অনলাইন
খিচুড়িতে এতো এলার্জি কেন?
শামীমুল হক
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার, ১২:৩৫ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি
খিচুড়িতে কি এলার্জি আছে? না। তাহলে খিচুড়ি নিয়ে এতো এলার্জি কেন? কজন শখ করেছেন ভারতে যাবেন। উদ্দেশ্য সিস্টেম শেখা। কীভাবে বাচ্চাদের খাবার বিতরণ ও প্রসেসিং করা হয়। কেউ যাতে বিশাল প্রকল্পটি মিস ইউজ না করতে পারেন। ডিমসহ বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার বিতরণ করা হবে। সত্যিইতো খিচুড়ি পুষ্টিকর খাবার। তা বিতরণে সিস্টেম শিখতে হবে না? দেশে কি কোন সিস্টেম আছ? এসব তো বিদেশ থেকেই শিখতে হবে। তাইনা? এজন্য মাত্র ৫ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। আর ডিম-খিচুড়ি, সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না শিখতে দেশে প্রশিক্ষণের জন্য আরও ১০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। মাত্র ১৫ কোটি টাকাই তো। এর জন্য এত হইচই। না, এটা মেনে নেয়া যায়না। যেখানে দেশে হাজার হাজার কোটি টাকা সাবাড় হচ্ছে, সেখানে ১৫ কোটি টাকা তো নস্যি। তাও এ টাকা সাবাড় হবে শিশুদের নামে। এতে এত জ্বালাপোড়া কেন?
খবর বেরিয়েছে এক হাজার সরকারি কর্মকর্তাকে খিচুড়ি রান্না শিখতে বা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং কার্যক্রমের আওতায় এসব কর্মকর্তারা সফর করবেন। যদিও সচিব বলেছেন, মাত্র ৫/৬ জন যাবেন। হিসাব করে বলা হয়েছে বর্তমানে ৩৩ লাখের মতো শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছে। বিভিন্ন কারণে তারা স্কুলে যাচ্ছে না। এদের বিদ্যালয়মুখী করার জন্য প্রাইমারি স্কুল ফিডিং কর্মসূচির পরিকল্পনা প্রস্তাব করা হয়েছে। খাবার বিতরণের ফলে শিশুরা স্কুলে যাবে এবং তাদের পুষ্টিগত সমস্যা নিরসন হবে। এমন ভলো উদ্যোগ নিয়ে কথাই আসবে কেন? ডিপিইর ১৯ হাজার ২৮২ কোটি ৭২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ের এই কর্মসূচির মাধ্যমে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থীকে খাদ্য সরবরাহ করা হবে। সোমবার প্রকল্পটি নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা করেছে। এরপরই বেরিয়ে আসে খিচুড়ি কাহিনী। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ। পরিকল্পনা কমিশন অবশ্য না করেনি। ৫ কোটি টাকার বিদেশ ভ্রমণ কমাতে বলা হয়েছে। জানিয়েছে প্রাইমারি স্কুল ফিডিং কর্মসূচি ভারতে চালু রয়েছে। এজন্য ৫ থেকে ৬ জনের একটা টিম ভারতের রাজধানী দিল্লিতে যাবে এবং স্কুল ফিডিং কার্যক্রম শিখবে। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রকল্পটির অনেক খাতে ব্যয় কমানো হয়েছে। আবার অনেক খাতে ব্যয় বাড়ানে হয়েছে। ভারতে একই ধরনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সেখানে কীভাবে খাবার রান্না ও প্রসেসিং করে এটা শিখতে একটি টিম ভারতের রাজধানীতে যাবেন। সিস্টেম শিখতে যাবেন। তিনি আরও বলেন, কেউ যাতে বিশাল প্রকল্পটি মিস ইউজ না করতে পারেন এজন্য শিখতে যাওয়া। তার মানে এ প্রকল্পে মিস ইউজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে এমন সম্ভাবনা থাকে সেখানে এ প্রকল্পের দরকার কি? এমন প্রশ্ন তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় বইছে। কেন এই ঝড়। যেখানে শিক্ষার বাইরে থাকা শিশুদের শিক্ষার আওতায় আনতে এ প্রকল্প সেখানে তো সবার এগিয়ে আসা উচিত। কে প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশ যাবে? কত টাকা খরচ হবে সেসব দেখার দরকার কি? খিচুড়ি নিয়ে এত এলার্জি কেন?