অনলাইন

রোহিঙ্গা শিবিরে আজ বিপন্ন শৈশব

নিজস্ব সংবাদদাতা

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, শনিবার, ৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

রোহিঙ্গাদের মধ্যে জন্মহার অনেক বেশি। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তায় বাংলাদেশ সরকার। জনসংখ্যার এই বিস্ফোরণ আটকাতে আশ্রয় শিবিরগুলোতে জন্ম নিয়ন্ত্রক কিট বিলি করছে প্রশাসন। এক মাসে ২০০ টি শিশুর জন্ম হবার মতো খবরও সামনে এসেছে । এরমধ্যে গোদের ওপর বিষ ফোঁড়ার মত যে খবর রাষ্ট্রসঙ্ঘকে ভাবাচ্ছে তা হলো বাল্য বিবাহের প্রবণতা। সেই সঙ্গে মানব পাচারের ঝুঁকি। করোনা সংক্রমণের কারণে এমনিতেই যুব পরিষেবা ধাক্কা খেয়েছে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে। গত এপ্রিল মাস থেকে শরণার্থী শিবিরগুলোতে মূলত করোনাভাইরাসকে আটকাতে স্বাস্থ্য ও জরুরি খাদ্য সরবরাহের দিকে মনোনিবেশ করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি সংক্রমণের দাপট কমাতে সহায়তা কর্মী এবং শরণার্থীদের গতিবিধিও সীমাবদ্ধ করা হয় । এর ফলে শিশুদের স্বার্থ ভীষণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। তাদের সুরক্ষা আজ সংকটের মুখে। রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানাচ্ছে, কোভিড -১৯ এর আগে সহায়তাকারীদের সঙ্গে রোহিঙ্গা শিশুদের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, তারা নিজেদের সুখ-দুঃখ, অভাব-অভিযোগ, আতঙ্কের কথা ভাগ করে নিতো। কিন্তু এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই সুযোগগুলো থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে নজর এড়িয়ে অবাধে চলছে বাল্য বিবাহ এবং শিশু পাচারের মতো ঘৃণ্য অপরাধ। রাষ্ট্রসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, মায়ানমার থেকে ২০১৭ সালে প্রায় ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে এসেছিলো যার মধ্যে অর্ধেকের বেশি ছিল শিশু।
চলতি মাসে ৩৫০ টিরও বেশি রোহিঙ্গা শিশুদের পাচারের ঘটনা সামনে এসেছে । মে মাসে, সহায়তা কর্মীরা আশঙ্কা করেছিলেন যে, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে করোনা ভাইরাসটি ভীষণ ক্ষতি করতে পারে। তবে সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ১৮৯ টি আক্রান্তের ঘটনা এবং সাতটি মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে যা ইঙ্গিত দেয় যে, পরিস্থিতি এতটাও খারাপ নয় যতটা আশঙ্কা করা হয়েছিল। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার বলেছিলেন, ‘কোভিড চলাকালীন কেউ সাধারণ কর্মক্ষমতা আশা করতে পারে না’। কিন্তু যেভাবে তা কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে তার জেরে মৃত্যুকে প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মাথায় রেখে ধারাবাহিকভাবে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে শরণার্থী শিবিরগুলোতে। তবে করোনার দিকে নজর দিতে গিয়ে বাড়ছে শিশু শ্রম, শিশুদের ওপর অত্যাচারের মতো ঘটনা। তাই সহায়তা কর্মীদের অবিলম্বে শিশুদের পাশে থাকার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। বাংলাদেশি এনজিও ব্র্যাক জানিয়েছে, তারা যখন রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে কাজ করছিলো, তখন কিভাবে শিশুরা গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হচ্ছে তা তাদেরও নজরে আসে। ব্র্যাকের মুখপাত্র হাসিনা আক্তার বলেছেন , আপাতত তারা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে শিশুদের মনের এই ভয়, আতঙ্ক দূর করার চেষ্টা করছেন। বিপন্ন শিশুদের পাশে দাঁড়ানো আজ খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status