বাংলারজমিন
অস্তিত্ব সংকটে তাঁতশিল্প
অনিশ্চয়তায় সাড়ে চার লাখ মানুষ
গোলাম মোস্তফা রুবেল, সিরাজগঞ্জ থেকে
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, বুধবার, ৮:০৯ পূর্বাহ্ন
কাদা মাটি আর মাকড়সার জালে আটকে আছে তাঁত কুঞ্জ সিরাজগঞ্জের অর্ধ লাখ তাঁত। করোনা ভাইরাসের লোকসান চলমান থাকতেই সিরাজগঞ্জ যমুনা নদীর পানি তিন দফায় ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার পানিতে তলিয়ে ছিল জেলার অন্তত আট শতাধিক তাঁত শিল্পের কারখানা। আর এতে বেকার হয়ে পড়েছে এই শিল্পের সাথে জরিত লক্ষাধিক শ্রমিক। করোনা আর বন্যায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে তাঁত মালিকরা। সরকারি সহায়তার জন্য অপেক্ষা করলেও এখনো মেলেনি কোন আশ্বাস। বন্যার পানি ওঠায় মাসাধিকাল বন্ধ থাকায় তাঁত সহ তাঁতের কাঁচামাল নষ্ট হয়ে গেছে অনেক আগেই। তাই নতুন করে আবার শুরু করার পুঁজির অভাবে অনেক কারখানাই এখন বন্ধ। আকস্মিকভাবে বন্যার পানিতে সিরাজগঞ্জের সদর, বেলকুচি, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুর উপজেলার তাঁতপল্লীগুলোতে পানি প্রবেশ করায় তলিয়ে ছিলো ছোট বড় প্রায় আট শতাধিক তাঁত শিল্পের কারখানার প্রায় অর্ধ লাখ তাঁত। যমুনা নদীতে পানি কমায় তাঁত কারখান থেকে পানি সরে গেছে ঠিকই। কিন্তু তাঁত ঘরের বেহাল দশায় দিশেহারা তাঁত মালিকেরা। করোনার কারণে তাঁতের তৈরি কাপড়ের বাজারে চরম ধস নেমেছে। তাঁত শিল্পে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে উঠতে সময় লাগবে অন্তত দু’বছর। তাই স্বল্প সুদে ঋণের দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।
করোনা ও বন্যার প্রভাবে গত ৫ মাসে এলাকার প্রায় ৫০ হাজার তাঁতই বন্ধ রয়েছে। এতে ১ লাখেরও বেশি তাঁতি ও শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। বেলকুচি, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের তাঁতপল্লীতে তৈরি উন্নতমানের বাহারি ডিজাইনের শাড়ি, লুঙ্গি, ধুতি, থ্রি-পিস এবং গামছা দেশে তাঁতবস্ত্রের চাহিদার বেশির ভাগ পূরণ করে। ভারতসহ বহির্বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশেও কয়েক হাজার কোটি টাকার তাঁতবস্ত্র রপ্তানি হয়। সামপ্রতি করোনার কারণে বেলকুচি, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুর কাপড়ের হাটে ক্রেতার আগমন নেই বললেই চলে। উৎপাদিত তাঁতবস্ত্রের মজুত অবিক্রীত অবস্থায় রয়েছে। নতুন করে কাঁচামাল ক্রয়, বন্ধ হয়ে যাওয়া তাঁত ও কারখানা মেরামত, তাঁতি ও শ্রমিক পরিবারে জীবিকা নির্বাহ, ঋণের কিস্তি ও সুদের ঘানি টানতে গিয়ে অথৈ ঋণের জালে তাঁতিরা আটকা পড়ছেন। শাহজাদপুর পৌর এলাকার তাঁতপল্লি রূপপুর নতুন পাড়ার রহমত আলী (৭০) বলেন, দুটি তাঁত বন্ধ থাকায় চার সদস্যের পরিবারের জীবন থমকে দাঁড়িয়েছে। পাঁচ মাসে তার ১ লাখ টাকা লোকসান হওয়ায় ঋণগ্রস্ত অবস্থায় অবর্ণনীয় কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। একইভাবে গত ৫ মাসে এ মহলস্নার মৃত আমান মুন্সীর ছেলে শফিকুল ইসলামের ১৬টি তাঁত বন্ধ থাকায় ১০ লাখ, রুহুল আমিনের ১২টি তাঁত বন্ধ থাকায় ৫ লাখ, আলম কাজীর ১০টি হ্যান্ডলুম ও ৮টি পাওয়ারলুম বন্ধ থাকায় ৬ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। শাহজাদপুর হ্যান্ডলুম ও পাওয়ারলুম অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক তাঁতি নেতা নজরুল ইসলাম জানান, এ দুরবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই শিল্পটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সিরাজগঞ্জ জেলা তাঁত মালিক সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী