অনলাইন

৫ শতাধিক বছরের প্রাচীন শংকরপাশা মসজিদ

শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন

সিলেট বিভাগে ঐতিহাসিক তথ্য-উপাত্ত ও প্রাচীন স্থাপত্য সমৃদ্ধ হবিগঞ্জ জেলা। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রামে অবস্থিত উচাইল শংকরপাশা শাহী জামে মসজিদ। হবিগঞ্জ জেলায় অবস্থিত পঞ্চদশ শতাব্দীতে নির্মিত প্রাচীন স্থাপত্যের একটি প্রাচীন মসজিদ। এই মসজিদ গাত্রে উৎকীর্ণ শিলালিপির তথ্যে জানা যায়, সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মজলিশ আমিন ১৫১৩ সালে এটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেন। এ মসজিদের পাশেই তার সমাধি রয়েছে। কালের বিবর্তনে এক সময় মসজিদ সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা ঘণঅরণ্য ভূমিতে পরিণত হয়। পরবর্তীকালে জঙ্গলবেষ্টিত এ এলাকায় জনবসতি গড়ে উঠার প্রাক্কালে আবারও জনসন্মুখে আসে এ মসজিদটি।
তথ্যে জানা যায়, এ মসজিদ ভবনটি একটি একচালা ভবন, যার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ একই পরিমাপের। যার দৈর্ঘ্য সাড়ে ২১ ফুট আবার প্রস্থও ২১ ফুট ৬ ইঞ্চি। এর সম্মুখের বারান্দাটির প্রস্থ তিন ফুটের একটু বেশি এবং এতে চারটি গম্বুজ রয়েছে। এই মূল ভবনের মধ্যভাগে একটি বিশাল গম্বুজ এবং বারান্দার উপর রয়েছে তিনটি ছোট গম্বুজ। মসজিদটিতে মোট ১৫টি দরজা ও জানালা রয়েছে যা পরস্পর একই আকৃতির। উত্তর পূর্ব ও দক্ষিণ, এই তিন দিকের দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় পাঁচ ফুট এবং পশ্চিমের দেয়ালটি প্রায় দশ ফুট। এতে মোট ছয়টি কারুকার্য শোভিত স্তম্ভ রয়েছে। প্রধান কক্ষের চারকোণে ও বারান্দার দুই কোণে অবস্থিত। উপরের ছাদ আর প্রধান প্রাচীরের কার্নিশ ধনুক আকৃতির বাঁকানোভাবে নির্মিত। মসজিদের দক্ষিণ পার্শ্বে একটি বড় দীঘি রয়েছে। মধ্যযুগীয় স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম নিদর্শন হবিগঞ্জের উচাইল শংকরপাশা শাহী মসজিদ। মসজিদটি সুলতানি আমলের স্থাপত্য নিদর্শনের চিহ্ন বহন করে। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার অন্তর্গত উচাইল নামক গ্রামে ছেট্ট একটি টিলার উপর প্রায় ৬ একর ভূমির ওপর কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে মসজিদটি।
জানা যায়, অত্যন্ত চমৎকার ও মনোমুগ্ধকর কারুকাজ সমৃদ্ধ মসজিদটির দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলী দেখার মতো। পোড়া মাটির তৈরি নান্দনিক কারুকার্য ও অসাধারণ নির্মাণশৈলী আধুনিকতাকে হার মানায়। এ সমস্থ পোড়া মাটির নক্সা কাটা ফলক ইমারতের দেয়ালে সাঁটানো হয়েছে। দেয়ালের বহিরাংশে পোড়া মাটির বিভিন্ন নকশা এবং অলঙ্করণ সহজেই দর্শনার্থীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পোড়া মাটির নক্সা আঁকা মসজিদটি দৃশ্যত লাল বা রক্তিম বর্ণের হওয়ায় লোকজন এটিকে ‘লাল মসজিদ’ বলে থাকেন। আবার এটির অবস্থান একটি টিলাশৃঙ্গে। এ দুই বৈশিষ্ট্যের সংমিশ্রণে মসজিদটিকে ‘লালটিলা মসজিদ’ও বলা হয়। এ মসজিদটি পুনঃআবির্ভূত হওয়ায় অনেকেই এটিকে গায়েবি মসজিদও বলে থাকেন। স্থানীয় লোকজন জানান, প্রাচীন এ মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণের সব দায়িত্ব সরকারের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের হাতে রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোন প্রকার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি ।
 
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status