প্রথম পাতা

পিয়াজ সিন্ডিকেটের ১৯ প্রতিষ্ঠান নজরদারিতে

এক সপ্তাহে কয়েকশ’ কোটি টাকার বাড়তি মুনাফা

আল-আমিন

২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, রবিবার, ৯:৫২ পূর্বাহ্ন

আমদানি বন্ধ হওয়ায় দেশীয় বাজারে কয়েকদিনের ব্যবধানে হু হু করে বেড়ে গেছে পিয়াজের দাম। একশ্রেণির ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অধিক দামে পিয়াজ বিক্রি করার জন্য তাদের নিয়ন্ত্রিত মোকাম থেকে পরিকল্পিতভাবে বাজারে পিয়াজ সরবরাহ কমিয়ে দেয়। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সরকারি গুদামে পর্যাপ্ত পরিমাণে পিয়াজ আছে। আগামী ৩ মাসে কোনো

সংকট সৃষ্টি হবে না। এরমধ্যেও একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কারসাজির মাধ্যমে পিয়াজের বাজারে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। পিয়াজ সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত এমন প্রায় ১৯ টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পিয়াজ প্রতিবেশী দেশ থেকে রপ্তানি বন্ধ হওয়ার পর বাজার নিয়ন্ত্রণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে তারা মাঠে নামে। মাঠ পর্যায়ের প্রাথমিক জরিপে এইসব প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে আসে।
১৯ প্রতিষ্ঠানের ৪ জন মালিক আবার ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সদস্য। পিয়াজ বাজার কারসাজির সঙ্গে জড়িত এই প্রতিষ্ঠানের মালিক ও তাদের রক্ষিত গুদামে নজরদারি রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রয়োজন হলে এইসব  মোকামে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। জানা গেছে, গত ১৪ই সেপ্টেম্বর প্রতিবেশী দেশ থেকে পিয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই চক্রটি ৬ দিনে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে প্রায় ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের মোকামগুলোতে অধিক পরিমাণের পিয়াজ থাকলেও তারা বড় মুনাফা লাভের আশায় তাদের মোকামে থাকা পিয়াজাগুলো বাজারে ছাড়ছে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে র‌্যাব’র আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, ‘পিয়াজের বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে যদি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় র‌্যাব’র সহযোগিতা চায় তাহলে তাদের র‌্যাব সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’  
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, হঠাৎ পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পিয়াজের বাজারে ঝাঁজ বেড়ে যায়। দাম উঠা নামা শুরু করে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এই ১৯ এজেন্সি বাজারে ভোক্তার পকেট কেটে কারসাজি করে টাকা নিয়ে গেছে। গত বছর প্রতিবেশী দেশ থেকে পিয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বেকায়দায় পড়ে সরকার। ওই সময় বাজারে পিয়াজ ট্রিপল সেঞ্চুরি করে। পরে দেশীয় পিয়াজ বাজারে আসার পর দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসে। ওই সময় পিয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির জন্য একাধিক প্রতিষ্ঠান দায়ী হলেও পরে দাম কমে যাওয়ার কারণে রহস্যজনকভাবে সেইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
সূত্র জানায়, এবার হঠাৎ পিয়াজের দাম বাড়ার কারণে মাঠে নামে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আবারও এই পিয়াজকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে শক্তিশালী সেই পুরনো সিন্ডিকেট গত ৬ দিনে প্রায় ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
সূত্র জানায়, মাঠ পর্যায়ে যে ১৯ প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত তাদের সমস্ত তথ্য এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। রাজধানীর পিয়াজের বড় মোকাম শ্যামবাজারের ৬ টি প্রতিষ্ঠান পিয়াজের দাম বাড়ানোর কারসাজির সঙ্গে জড়িত। এই ৬ টি প্রতিষ্ঠানের নিম্নে ২৫ টি করে বিশাল আকারে গুদাম রয়েছে। ঢাকার যাত্রাবাড়ীর ৫ প্রতিষ্ঠান এবং কোতোয়ালির ৫ টি এবং ঢাকার একাধিক স্থানের ৩ টি এজেন্সি এই মজুত সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত।
সূত্র জানায়, পিয়াজের দাম উঠার পর পরই এই সিন্ডিকেটকে দমানোর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং টিম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে নামে। এইসব প্রতিষ্ঠানকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ঊর্র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিগন্যাল পেলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status