বলেন, বিলুপ্তির হাত থেকে তাঁতশিল্পকে রক্ষায় সরকারিভাবে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান জরুরি হয়ে পড়েছে। বেলকুচি তাঁত বোর্ডের লিয়াজোঁ অফিসার তন্নি জানান, করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতের তালিকা চলমান রয়েছে। তাঁত বোর্ডকে জানানো হয়েছে তারা অনুদান দিলেই তা ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতীদের মাঝে বিতরণ করা হবে। আর তাঁতীদের লোনের জন্য তালিকা করা হচ্ছে যা স্বল্প সময়ের মধ্যেই বিতরণ করা হবে। জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মেদ জানান, তাঁত শিল্পকে বাচিয়ে রাখার জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে তাঁত বোর্ড ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।
করোনা ও বন্যার প্রভাবে গত ৫ মাসে এলাকার প্রায় ৫০ হাজার তাঁতই বন্ধ রয়েছে। এতে ১ লাখেরও বেশি তাঁতি ও শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। বেলকুচি, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের তাঁতপল্লীতে তৈরি উন্নতমানের বাহারি ডিজাইনের শাড়ি, লুঙ্গি, ধুতি, থ্রি-পিস এবং গামছা দেশে তাঁতবস্ত্রের চাহিদার বেশির ভাগ পূরণ করে। ভারতসহ বহির্বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশেও কয়েক হাজার কোটি টাকার তাঁতবস্ত্র রপ্তানি হয়। সামপ্রতি করোনার কারণে বেলকুচি, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুর কাপড়ের হাটে ক্রেতার আগমন নেই বললেই চলে। উৎপাদিত তাঁতবস্ত্রের মজুত অবিক্রীত অবস্থায় রয়েছে। নতুন করে কাঁচামাল ক্রয়, বন্ধ হয়ে যাওয়া তাঁত ও কারখানা মেরামত, তাঁতি ও শ্রমিক পরিবারে জীবিকা নির্বাহ, ঋণের কিস্তি ও সুদের ঘানি টানতে গিয়ে অথৈ ঋণের জালে তাঁতিরা আটকা পড়ছেন। শাহজাদপুর পৌর এলাকার তাঁতপল্লি রূপপুর নতুন পাড়ার রহমত আলী (৭০) বলেন, দুটি তাঁত বন্ধ থাকায় চার সদস্যের পরিবারের জীবন থমকে দাঁড়িয়েছে। পাঁচ মাসে তার ১ লাখ টাকা লোকসান হওয়ায় ঋণগ্রস্ত অবস্থায় অবর্ণনীয় কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। একইভাবে গত ৫ মাসে এ মহলস্নার মৃত আমান মুন্সীর ছেলে শফিকুল ইসলামের ১৬টি তাঁত বন্ধ থাকায় ১০ লাখ, রুহুল আমিনের ১২টি তাঁত বন্ধ থাকায় ৫ লাখ, আলম কাজীর ১০টি হ্যান্ডলুম ও ৮টি পাওয়ারলুম বন্ধ থাকায় ৬ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। শাহজাদপুর হ্যান্ডলুম ও পাওয়ারলুম অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক তাঁতি নেতা নজরুল ইসলাম জানান, এ দুরবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই শিল্পটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সিরাজগঞ্জ জেলা তাঁত মালিক সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী বলেন, বিলুপ্তির হাত থেকে তাঁতশিল্পকে রক্ষায় সরকারিভাবে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান জরুরি হয়ে পড়েছে। বেলকুচি তাঁত বোর্ডের লিয়াজোঁ অফিসার তন্নি জানান, করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতের তালিকা চলমান রয়েছে। তাঁত বোর্ডকে জানানো হয়েছে তারা অনুদান দিলেই তা ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতীদের মাঝে বিতরণ করা হবে। আর তাঁতীদের লোনের জন্য তালিকা করা হচ্ছে যা স্বল্প সময়ের মধ্যেই বিতরণ করা হবে। জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মেদ জানান, তাঁত শিল্পকে বাচিয়ে রাখার জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে তাঁত বোর্ড ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।