প্রথম পাতা
‘সংখ্যালঘুর অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের ভূমিকা আশানুরূপ নয়’
স্টাফ রিপোর্টার
৬ মার্চ ২০১৬, রবিবার, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন
সারা দেশে সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিরাপত্তাহীন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, এ সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের ভূমিকা আশানুরূপ নয়। গতকাল দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির গোলটেবিল মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর মানবাধিকার পরিস্থিতি-২০১৫’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের নারী পুরুষদের খুন, ধর্ষণ, নারী অপহরণ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরিতকরণসহ ২৬২টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে এবং এসব ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার সংখ্যা কমপক্ষে ১৫৬ টি। বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও এইচআরসিবিএম সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। এসময় আরও জানানো হয়, সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার ও নিপীড়নের অধিকাংশ ক্ষেত্রে সন্ত্রাসীরা রাজনৈতিক পরিচয় ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করেছে।
লিখিত বক্তব্যে রানা দাসগুপ্ত জানান, বিভিন্ন হামলার ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৪ জন, আহত হয়েছেন ২৩৯ জন, অপহরণের শিকার হয়েছেন ২৪ জন সংখ্যালঘু নারী, যাদের মধ্যে ৯ জনকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৫ জন। তাদের মধ্যে ১০ জন গণধর্র্ষণের শিকার, দুজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। তিনি জানান, ২০১৫ সালে সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের জমিজমা, ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, দখল ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ২০৯টি। এর মধ্যে উচ্ছেদের শিকার হয়েছে ৬০টি পরিবার। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩১টি। প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে ১৮০টি।
সংঘটিত ঘটনার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুষ্কৃতকারীরা রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রভাবকে ব্যবহার করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিতাড়ন, উচ্ছেদ, সেই লক্ষ্যে সম্পত্তি দখল ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। এমনকি কখনও কখনও রাষ্ট্রের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি বা তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় এই হামলার খবর প্রকাশিত হলেও আজ পর্যন্ত কোনো ঘটনার বিচার হয়নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দল যখনই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সংখ্যালঘুদের বিষয়ে তাদের যেন একটি দৃশ্যমান মিল পরিলক্ষিত হয়। রানা দাসগুপ্ত আরও বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের মাত্রা বাড়লেও একদিকে যেমন ঘটনার বিচার হচ্ছে না, অন্যদিকে বিচারের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা ও ক্ষেত্র বিশেষে বিচারহীনতা এই সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলেছে।
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের সংবিধান দেশের সব নাগরিকের নিজ নিজ ধর্ম পালন করার স্বীকৃতি দিলেও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে পারেনি। ফলে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের ওপর উপর্যুপরি এই হামলার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। তিনি বলেন, বিগত ৪৪ বছর ধরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেনি, বরং তা প্রায় প্রতি বছরই থেকেছে উদ্বেগজনক। সংবাদ সম্মেলনে রানা দাসগুপ্ত বলেন, আমরা চাই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিক সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের ভূমিকা আশানুরূপ নয়। আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় নীতিমালা ও সামাজিক অনুশাসনে বহুত্ববাদের স্বীকৃতি ও চর্চার বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত হয়েছে। যার ফলে এ দেশের সংখ্যালঘুরা নিজ দেশেই ঐতিহাসিক কাল ধরে বসবাস করা সত্ত্বেও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে তাদের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের নেতা ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীসহ অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের নারী পুরুষদের খুন, ধর্ষণ, নারী অপহরণ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরিতকরণসহ ২৬২টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে এবং এসব ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার সংখ্যা কমপক্ষে ১৫৬ টি। বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও এইচআরসিবিএম সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। এসময় আরও জানানো হয়, সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার ও নিপীড়নের অধিকাংশ ক্ষেত্রে সন্ত্রাসীরা রাজনৈতিক পরিচয় ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করেছে।
লিখিত বক্তব্যে রানা দাসগুপ্ত জানান, বিভিন্ন হামলার ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৪ জন, আহত হয়েছেন ২৩৯ জন, অপহরণের শিকার হয়েছেন ২৪ জন সংখ্যালঘু নারী, যাদের মধ্যে ৯ জনকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৫ জন। তাদের মধ্যে ১০ জন গণধর্র্ষণের শিকার, দুজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। তিনি জানান, ২০১৫ সালে সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের জমিজমা, ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, দখল ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ২০৯টি। এর মধ্যে উচ্ছেদের শিকার হয়েছে ৬০টি পরিবার। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩১টি। প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে ১৮০টি।
সংঘটিত ঘটনার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুষ্কৃতকারীরা রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রভাবকে ব্যবহার করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিতাড়ন, উচ্ছেদ, সেই লক্ষ্যে সম্পত্তি দখল ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। এমনকি কখনও কখনও রাষ্ট্রের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি বা তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় এই হামলার খবর প্রকাশিত হলেও আজ পর্যন্ত কোনো ঘটনার বিচার হয়নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দল যখনই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সংখ্যালঘুদের বিষয়ে তাদের যেন একটি দৃশ্যমান মিল পরিলক্ষিত হয়। রানা দাসগুপ্ত আরও বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের মাত্রা বাড়লেও একদিকে যেমন ঘটনার বিচার হচ্ছে না, অন্যদিকে বিচারের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা ও ক্ষেত্র বিশেষে বিচারহীনতা এই সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলেছে।
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের সংবিধান দেশের সব নাগরিকের নিজ নিজ ধর্ম পালন করার স্বীকৃতি দিলেও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে পারেনি। ফলে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের ওপর উপর্যুপরি এই হামলার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। তিনি বলেন, বিগত ৪৪ বছর ধরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেনি, বরং তা প্রায় প্রতি বছরই থেকেছে উদ্বেগজনক। সংবাদ সম্মেলনে রানা দাসগুপ্ত বলেন, আমরা চাই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিক সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের ভূমিকা আশানুরূপ নয়। আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় নীতিমালা ও সামাজিক অনুশাসনে বহুত্ববাদের স্বীকৃতি ও চর্চার বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত হয়েছে। যার ফলে এ দেশের সংখ্যালঘুরা নিজ দেশেই ঐতিহাসিক কাল ধরে বসবাস করা সত্ত্বেও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে তাদের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের নেতা ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীসহ অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।