ঢাকা, ৯ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শরীর ও মন

গোড়ালিতে অতিরিক্ত হাড় দেখা গেলে

ডা. জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন
৩০ মার্চ ২০২৪, শনিবার

শরীরে বিভিন্ন হাড়ে অতিরিক্ত হাড় গজায়। এদের মধ্যে ক্যালকেনিয়াম (পায়ের হাড়) অন্যতম। সাধারণত অতিরিক্ত হাড় গোড়ালির নিচে ও পেছনে গজায়। এ অতিরিক্ত হাড়কে ক্যালকেনিয়াম স্পার বলে। পায়ের সবচেয়ে বড় হাড় ক্যালকেনিয়াম যা দাঁড়ালে বা হাঁটলে প্রথম মাটির সংস্পর্শে আসে এবং শরীরের পূর্ণ ওজন বহন করে। এর যেকোনো ক্ষুদ্র অসঙ্গতির ফলে বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়।

অতিরিক্ত হাড় হওয়ার কারণসমূহ:  
অসঙ্গতিপূর্ণ জুতা পরিধান করলে স্পার হয়। লেগের পেশি দুর্বল হলে পায়ের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। ফলে স্পার তৈরি হয়। দীর্ঘদিন ধরে প্লান্টার ফাসা ও টেনডনের প্রদাহ হলে গোড়ালিতে অতিরিক্ত হাড় গজায়। শরীরে অতিরিক্ত ওজন থাকলে স্পার হওয়ার সম্ভাবনা  বেশি।

বিজ্ঞাপন
বিভিন্ন ধরনের আর্থ্রাইটিস যেমন- রিউমাটয়েড ও অসটিওআর্থ্রাইটিসে হিল স্পার হয়। অনেকের বংশানুক্রমিকভাবে স্পার তৈরি হয়।

উপসর্গ: প্রধান উপসর্গ হলো ব্যথা। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বা অনেকক্ষণ বসার পর পা ফেলতে গেলেই ব্যথা শুরু হয়। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলে ব্যথা আস্তে আস্তে কমে আসে। বিশ্রাম অবস্থায় ব্যথা থাকে না। অনেক সময় ব্যথা এত তীব্র হয় যে, পায়ে ভর দেয়া যায় না। অতিরিক্ত হাড় পেশি, টেনডন, ফাসা, রক্তনালী ও সড়বায়ুকে ট্রাকশন ইনজুরি করে। ফলে ব্যথাসহ টিস্যু জমে থাকে। কখনও কখনও পায়ের তলা লাল হয়, হিলপ্যাড শুকিয়ে যায় এবং পা ফ্ল্যাট হয় অর্থাৎ পায়ের আর্চ নষ্ট হয়ে যায়।

করণীয়: উপযুক্ত মাপের ও নরম জুতা পরিধানে উপসর্গ বা ব্যথা লাঘব হবে। হিল ও আর্চ সাপোর্ট জুতা পরিধান করা একান্ত প্রয়োজন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর আড়াআড়িভাবে পায়ের তলা ম্যাসাজ করতে হবে। দিনে দুইবার কুসুম গরম পানির সেঁক বা ঠাণ্ডা সেঁকে উপসর্গ নিরাময় হবে। পায়ের তলার ও লেগের পেশির স্ট্রেসিং, নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে। অ্যানালজেসিক ওষুধ সেবনে ব্যথা কমে আসবে। কখনো কখনো স্থানীয়ভাবে স্টেরয়েড ইনজেকশন পুশ করলে ব্যথা দ্রুত নিরাময় হয়। ইনজেকশন পুশ করতে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, অন্যথায় হিলপ্যাড (গোড়ালি) শুকিয়ে যাবে এবং রোগ ত্বরান্বিত হবে। ফিজিক্যাল  থেরাপি যেমন এসডব্লিউডি, ইউএসটি এবং ওয়াক্স বাথ ব্যবহারেও উপকার পাওয়া যায়। তবে দুঃখের বিষয়, রোগের পুনরাবৃত্তি ঘটে; কারণ হাড়ের বৃদ্ধি কিছুটা কমিয়ে আনা যায় কিন্তু বিদ্যমান স্পার বা হাড়কে সমূলে নিঃশেষ করা যায় না।
আর্থ্রোস্কোপিক সার্জারি: মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো না হলে, রোগের পুনরাবৃত্তি হলে, হিলপ্যাড শুকিয়ে গেলে, পায়ে ভর দিতে অসুবিধা হলে এবং হাড় বাড়তে থাকলে আর্থ্রোস্কোপিক সার্জারির প্রয়োজন হয়। গোড়ালির দুই পার্শ্বে ছোট ছিদ্র দিয়ে আর্থ্রোস্কোপ প্রবেশ করিয়ে অতিরিক্ত হাড় সেভিং করে বের করা হয় এবং প্ল্যান্টার ফাসা বিচ্ছেদ করা হয়। এতে রোগের উপসর্গ দ্রুত লাঘব হয়।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগ
হাড় ও জোড়া বিশেষজ্ঞ এবং আর্থ্রোস্কোপিক সার্জন, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), ঢাকা।

চেম্বার: বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল লি., শ্যামলী, মিরপুর রোড, ঢাকা-১২০৭।
হটলাইন: ১০৬৩৩, ০১৭৪৬-৬০০৫৮২।

 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status