন্ট। আর ৩২ ম্যাচে ১৩ জয় ও আট ড্রয়ে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে আছে চেলসি।