অনলাইন

উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে যুক্তরাজ্যের ছাত্রদের

নিজস্ব সংবাদদাতা

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, সোমবার, ৯:৩০ পূর্বাহ্ন

করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা এখন কার্যত বন্দি। ক্রমশ তাদের উদ্বেগ বাড়ছে । ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১,৭০০ জন শিক্ষার্থী এবং এডিনবার্গ ও গ্লাসগো সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী কোভিড -১৯-এর প্রাদুর্ভাবের পরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। বাড়ি যাবার চেষ্টা করেও তারা ব্যর্থ হচ্ছেন কারণ নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের বাধা দিচ্ছে। যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জানিয়েছে যে, শিক্ষার্থীদের সুস্থতার দিকটিকে এখন তারা অগ্রাধিকার দিচ্ছে । এডুকেশন সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান রবার্ট হ্যালফন বলেছেন, ডান্ডি থেকে এক্সেটার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তিন হাজার শিক্ষার্থী কার্যত তালাবন্ধ অবস্থায় ছিলেন। হ্যালফন ইতিমধ্যেই নীতি নির্ধারণ কমিটির কাছে এই প্রস্তাব রেখেছেন , অভিভাবকদের আশ্বস্ত করার জন্য গৃহবন্দি শিক্ষার্থীদের যেন ক্রিস্টমাসের আগে বাড়ি পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হয়, নাহলে বিপত্তি হতে পারে আগামীদিনে। পাশাপাশি যারা এখন ক্লাস করছে না তাদের টিউশন ফি- তে ছাড়ের বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ম্যানচেস্টার মেট জানিয়েছে যে বার্লি এবং কেমব্রিজ হলগুলোতে থাকার আগে শিক্ষার্থীদের কোভিড টেস্ট করার পর ১৪ দিনের সেলফ আইসোলেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেখানকার কয়েকজন ছাত্র জানিয়েছেন, এই নোটিশ পাবার পর তাদের মধ্যে অনেকেই বাড়ি যাবার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছিলেন, কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের জানিয়ে দেয় এভাবে তারা চলে যেতে পারবে না। প্রথম বর্ষের ছাত্র যে বায়ার্ন জানিয়েছেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের আগে কোনো খবর দেয়া হয়নি, কোনো পরামর্শ দেয়া হয়নি। কীভাবে আমরা খাবার পাবো সেবিষয়েও কোনো তথ্য ছিল না । আমরা এখন সম্পূর্ণ অন্ধকারে আছি। জানি না আগামীদিনে কী হবে আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কার্যত আটকে রাখা হয়েছে । ‘মেগান টিঙ্গি নামের এক ছাত্রী বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলেন। তার দাবি লকডাউনের সময়ে এভাবে গৃহবন্দি থাকার বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো নোটিশ তারা পাননি। তাই ঘর থেকে বেরিয়ে যখন রাতে ফিরে আসেন তখন তিনি দেখেন তার ঘরের বাইরে তালা ঝুলছে, পরে পুলিশের সাহায্যে এই সমস্যা থেকে তিনি মুক্ত হন। এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিস চেম্বারলাইন বলেছেন, একজন পড়ুয়ার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরে হল্যান্ড হাউসে তার পুরো ব্লকটি আলাদা করে দেয়া হয়েছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন কিছু পজিটিভ কেস সামনে আসার পর সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে হলের একাংশ আলাদা করে দেয়া হয়েছে। তবে সেখানে যারা সেলফ আইসোলেশনে আছে তাদের খাবার এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জো গ্রেডি ম্যানচেস্টার মেটের এই লকডাউনটিকে ‘এই সপ্তাহের সর্বশেষ বিপর্যয় বলে বর্ণনা করেছেন'। তিনি আরও বলেন, ‘পনেরো দিনের জন্য শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে উৎসাহিত করার কোনও অর্থ নেই’। ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব স্টুডেন্টস (এনইউএস) বলেছে, এই পরিস্থিতিতে ছাত্রদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া সবথেকে বুদ্ধিমানের কাজ হবে, কারণ এভাবে আইসোলেট থাকতে থাকতে তাদের মধ্যে উদ্বেগ এবং মানসিক অবসাদ দুইই বাড়ছে। ছাত্রদের পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ করা এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুরোধ করেছে এনইউএস। দেশের শিক্ষা দফতর জানিয়েছে , সরকার এ বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করছে, খুব শীঘ্রই শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফিরে যাবার বিষয়টি নিশ্চিত করতে জরুরি আলোচনা চালানো হচ্ছে। তবে যতক্ষণ না তা কার্যকর হচ্ছে ততক্ষন উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে ছাত্রদের।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status